এম মেহেদী সানি, হাবড়া, আপনজন: বিজেপি শাসিত উড়িষ্যা, হরিয়ানা সহ একাধিক রাজ্যে যখন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা অপমান অপদস্ত হেনস্তার শিকার হচ্ছেন তখন ভিন্ন চিত্র দেখা গেল পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবড়া শহরে। রাজস্থানের পরিযায়ী শ্রমিকরা হাবড়া শহরের অলিতে গলিতে এবং যশোর রোডের পাশে নির্বিঘ্নে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছেন ছোটদের খেলনা সামগ্রী। হাবড়ার চোংদা মোড়, হাটথুবা মোড়, নগরউখরা মোড় সহ একাধিক স্থানে রাজস্থানী পুরুষ মহিলা হকারদের চোখে পড়ে, ক্রেতার সংখ্যাও একেবারে কম নয়। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশ মধ্যপ্রদেশ সহ একাধিক রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকরা বাংলার বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি উত্তর চব্বিশ পরগনায়ও ফুটপাতের পাশে দোকান করে কখনো কম্বল, কখনো ছোটদের দোলনা, কখনো রাস্তার পাশে কাঁচা বাদাম ভেজে বিক্রি করতে দেখা গিয়েছে। এবার রাজস্থানীরা ছোটদের খেলনা সামগ্রী নিয়ে হাজির হয়েছেন বাংলার বিভিন্ন এলাকায়। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁরা দলবদ্ধ ভাবে বছরের দীর্ঘ সময় পশ্চিমবাংলায় থাকেন, মরসুম অনুযায়ী ব্যবসার ধারণা পাল্টে ফেলেন, এখন তারা বাচ্চাদের খেলনা বিক্রি করছেন, এক একটা দিন এক একটি এলাকায় ফুটপাতের পাশে বসে অথবা হকারি করে ওই খেলনা বিক্রি করেন, দৈনিক মুনাফার পরিমানও যথেষ্ট। বসবাসের জন্য তাদের কোনো নির্দিষ্ট ঠিকানা নেই। যখন যে এলাকাতে যান, তখন সেই এলাকাতেই তাঁবু গড়েন। এভাবেই তারা জীবিকা নির্বাহ করছে। বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা ভিন রাজ্যে হেনস্থার শিকার হলেও ভিন রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকরা বাংলায় নির্বিঘ্নে জীবিকা নির্বাহ করছেন সে কথা স্মরণ করিয়ে পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের চেয়ারম্যান ও রাজ্যসভা সাংসদ অধ্যাপক সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলা থেকে যে পরিমাণ পরিযায়ী শ্রমিকরা বাইরের রাজ্যে কাজে যান তার চার-পাঁচ গুণ ভিন রাজ্যের শ্রমিকরা বাংলায় কাজ করেন। তারা ভালোভাবেই বাংলাতে আছেন, বাংলার মানুষ শান্তিপ্রিয়, তাদেরকে আপন করে নিয়েছেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি আমাদের রাজ্যের মানুষের ব্যবহার দেখে বাইরের রাজ্যের মানুষদের শেখা উচিত’ বলে মন্তব্য করেন সামিরুল। হাবরা পৌরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূল নেতা নারায়ণ সাহ বলেন, ‘বাংলায় সকলে সুরক্ষিত, আমরা সকলের প্রতি মানবিক, অন্যের সমস্যা সৃষ্টি না করে যদি কেউ জীবিকা নির্বাহ করেন তাহলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct