সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: বন দফতরের কোয়ার্টার ভেঙে প্রাসাদোপম বাড়ি তৈরীর অভিযোগ বাঁকুড়া জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য তথা প্রাক্তন সহ সভাধিপতির বিরুদ্ধে, অভিযোগ অস্বীকার, অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখার আস্বাস বন দফতরের ।
ছিল বন দফতরের কোয়ার্টার। রাতারাতি সেই কোয়ার্টার দখল করে গুঁড়িয়ে দিয়ে সেখানে তৈরী হয়েছে বাঁকুড়া জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্যা তথা প্রাক্তন সভাধিপতির প্রাসাদোপম বাড়ি। এমন অভিযোগকে কেন্দ্র করেই এখন বাঁকুড়ার রানীবাঁধের রাজনীতি উথাল পাথাল। অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার আস্বাস বন দফতরের।
বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের রানীবাঁধ ব্লকের দাপুটে নেতা হিসাবে পরিচিত গৌর চন্দ্র টুডু। পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক গৌর চন্দ্র টুডু বর্তমানে তৃণমূলের ব্লক সহ সভাপতি পদে রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি তৃণমূলের এস টি শাখার জেলার দায়িত্বেও ছিলেন। গৌর চন্দ্র টুডুর স্ত্রী বিভাবতী টুডুও পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক। বাম আমলে দীর্ঘদিন তিনি বাঁকুড়া জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা ছিলেন। জেলা পরিষদে পালা বদলের পর তিনি সহ সভাধিপতির দায়িত্ব পান। বর্তমানে তিনি বাঁকুড়া জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য। বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের শাসক দলের এমন হাই প্রোফাইল দম্পতির বিরুদ্ধেই উঠেছে মারাত্মক অভিযোগ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বারেবারে বে আইনি দখলদারি উচ্ছেদ নিয়ে কঠোর অবস্থানের নির্দেশ দিচ্ছেন পুরসভাগুলিকে। বে আইনি দখলদারি তুলতে গিয়ে বন দফতরের আধিকারিকরা রাজ্যের মন্ত্রীর রোষে পড়া নিয়ে যখন রাজ্য রাজনীতি উত্তাল সেই সময় রানীবাঁধের ওই হাই প্রোফাইল তৃণমূল নেতা দম্পতির বিরুদ্ধেই উঠেছে বন দফতরের কোয়ার্টার গুঁড়িয়ে দিয়ে সেই জায়গা দখল করে প্রাসাদোপম বাড়ি তৈরীর অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবী বছর কয়েক আগে বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ওই নেতা দম্পতির নির্দেশে শাবল গাঁইতি দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বন দফতরের একটি কোয়ার্টার। স্থানীয়দের অভিযোগ কোয়ার্টার ভাঙার শব্দ যাতে এলাকার মানুষের নজর না কাড়ে সেজন্য ওই দিন কোয়ার্টারের সামনে সশব্দে বাজানো হয় ডিজে বক্স। বাঁকুড়া ঝিলিমিলি রাজ্য সড়কের পাশেই থাকা ওই কোয়ার্টার ভেঙে বন দফতরের জায়গা দখল করে তৃণমূল নেতা দম্পতি রাতারাতি ওই জায়গায় নিজের প্রাসাদোপম বাড়ি তৈরী করান বলে অভিযোগ। বিরোধী বামেদের দাবী বিষয়টি নিয়ে বারেবারে বন দফতরকে জানানো হলেও অজানা কারনে বন দফতর বিষয়টি নিয়ে কোনো ভ্রুক্ষেপ করেনি। দ্রুত ওই তৃণমূল নেতা দম্পতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আগামীদিনে আরো বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বামেরা। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা গৌর চন্দ্র টুডু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবী কোনো কোয়ার্টার ভাঙা হয়নি। নিজের মালিকানাধীন জায়গায় নিয়ম মেনে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের অনুমতি নিয়েই বাড়িটি তৈরী করা হয়েছে। উদ্যেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁদের কালীমালিপ্ত করতেই এখন এমন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। এলাকার তৃণমূল নেতৃত্বের দাবী ঘটনাটি তাঁদের জানা নেই। যদি কেউ অন্যায় করে থাকে তাহলে তিনি যত বড়ই নেতা হোন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। বন দফতর জানিয়েছে, তারা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct