আপনজন: মাধ্যমিক স্কুল। পড়ুয়া আছে কিন্তু স্থায়ী শিক্ষক নেই! তিনজন অবসরপ্রাপ্ত অতিথি শিক্ষক দিয়ে চলছে স্কুল। গ্রুপ ডি কর্মী নিচ্ছে ক্লাস। সাফাই কর্মী চালান কম্পিউটার। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের গভর্মেন্ট মডেল স্কুলটি ৮ বছর ধরে শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে। শিক্ষক নিয়োগের কোনো উদ্যোগ নেই সরকারের বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। সরকারের উদাসীনতার কারণে ছাত্র ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,হরিশ্চন্দ্রপুরের বিতোল গ্রামে সাড়ে তিন একর জমির উপরে ২০১৬ সালে স্কুলটি গড়ে উঠে। ২০১৭ সাল থেকে পাঁচজন অবসরপ্রাপ্ত অস্থায়ী অতিথি শিক্ষক দিয়ে পঠন পাঠন শুরু হয়। এরপর এক এক করে সব শিক্ষক অবসর হয়ে যায়। ২০২১ সালে একজন স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ হলেও তিনি ২০২৩ সাল থেকে বিএড ট্রেনিং এ রয়েছেন। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৬ টি ক্লাসে ২৮৫ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে ওই শিক্ষকদেরকে। একটি ক্লাস নিতে গেলে অন্য ক্লাস ফাঁকা থাকছে। ফলে একদিকে যেমন শিক্ষার্থীরা কাঙ্খিত মানের পড়ালেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে; অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন অভিভাবকরাও। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহম্মদ সামসুল আলম বলেন,স্কুলে খাতা কলমে ১৮৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে ১৫০ জন নিয়মিত আসে। একজন স্থায়ী শিক্ষক ও তিন জন অবসর প্রাপ্ত অতিথি শিক্ষক রয়েছে। স্থায়ী শিক্ষক বিবেকানন্দ মাহাত দেড় বছর ধরে বিএড ট্রেনিং এ রয়েছে। স্কুলে পরিকাঠামোয় অভাব নেই। অভাব রয়েছে শিক্ষকের। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৬ টি ক্লাস রয়েছে। ২৫ টি শ্রেণি কক্ষ,২ টি ল্যাব,খেলাধুলার মাঠ ও মিড ডে মিলের খাওয়ার জন্য ডাইনিং রুম রয়েছে। একজন অস্থায়ী ক্লার্ক,দুই জন অস্থায়ী গ্রুপ ডি কর্মী ও দুইজন সিকিউরিটি গার্ড রয়েছে। এছাড়া একজন অবৈতনিক সাফাই কর্মী ও একজন মহিলা কর্মী রয়েছে। গত দুই বছর থেকে মাধ্যমিক চালু হয়েছে। এবছর মাধ্যমিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৮। বাংলা,ইতিহাস ও জীবন বিজ্ঞান অস্থায়ী শিক্ষকরা ক্লাস নিয়ে থাকেন। সিলেবাস যাতে সময়ের মধ্যে শেষ করা যায় তার জন্য গ্ৰুপ ডি কর্মীরা ভূগোল ও অংক ক্লাস নিয়ে থাকেন। দশম শ্রেণির পড়ুয়া মহম্মদ আসলাম ও প্রীতি দাসরা বলেন,আমরা গরীব ঘরের ছেলে মেয়ে। পঞ্চম শ্রেণিতে এই স্কুলে ভর্তি হয়। এবছর দশম শ্রেণিতে পড়ছি। শিক্ষকের অভাবে এখনো পর্যন্ত সিলেবাস শেষ করতে পারিনি। গৃহশিক্ষক রেখে পড়াশোনা করানোর মতো আর্থিক ক্ষমতা নেই পরিবারের। তাই স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানাচ্ছি। অভিভাবক আফসার আলি বলেন,সরকার কোটি টাকা খরচ করে সুন্দর একটি স্কুল ভবন করে দিয়েছে ভালোভাবে পড়ালেখা শেখানোর জন্য। কিন্তু শিক্ষকের অভাবে আমাদের সন্তানরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারি স্কুলে এভাবে পঠনপাঠন চলায় সন্তানাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা
উদ্বিগে রয়েছি। চাঁচল মহকুমা শাসক সৌভিক মুখোপাধ্যায় বলেন,স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি ডিআইকে জানাব।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct