আপনজন ডেস্ক: যুক্তরাজ্যে তিন শিশুকে হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সহিংসতার পর অন্তত এক হাজারে বেশি গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল। বিশেষ করে অভিবাসনপ্রত্যাশী ও মুসলিমদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন স্থাপনায়। জানা গেছে, ওই হামলায় শিশু হত্যার জন্য মুসলিম এক অভিবাসী দায়ী বলে গুজব ছড়ানো হয়। এরপরই শুরু হয় সহিংসতা। চলে বেশ কিছু দিন। সম্প্রতি ইংল্যান্ডের পাশাপাশি সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে উত্তর আয়ারল্যান্ডেও। কর্তৃপক্ষ এ দাঙ্গায় জড়িতদের চিহ্নিত করার পদক্ষেপ জোরদার করার পর গত সপ্তাহ থেকে সহিংসতা কমতে শুরু করে। অনেককে আটক করে দ্রুত কারাগারে পাঠানো হয়, তাদের মধ্যে অনেককে দীর্ঘ মেয়াদি কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল পুলিশ চিফস কাউন্সিল মঙ্গলবার জানিয়েছে, কয়েকদিন ধরে চলা দাঙ্গায় সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনার পাশাপাশি মুসলিম ও অভিবাসীদের লক্ষ্য করে বর্ণবাদী হামলার ঘটনা ঘটেছে, এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত হাজারেও বেশি দাঙ্গাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যে তারা জানায়, পুরো যুক্তরাজ্যজুড়ে ১০২৪ জনকে গ্রেফতার করে এদের মধ্যে ৫৭৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে ৬৯ বছর বয়সী বৃদ্ধ থেকে শুরু করে ১১ বছরের বালক পর্যন্ত আছে। ভাঙচুরের অভিযোগে ওই বৃদ্ধকে লিভারপুল থেকে এবং শিশুটিকে বেলফাস্ট থেকে আটক করা হয়। ৩১ জুলাই বেইসিংস্টোকে শরণার্থীদের জন্য বরাদ্দ করা একটি হোটেলের প্রবেশপথে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ঘুষি মারতে ও লাথি দিতে দেখা যায়, পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই কিশোরী বেইসিংস্টোক জজ আদালতে সহিংস বিশৃঙ্খলার জন্য নিজের দোষ স্বীকার করেছেন বলে সরকারি আইনজীবীরা জানিয়েছেন। এর আগে শেষবার ২০১১ যুক্তরাজ্যজুড়ে ব্যাপক দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছিল। সেসময় পুলিশের গুলিতে এক কৃষ্ণাঙ্গ নিহত হওয়ার পর বেশ কয়েকদিন ধরে ব্রিটেনের রাস্তাগুলোতে ব্যাপক দাঙ্গাহাঙ্গামা হয়। দ্রুত ও কঠোর বিচারিক পদক্ষেপের মাধ্যমে ওই দাঙ্গা দমন করা সম্ভব হয়েছিল। তখন কয়েক সপ্তাহের মধ্যে চার হাজারের মতো মানুষকে গ্রেফতার করা হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct