সঞ্জীব মল্লিক , বাঁকুড়া আপনজন: প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আট বছর আগে তৈরি করা হয়েছিল কৃষি কাজের জন্য সাবমার্সিবল পাম্প। অভিযোগ কোনদিনও একবিন্দুও জল গড়াইনি পাম্প দিয়ে। বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জানিয়েও হয়নি কোন সুরাহা, একরাশ হতাশা কৃষকদের।
বাঁকুড়া জেলা বিষ্ণুপুর ব্লকের রাধানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপশোল মৌজা, এখানে প্রায় দেড়শ বিঘে কৃষি জমি রয়েছে জলের অভাবে চাষাবাদ একেবারেই করা সম্ভব হয় না কৃষকদের। বর্ষায় শুধুমাত্র ধান চাষ টা করতে পারে কৃষকরা। তবুও যে বছর বর্ষা ঠিকঠাক হয় না সেই বছরটা শুকনোই পড়ে থাকে এই জমিগুলি। একাধিকবার ধান বীজ রোপন করলেও জলের অভাবে তা শুকিয়ে মরেছে। সরকারের কাছে কৃষকদের বহুদিনের দাবি ছিল এই এলাকায় সরকার যাতে একটা সাম্বারস্যাবেল পাম্প তৈরি করে কৃষি কাজের জন্য। কৃষকদের দাবি কৃষকদের ডাকে সাড়া দিয়ে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার ২০০৮ সালে আনুমানিক ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি পাম্প তৈরির জন্য টেন্ডার পাশ করান। অভিযোগ বরাত পাওয়া ঠিকা সংস্থা গাছ ছাড়া মনোভাবের মধ্য দিয়ে আট বছর পর ২০১৬ সালে পাম্পের কাজ কমপ্লিট করে। কৃষকদের অভিযোগ পাম্প দিয়ে জল না বেরোনোর সত্ত্বেও সেই সময় কৃষকদের অজান্তেই স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে পাম্পের হ্যান্ডওভার করে দেয় বরাত পাওয়া সংস্থা। প্রথম প্রথম কৃষকদের বলা হতো পাম্পের কাজ এখনো কমপ্লিট হয়নি, দু’বছর পেলি যাওয়ার পরেও বেবাক বুঝে কৃষকরা বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করতে থাকে বিষয়টি নিয়ে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে জানানো হয় পাম্প হ্যান্ডওভার হয়ে গেছে তাদের আর কিছু করার নেই। এরপর কৃষকরা একজোট হয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েতে, বিডিও অফিসে, এসডিও অফিসে, সেচ দপ্তরে, এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর টোল ফ্রি নাম্বারেও অভিযোগ জানাতে থাকে বছরের পর বছর। সমস্ত দপ্তরে অভিযোগ জানানোর পরেও পাম্পের সমস্যার সমাধান হয়নি। একরাশ হতাশা নিয়ে স্থানীয় কৃষকরা আজও জলবিহীন এই পাম্প হাউস আগলে বসে রয়েছে। বেড়েছে চোরের উপদ্রব পাম্প ঘর থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে গেছে চোরের। নিজেদের গাটের কড়ি খুইয়ে পাম্প ঘরের মেরামত করে কৃষকরা। কিন্তু এত কিছুর পরও আজও জল বিহীন সাম্বারস্যাবেল। আজও শুকনো হয়ে পড়ে রয়েছে প্রায় দেড়শ বিঘে জমি।কৃষকদের দাবি তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার লক্ষ লক্ষ টাকা দিলেও তা কোন কাজেই লাগলো না। ঘটনা ক্রমে তৎকালীন তৃণমূল পরিচালিত প্রধান শ্রীমতি বাসন্তী ঠাকুর মাঝে প্রধান পদ থেকে সরে গেলেও ২০২৩ এর পঞ্চায়েতে পুনরায় তিনি রাধানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচিত হন। এ বিষয়ে তিনি সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জানান সেই সময় সাবমার্সিবলে জল বের হয়। পরে নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর আর তা লাগানো হয়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
বিষ্ণুপুরের মহকুমা শাসক প্রসেনজিৎ ঘোষের দাবি কৃষকদের কাছ থেকে অভিযোগ এসেছে সত্যিই এলাকায় সমস্যা রয়েছে জলের স্থানীয় ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার কে বলা হয়েছে বিষয়টি তদন্ত করে সমস্যার সমাধান করার জন্য এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কেউ জানানো হয়েছে কিছুদিনের মধ্যেই এই সমস্যার সমাধান হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct