মোল্লা মুয়াজ ইসলাম, দুর্গাপুর, আপনজন: যে স্কুলের ৭০ শতাংশ সংখ্যালঘু ও দলিত শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রী। সেই স্কুলে মিড ডে মিলে নিজেদেরই বাগানে লাগানো কুমড়ো,ঢেঁড়স সহ বিভিন্ন সবজি দিয়ে মিড ডে মিলে পঞ্চম শ্রেণী থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের স্টুডেন্টরা মিড ডে মিলের খাদ্য গ্রহণ করে । জেমুয়া ভাদুবালা বিদ্যাপীঠ, দুর্গাপুর শিল্পনগরীর সন্নিকটে অবস্থিত একটি গ্রামীণ উচ্চ বিদ্যালয়, যেখানে গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। ২০১৯ সালে প্রাক্তন বায়ুসেনার ইঞ্জিনিয়ার জইনুল হক প্রধানশিক্ষক হিসেবে যোগদান করার পর থেকে বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো এবং শিক্ষার মানের উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।
তিনি শহরের কোন স্কুলে না গিয়ে স্বেচ্ছায় এই গ্রামীণ স্কুলটিকে বেছে নেন, কারণ তিনি দরিদ্র পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন।
যোগদানের পর থেকেই, তিনি বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নের জন্য নিজেকে সম্পূর্ণভাবে উৎসর্গ করেন। তাঁর নেতৃত্বে বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা, উন্নত অডিটোরিয়াম, নবনির্মিত ও সংস্কারকৃত শ্রেণিকক্ষ, এবং আধুনিক টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়। বিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এবং স্থানীয় ব্যক্তিরা, যেমন নুরুল হক, এই উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
এছাড়াও, বিদ্যালয়ে সবজি বাগান, বিরল প্রজাতির ফলের বাগান, মিড ডে মিলের কিচেন রুম ও ডাইনিং রুম, বায়ো টয়লেট, এবং সুদৃশ্য তোরণসহ ভাদুবালা দেবীর প্রস্তর মূর্তি ও ফুলের বাগান নির্মিত হয়েছে। বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ এবং বাউন্ডারির ভেতরে প্রচুর গাছ লাগানো হয়েছে, যা বিদ্যালয়ের পরিবেশকে আরও সুন্দর করেছে।
শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল প্রতিভার উন্নয়নেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ছাত্রীরা শ্রেণিকক্ষে ও দেওয়ালে শিক্ষা সহায়ক বাণী ও ছবি এঁকেছে, যা খুবই মনোগ্রাহী। পড়াশোনা, খেলাধূলা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও বিদ্যালয়টি উল্লেখযোগ্য উন্নতি লাভ করেছে।
জইনুল হকের কঠোর পরিশ্রম ও উদ্ভাবনী নেতৃত্বের ফলে মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে এই স্কুলটি একটি অনন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। তাঁর এই অসাধারণ উদ্যোগ এবং সফলতাকে সত্যিই সাধুবাদ এবং অনুসরণযোগ্য হিসেবে গণ্য করা হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct