আপনজন ডেস্ক: ইয়েমেনের রাজধানী সানায় জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কার্যালয়ে ঢুকে নথিপত্র, আসবাবপত্র ও যানবাহন জব্দ করেছে হাউছি বিদ্রোহীরা। মঙ্গলবার জাতিসঙ্ঘের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
জাতিসংঘ, ত্রাণ সংস্থা ও বিদেশী দূতাবাসে কর্মরতদের বিরুদ্ধে হাউছিদের দমনপীড়নের সর্বশেষ পদক্ষেপ এটি। গাজা উপত্যকায় ইসরাইল-হামাস যুদ্ধকে কেন্দ্র করে লোহিত সাগরের করিডোরজুড়ে ইরান-সমর্থিত এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী জাহাজ চলাচলকে লক্ষ্যবস্তু করার মাঝেই এ অভিযান চালানো হলো।
জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার-বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক এক বিবৃতিতে বলেন, ইয়েমেনে (জাতিসঙ্ঘের) কর্মীদের নথি, আসবাবপত্র ও যানবাহনসহ সব জিনিসপত্র হস্তান্তর করতে বাধ্য করার পর বিদ্রোহীরা গত ৩ আগস্ট সানায় জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কার্যালয় প্রাঙ্গণ দখল করে।
হাউছিদের প্রাতিষ্ঠানিক নাম উল্লেখ করে তুর্ক বলেন, ‘আনসার আল্লাহ বাহিনীকে অবশ্যই (জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কার্যালয়) প্রাঙ্গণ ত্যাগ করে অবিলম্বে সব সম্পদ ও মালামাল ফেরত দিতে হবে।’
এ বিষয়ে জানতে হাউছিদের একজন মুখপাত্রের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। এমনকি মেসেজ দেয়া হলে তারও উত্তর দেননি তিনি।
জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার দফতর জানিয়েছে, গত জুন মাসের অভিযানের পর সানা ও হাউছি নিয়ন্ত্রিত অন্যান্য ইয়েমেনি এলাকায় জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার অফিসের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনের অংশে এখনও কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তারা। ২০১৪ সাল থেকে হাউছিরা সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের সমর্থনে ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের সাথে গৃহযুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। তারা দেশটির রাজধানী সানা ও উত্তরাঞ্চলের বেশিরভাগ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ নেয়। ইয়েমেনে যুদ্ধে সৈনিক ও বেসামরিক নাগরিকসহ দেড় লাখেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি করেছে। যুদ্ধের সময় বিদ্রোহীরা হাজার হাজার মানুষকে বন্দি করে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তারা দেশটির ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর দমন-পীড়ন জোরদার করেছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি ৪৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct