হাসান লস্কর, কুলতলি, আপনজন: সুন্দরবনের অন্যতম প্রবেশদ্বারের সন্নিকট একেবারে প্রত্যন্ত এলাকা কুলতলীর মৈপিঠ বৈকন্ঠপুর ও গুড়গুড়িয়া ভুবনেশ্বরী অঞ্চলের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত তথা বাম আমলে নির্মিত বিশাল পরিধির ১০ সজ্জা বিশিষ্ট ভুবনেশ্বরী প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। বেশ কয়েক বছর যাবত ভগ্ন দশা কাটিয়ে পুনরু জীবন পেতে চলেছে। আর সেই হাসপাতালের চারপাশে এই মুহূর্তে গজিয়ে উঠেছে অসংখ্য গাছ গাছালি লতাপাতা উলুবনে পরিপূর্ণতায় জঙ্গলের আকার ধারণ করায়-তাতেই সরীসৃপ এর উৎপাত বেড়েছিল।
আর তারই ভয়ে হাসপাতাল মুখী হতে ভয় পেতো এলাকার রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত মানুষজন। এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নিয়মিত ডাক্তারবাবু ও না আসায় সমস্যায় সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার মৎস্যজীবী থেকে শুরু করে অসহায় মানুষজন। যেখানে সুন্দরবনের বাঘের আক্রমণে গুরুতর আহত কিম্বা নিহত হতে হয় তাদের দীর্ঘ প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জয়নগর কুলতলী প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র সেখানে গিয়ে এই সমস্ত রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে হয়। আর এই দীর্ঘ সময়ে বাঘের আক্রমণে আহত ব্যক্তির রক্তক্ষরণ ঘটে। রক্তশূন্যতায় শেষে মারাও যায় তারা।
মানবাধিকার সংগঠন এপিডিয়ার এর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিঠুন মন্ডল এর কথায় মৌলিক অধিকারের মধ্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা এই সমস্ত পরিবারে ঠিকমত মেলেনা।
স্থানীয় গ্রামীন চিকিৎসক যারা আছেন তারা এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দিনের পর দিন ফুলেঁফেঁপে উঠছে। এখানে মাত্র একজন ফার্মাসিষ্ট, একজন স্টাফনার্স ও একজন ডাক্তার যিনি সপ্তাহে দু-তিন দিন আসেন। বাকি দিনগুলো ফার্মাসিষ্ট ও স্টাফ নার্স চালায়। সরকারের উদাসীনতায় কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় ধ্বংসের মুখে। উলু ঘাস আর জঙ্গলে পরিপূর্ণ ভুবেনেশ্বরী হাসপাতাল বিষাক্ত সাপের আবাসভূমি এই ভুবনেশ্বরী প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি।
ন্যূনতম রক্ষণাবেক্ষণ হলেই হাসপাতাল চত্বর আগাছায় পরিপূর্ণ হতোনা। এই হাসপাতাল প্রসঙ্গে সিপিআইএমের কুলতলি এরিয়া কমিটির সম্পাদক উদয় মন্ডলের কথায় যে সময়ে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় ছিল এই হাসপাতালটি নির্মিত হয়ার পরে জনগণের সেবায় নিয়োজিত ছিল। ক্ষমতা হস্তান্তরের পর থেকেই এই হাসপাতাল থেকে এলাকাবাসী ঠিক মতো পরিষেবা পাচ্ছে না। এ বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে ভারতীয় জনতা পার্টির জয়নগর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি উত্তম হালদার এর কথায় এই হাসপাতালের অবস্থা শোচনীয় একটু বৃষ্টি নামলেই ছাদ থেকে চুইয়ে পড়ে জল এবং চারিদিকে গাছপালা লতা পাতায় পরিপূর্ণ কিট পতঙ্গেরও উৎপাত বেড়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক গণেশচন্দ্র মন্ডলের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি জানান অতি শীঘ্রই এই ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি নবরূপে সজ্জিত করার ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তিনি জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দপ্তরে । কুলতলির আরেকটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র বেহাল থাকায় সেটিও এই মুহূর্তে, নবরূপে সজ্জিত হওয়ার পথে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct