অমরজিৎ সিংহ রায়, বালুরঘাট, আপনজন: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আদিবাসী উন্নয়ন বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের উদ্যোগে সারম্বরে পালিত হল বিশ্ব আদিবাসী দিবস। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটে অবস্থিত রবীন্দ্র ভবনে জেলা স্তরের এই আদিবাসী দিবস উদযাপন করা হয়। ঝাড়গ্রাম থেকে ভার্চুয়ালি এদিন অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বালুরঘাটে জেলা স্তরের এই অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা লগ্নে হাজির ছিলেন রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র, জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা, জেলা পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তাল, জেলা পরিষদের সভাধিপতি চিন্তামণি বিহা, জেলা অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ ও উপজাতি উন্নয়ন বিভাগ দপ্তরের আধিকারিক সুজয় সাধু সহ অন্যান্য আধিকারিক ও বিশিষ্টজন। সেখানে প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন সকলে। উদ্বোধনী ভাষণের মধ্যে দিয়ে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর আধিবাসী ছেলে মেয়েদের হাতে তুলে দেওয়া হয় শংসাপত্র। এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের আদিবাসী কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। এরপর ওই সম্প্রদায়ের নিজস্ব কায়দায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য রাজ্য সরকারের নেওয়া একাধিক প্রকল্প তুলে ধরা হয় প্রদর্শনীর মাধ্যমে। এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চে থেকে নিজের বক্তব্যে রাজ্য সরকারের উন্নয়নশীল কাজের খতিয়ানের পাশাপাশি আদিবাসী মানুষদের জন্য কি পরিকল্পনা রয়েছে তা বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করেন রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র।
অন্যদিকে, এ বিষয়ে জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা জানান, ‘রাজ্য জুড়ে বিশ্ব আদিবাসী দিবস আজ পালিত হচ্ছে।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঝাড়গ্রামে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেছেন। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প গুলি আপনাদের কাছে পৌঁছে দেবার জন্য আমরা সদা তৎপর রয়েছি।’
এ বিষয়ে রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র বলেন, ‘আদিবাসী মানুষদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্যই এই দিনটিকে পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রে পালন করা হয়। আদিবাসী সমাজের যে নিজস্ব সংস্কৃতি রয়েছে সেটাকেও আমরা এদিনে স্মরণ করি।’
এ বিষয়ে জেলা অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ ও উপজাতি উন্নয়ন বিভাগ দপ্তরের আধিকারিক সুজয় সাধু জানান, ‘আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য আমরা যে সমস্ত প্রকল্পগুলো হাতে নিয়েছি সেগুলোকে সঠিকভাবে বাস্তবায়িত করার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা জারি রয়েছে। সরকারি প্রকল্প থেকে একটিও আদিবাসী ভাই, বোন যাতে বঞ্চিত না হন; তার জন্য সর্বদা আমরা তৎপর রয়েছি। যেকোনো সমস্যায় আপনারা তৎক্ষণাৎ বিসিডব্লু দপ্তরে অথবা আমাদের জেলা দপ্তরে যোগাযোগ করবেন। জেলা জুড়ে প্রায় ৫১টি হোস্টেল রয়েছে। সেই হোস্টেল গুলোতে যাতে আমরা সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে পারি, জেলা শাসকের তৎপরতায় আমরা সেই কাজ করে চলেছি। আদিবাসী সমাজের উন্নয়নের জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক, খেলাধুলা থেকে শুরু করে হলিস্টিক ডেভেলপমেন্টের চেষ্টা আমরা করছি।’ বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদযাপন উপলক্ষে এদিন জেলার স্তরের মূল অনুষ্ঠান বালুরঘাটে অনুষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে ব্লক স্তরের অনুষ্ঠানটি গঙ্গারামপুর মহাকুমার অন্তর্গত বুনিয়াদপুরে সুকান্ত ভবন অনুষ্ঠিত হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct