আপনজন ডেস্ক: স্নায়ুযুদ্ধের মধ্যেই বন্দি বিনিময় করেছে রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সাংবাদিক ইভান গার্শকোভিচ এবং সাবেক মার্কিন নৌসেনা পল হুইলেনকে মুক্তি দিয়েছে রাশিয়া। স্নায়ুযুদ্ধের পর এটাই বৃহত্তম বন্দি বিনিময়। গত এক বছর ধরে চলা বন্দি বিনিময় আলোচনায় যুক্ত ছিল যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জার্মানি সহ আরও তিন দেশ। বেশ গোপনীয়তা অবলম্বন করে বন্দি বিনিময়ের চুক্তিতে পৌঁছেছে রাশিয়া এবং পশ্চিমা দেশগুলো। এরমাধ্যমে মার্কিন সাংবাদিক ও নৌসেনাসহ উভয়পক্ষের মোট ২৪ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। বৃহস্পতিবার রাতে এই বন্দি বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়ন করা হয়। চুক্তির আওতায় রাশিয়ার কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ১৬ জন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশগুলোর বিভিন্ন কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন আট বন্দি। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়, পশ্চিমা দেশগুলো থেকে ছাড়া পাওয়াদের মধ্যে বার্লিনে নির্বাসিত ভিন্নমতালম্বীকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত ভাদিম ক্রাসিকভও রয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বন্দি বিনিময় চুক্তিটিকে ‘কূটনৈতিক এবং বন্ধুত্বের বিশাল কীর্তি’ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছেন এবং ওয়াশিংটনের মিত্রদের ‘সাহসী সিদ্ধান্তের’ জন্য প্রশংসা করেছেন। মুক্ত হওয়া বন্দিদের যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে স্বাগত জানিয়েছেন বাইডেন ও ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমালা হ্যারিস। বন্দিদের আত্মীয়দের পাশে ছিলেন বাইডেন। তিনি এর আগে হোয়াইট হাউসে বলেছিলেন, এই পৃথিবীতে বন্ধু থাকা কেন গুরুত্বপূর্ণ তার একটি শক্তিশালী উদাহরণ স্পষ্ট হলো। তিনি জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মস্কোতে বন্দিদের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাদের রাষ্ট্রীয় পুরস্কারে ভূষিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বন্দি বিনিময় চুক্তিতে সাফল্য পাওয়ায় ডেমোক্র্যাট দলের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। কেননা এই চুক্তিকে বাইডেন প্রশাসনের কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। এরইমধ্যে নির্বাচনে বাইডেনের দল থেকে কমালা হ্যারিসকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে সমর্থন করেছেন বাইডেন ও দলের অন্যতম শীর্ষ নেতারা। এতে আগামী নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন কমালা হ্যারিস।
অন্যদিকে এই বন্দি বিনিময় চুক্তি মার্কিন কূটনীতির জন্য দীর্ঘস্থায়ী কোনো সাফল্য নয় বলেও মনে করছেন অনেকে। এরমাধ্যমে মার্কিন-রুশ সম্পর্কের কোনো পরিবর্তন হবেনা বলেও ধারণা তাদের। মার্কিন উপ-জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন ফিনার সিএনএনকে বলেছেন, বন্দি বিনিময় সত্ত্বেও ওয়াশিংটন এবং ক্রেমলিন সম্পর্ক এখনও খুব কঠিন জায়গাতেই অবস্থান করছে। এই বন্দি বিনিময় আলোচনার সাথে ভিতরগত সম্পর্ক উন্নয়নের বিশ্বাস জড়িত নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct