সারিউল ইসলাম, মুর্শিদাবাদ, আপনজন: লালগোলা থানায় রাত্রি সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত অবস্থান বিক্ষোভ তৃণমূলের। রবিবার বিকেলে লালগোলা থানার সীতেশনগর ঘাট এলাকায় নিজের দাদার হাতে খুন হয় হাজিকুল ইসলাম (৪১)। তৃণমূলের দাবি, গত লোকসভা নির্বাচনের আগে সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিল হাজিকুল। অন্যদিকে অভিযুক্ত খায়ের শেখ এলাকায় কংগ্রেস কর্মী হিসেবে পরিচিত। যদিও এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোন সম্পর্ক নেই, পারিবারিক জমি বিবাদের কারণে এই ঘটনা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অভিযোগ, জমি বিবাদের জেরে জুন মাসের ১৯ তারিখ দাদা খায়ের সহ তার দলবল হাজিকুলের উপর চড়াও হয়। শরীর ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় ১০ দিন মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা করে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরে হাজিকুল। জুলাই মাসের ২৪ তারিখ আবারো তাকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। দুষ্কৃতিদের হাত থেকে জামাইকে উদ্ধার করতে গেলে হাজিকুলের শ্বশুর গুল্লু রহমানকে মেরে পঙ্গু করে দেয় খায়ের সহ তার দলবল। প্রাণে বাঁচতে মাস দেড়েক আগে হাজিকুল পাশের গ্রাম ইশাপুরে চলে যায়। কিন্তু পুলিশকে দু’বার লিখিত অভিযোগ জানানো হলেও কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে মৃতের পরিবারের অভিযোগ।
লালগোলা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মোতাহার হোসেন রিপন বলেন, ‘পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার কারণে খুন হতে হল আমাদের দলের কর্মীকে। খুন হওয়ার আগে দু’বার আক্রান্ত হয় হাজিকুল, অথচ পুলিশ নিরব ছিল। পুলিশকে একাধিকবার জানিয়েছিলাম, তারা আগে পদক্ষেপ নিলে আমাদের কর্মীকে খুন হতে হত না।’
এই ঘটনার প্রতিবাদে লালগোলা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য মোতাহার হোসেন রিপনের নেতৃত্বে রবিবার রাতে লালগোলা থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল কর্মীরা। রাত্রি সাড়ে বারোটা পর্যন্ত থানা ঘেরাও করে থাকে তারা। একপর্যায়ে তৃণমূল কর্মীরা থানার সামনে শুয়ে পড়ে। লালবাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসপ্রীৎ সিং লালগোলা থানায় পৌঁছে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিলে বিক্ষোভ বন্ধ করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালে হাজিকুলের বাবা সেরাজুল শেখ ওরফে নবীকে একই স্থানে অর্থাৎ সীতেশনগর ঘাট এলাকায় কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হয়। নবী সিপিএমের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিল এলাকায়।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct