চন্দনা বন্দ্যোপাধ্যায়, কুলতলি, আপনজন: সুন্দরবনের বাঘ ধরে পুরস্কৃত হলেন বনকর্মী আমিরচাঁদ।কর্ম জীবনে ৮৭টা সুন্দরবনের বাঘ ধরেছেন তিনি। আর সেই ৬০ বছরের আমিরচাঁদকে এবার সন্মানিত করলো দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বনদফতর। ২৬ ফুট খেজুরগাছে উঠে পড়া সুন্দরবনের রাজাকে কাবু করে যেমন ধরে ছিলেন। তেমনই তাল গাছ থেকেও বাঘকে নামিয়েছিলেন।সুন্দরবনের যে কোনও গ্রামে বাঘ ঢুকেপড়লেই ডাক পড়তো কুলতলির আমির চাঁদের। বন দফতরের কর্মীরা তাঁকে ডাকেন ছোটবাবু বলে।এই ছোট বাবু ওরফে আমিরচাঁদের বয়স ৬০ বছর। কিন্তু এই বয়স তাঁর কাছে কোন ও বাধা নয়। সদ্য কাজ থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। তাঁর এই কর্মজীবনে ৮৭টা বাঘকে ধরে আবার জঙ্গলে পাঠিয়েছেন নিপুন দক্ষতায়।তাঁরই চেষ্টায় বন থেকে উদ্ধার হয়েছিল ১৪টি হরিণের চামড়া।এই আমির চাঁদকে আন্তর্জাতিক ব্যাঘ্র দিবসে সন্মানিত করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বন দপ্তর। সন্মান নিয়ে চোখে জল তাঁর।দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বন বিভাগ থেকে জানা গেল,আমিরচাঁদের মেয়াদ বাড়িয়ে তাঁকে কাজে রেখে দেওয়ার চিন্তা ভাবনা চলছে। কুলতলির দক্ষিণ দুর্গাপুরের বাসিন্দা আমিরচাঁদ মণ্ডল। পরিবারে স্ত্রী ছাড়া আছে তিন ছেলে দুই মেয়ে। ১৯৮৪ সালে ধনচি ক্যাম্পে অস্থায়ী বনকর্মী হিসেবে কাজ শুরু হয় আমির চাঁদের।এরপর ১৯৮৭ সালের ২২ জানুয়ারিতে সরকারি ভাবে প্রথম বোটম্যান হিসেবে কুলতলি বিটে কাজে যোগ দেন তিনি।এই বোটম্যান থেকে বনরক্ষীতে পদোন্নতি হয় আমিরচাঁদের। শুধু বাঘ ধরা নয় সুন্দরবনের নদীতে জলদস্যু আক্রমনও ঠেকিয়ে ছিলেন তিনি। এই জলদস্যুদের কবল থেকে গ্রামবাসীদের রক্ষা করার জন্য প্রাক্তন বনমন্ত্রী যোগেশ বর্মন ও পুরস্কৃত করেন আমিরচাঁদকে। বাঘকে বন্দুক দিয়ে ঘুম পাড়ানো কাজে প্রশিক্ষন ছিল তাঁর। এই দক্ষ বনকর্মীর ভূয়সী প্রশংসা করেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা বন বিভাগীয় আধিকারিকরা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct