নিজস্ব প্রতিবেদক, কলকাতা, আপনজন: আরজিকর ধর্ষণ ও খুন কাণ্ডে নয়া তথ্য জানতে পেরেছে কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশ। সূত্রের খবর অনুযায়ী আরজি কর হাসপাতালের দুজন হাউস স্টাফ এবং একজন ইন্টার্ন ওই হাসপাতালের চেস্ট বিভাগে সেক্স ও ড্রাগ র ্যাকেটের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তাদের চিহ্নিত করে ফেলেছিলেন নিহত পড়ুয়া তরুণী চিকিৎসক। তাদের সঙ্গে এই র্যাকেট চালানোর বিষয় নিয়ে তুমুল তর্ক-বিতর্ক হয়েছিল বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। দুঁদে গোয়েন্দাদের মতে, এর জন্য আরজিকর হাসপাতালে চেস্ট ডিপার্টমেন্টের সিনিয়রদের ব্যবহারে এবং অসহযোগিতায় ওই মৃত চিকিৎসক বেশ কিছুটা হতাশায় ভুগছিলেন। তাই সে এই হতাশার কথা বাড়িতে মা-বাবার কাছে প্রকাশ করেছিলেন। ওই হাসপাতালে ডিউটিতে যেতে তার ভালো লাগছে না বলেও অনীহা প্রকাশ করেছিলেন। মেয়ের কাছে চেস্ট ডিপার্টমেন্টে একটি চক্র চলার আভাস পেয়েছিলেন নিহত তরুণী পড়ুয়া চিকিৎসকের মা-বাবা। তারই ভিত্তিতে ওই নিহত চিকিৎসকের বাবা তার মেয়েকে ধর্ষণ ও খুন করার ক্ষেত্রে সুপারি দেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। গোয়েন্দারা এখন সেই সূত্র ধরেই আরজি কর হাসপাতলে যদি সত্যি সেক্স ও মাদক র্যাকেট চলে থাকে তাহলে তার সঙ্গে কোন দুজন হাউস স্টাফ ও একজন ইন্টার্ন জড়িত তাদের চিহ্নিত করতে জোরদার নজরদারি চালাচ্ছে। ওই হাসপাতালে চার জন পড়ুয়া চিকিৎসককে চিহ্নিত করা হয়েছে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য। গোয়েন্দাদের বিশ্বাস ওই পড়ুয়া চিকিৎসকদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ বিষয়ে কোনো সূত্র মিলতে পারে। সেক্ষেত্রে গোয়েন্দাদের মতে খুনের মোটিভ ঘোরাতেই একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। গোয়েন্দারা ইতিমধ্যে ধৃত সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের পরিচিত এক মহিলার বয়ান রেকর্ড করেছে। ওই মহিলা ধৃত সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায় তাকে কিভাবে না দেখা করলে খুনের হুমকি দিত সে বিষয়ে বিস্তারিত অফিসারদের জানিয়েছেন। পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে ধৃত সঞ্জয় রায় চিকিৎসকদের ছুটি মঞ্জুর করতেন পর্যন্ত। শুধু আরজিকর হাসপাতাল ভাই একাধিক সরকারি হাসপাতালে রোগী ভর্তির যে চক্রগুলি সক্রিয় তার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিল। একাধিক হাসপাতালে সুপাররা ধৃত সঞ্জয় রায়ের নির্দেশ মানতে বাধ্য থাকতো। পুলিশের অনুরোধ বাদ দিয়ে অন্য যেকোনো রোগী সরকারি হাসপাতালে ভর্তির ক্ষেত্রে মোটা টাকা দাবি করত ধৃত সিভিক ভলেন্টিয়ার। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে ময়না তদন্তের রিপোর্টে ইতিমধ্যে নিহত পড়ুয়া চিকিৎসকের যৌনাঙ্গে ১৫০গ্রাম শুক্রাণু পাওয়া গিয়েছে বলে উল্লেখ করেছে। কিন্তু গোয়েন্দারা মৃত পড়ুয়া চিকিৎসকের সঙ্গে একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও এই খুনের পেছনে। প্রতিশোধের স্পৃহা রয়েছে বলে অনেকটাই নিশ্চিত কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অভিজ্ঞ মার্ডার স্কোয়াডের অফিসাররা। তাই এই চক্রের সন্ধান পেতে ওই হাসপাতালের চেস্ট বিভাগের একাধিক স্বাস্থ্য কর্মী সহ হাসপাতালের নিরাপত্তা রক্ষীদের জেরা করতে চায় লালবাজার। এদিকে আরজি কর হাসপাতালে দুই চিকিৎসক নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন বলে যে খবর রয়েছে সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখছে লালবাজার। পড়ুয়া চিকিৎসকদের একাংশ অভিযোগ তুলেছে ঘটনার পর থেকে দুই চিকিৎসক আরজি কর হাসপাতালের গা ঢাকা দিয়েছেন। গোয়েন্দারা এর সত্যতা যাচাই করে দেখছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct