চন্দনা বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর, আপনজন: রাজ্যে যেখানে উন্নয়ন চলছে। পাকা বাড়ি তৈরি হয়ে চলেছে কেন্দ্র ও রাজ্যে সরকারের উদ্যোগে সেখানে জয়নগর বিধানসভার বেলে দূর্গানগর পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় আড়াই হাজার মাটির বাড়িতে বাস করতে বাধ্য হচ্ছে কয়েকহাজার গরীব মানুষ। সরকারি আর্থিক টালবাহানায় তাঁরা আজ বঞ্চিত। আর মাটির বাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে গত রবিবার সাহানারা জমাদার নামে এক গৃহবধূর মৃত্যুর পরে আতঙ্কিত আশেপাশের এলাকার মানুষজন। প্রতিবেশীর মৃত্যু অন্য মাটির বাড়ির বাসিন্দাদের আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
এই কদিনের ভরা কোটালের নিম্নচাপের ক্রমাগত বৃষ্টির জেরে মাটির দেওয়াল ও চাল ভেঙে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের ৫জন সদস্য আহত। এই ঘটনার পরে জয়নগর ২ নম্বর ব্লকের বেলে দুর্গানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব রঘুনাথপুর গ্রামে অন্য মাটির বাড়ির বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। রাতের ঘুম চলে গিয়েছে তাঁদের। বারংবার প্রশাসনের সব স্তরে আবেদন করে আবাস যোজনার পাকা ঘর না মেলায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বাসিন্দারা। এদিকে ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর,রবিবার রাতের ঘটনায় ওই পরিবারের দুই সদস্য এখন কলকাতার সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রায় আড়াই হাজার মাটির বাড়ি আছে এই পঞ্চায়েত এলাকায়। তাঁর মধ্যে এই পূর্ব রঘুনাথপুর গ্রামে এখন ১০০টির বেশি মাটির বাড়ি আছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, আমাদের গ্রামে একই পরিবারে ছজন আহত হয়েছে তার মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে পাশাপাশি দুজন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। যার জেরে আমাদের গ্রামের আতঙ্ক আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। আমাদেরও মাটির বাড়িতে থাকতে হয়। ক্রমাগত বৃষ্টির জেরে দেওয়াল আলগা হয়ে যাচ্ছে। এই নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে ব্লক প্রশাসনের কাছে দরবার করেও ঘর মেলেনি। এভাবেই আবারো যাতে এই ধরনের দুর্ঘটনা আর যাতে না ঘটে তাই প্রশাসনের কাছে অনুরোধ আমাদের এলাকার এই গ্রামে যে সমস্ত মাটির বাড়ি গুলি আছে সেগুলি যাতে পাকা বাড়ির করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তাহলে অনেকটাই উপকৃত হব। কারন আমাদের এই গ্রামে বেশিরভাগ মানুষ দিন আনা দিন খাওয়ার উপরেই নির্ভরশীল তাঁর উপরে নিজস্ব ঘর বানাতে সেই আয় আমাদের মধ্যে নেই। তাই সরকারি সাহায্যে যদি আমাদের এই মাটির বাড়িগুলি পাকা বাড়ি করে দেয় তাহলে এই ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। এব্যাপারে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান রীতা নস্কর বলেন, আমাদের গ্রামে প্রায় আড়াই হাজার মাটির বাড়ি আছে। মাটির বাড়ি চাপা পড়ে মৃত্যু বেদনাদায়ক। কোনো মৃত্যুই আমাদের কাম্য নয়। কেন্দ্রীয় সরকার থেকে আবাস যোজনার টাকা পাঠানো বন্ধ আছে। আমরাও চাই দ্রুত আমাদের গ্রামের মাটির বাড়ি গুলোকে পাকা করতে। আমরা ইতিমধ্যে বিডিও তে সব জানিয়েছি। আর ইতিমধ্যে মারা যাওয়া ঐ গৃহবধূর বাড়ি সহ একাধিক বাড়িতে ত্রিপল, শুকনো খাবার বিডিও ও পঞ্চায়েতের তরফে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে জয়নগর ২ নং বিডিও মনোজিত বসু বলেন,ওই এলাকায় মোট কত মাটির বাড়ি আছে আর সেখান কার বর্তমান পরিস্থিতির সার্ভে করা হচ্ছে। সার্ভে রিপোর্ট জেলায় পাঠানো হচ্ছে। দেখা যাক যত তাড়াতাড়ি ওই এলাকার সমস্যার সমাধান করা যায়। আর মাটির ঘর চাপা পড়ে মৃতের ক্ষতি পূরণের ব্যাপারে জেলায় রিপোর্ট দেওয়া আছে। আশাকরি ক্ষতিপূরণ পেয়ে যাবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct