নিজস্ব প্রতিবেদক, অরঙ্গাবাদ, আপনজন: কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারি-পড়ুয়া ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার রেশ কাটার আগেই শুক্রবার বিকেলে মুর্শিদাবাদের সুতি থানার গোপালগঞ্জ-বাজিতপুর এলাকায় একটি প্রাথমিক স্কুলের কয়েকজন ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনার অভিযোগকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল। ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে রহিম শেখ নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ তাকে বাঁচানোর জন্য স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, বদরুল ইসলাম, নিগৃহীতা ছাত্রীদের পরিবারের কয়েকজনকে ‘মীমাংসা’ করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
শুক্রবার গোটা ঘটনার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামবাসীরা দলে দলে স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিক্ষোভের ঘটনার খবর পেয়ে সুতি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী গ্রামে পৌঁছে স্কুলে আটকে পড়া প্রায় ৬ জন শিক্ষককে উদ্ধার করে সুতি থানাতে নিয়ে যায়। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন- নির্যাতিতা নাবালিকা ছাত্রীদের পরিবারের সদস্যরা থানাতে এ সেছেন। তবে সন্ধে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ইতিমধ্যেই নির্যাতিতা দুই ছাত্রীর মেডিক্যাল টেস্টের জন্য তাদের মহেশাইল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নির্যাতিতা এক ছাত্রীর মা অভিযোগ করেন,” গত প্রায় এক বছর ধরে রহিম শেখ নামে এক শিক্ষক বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রীকে নিয়মিতভাবে ‘অশালীনভাবে স্পর্শ’ করত। ওই শিক্ষক আমার দুই মেয়েকে হুমকি দিয়েছিল এই ঘটনার কথা পরিবারের কাউকে জানালে তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। শিক্ষকের ভয়ে এতদিন আমার মেয়েরা চুপ করে ‘অত্যাচার’ সহ্য করেছে।
ওই মহিলা জানান,”গত বুধবার আমার দুই মেয়ে বাড়িতে ফিরে ওই শিক্ষকের ‘অশালীনভাবে স্পর্শ’ করার কথা বলে।” এরপরই নাবালিকা কয়েকজন ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বদরুল ইসলামকে গোটা ঘটনাটি জানান। নিগৃহীতা ছাত্রীদের পরিবারের অভিযোগ মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্যা নাসিমা খাতুনের স্বামী বদরুল ইসলাম তাদেরকে ঘটনাটি কাউকে জানাতে বারণ করেন। তিনি গোটা বিষয়টির মীমাংসা করে দেবেন বলে জানিয়েছিলেন।
অভিযোগ এর পরেও কোনও মীমাংসা না হওয়াতে শুক্রবার দুপুরে কয়েক’শ অভিভাবক স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদেরকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct