আপনজন ডেস্ক: বহুকাল ধরে ধারণা করা হচ্ছে, শুধু সালোকসংশ্লেষণের জীব সূর্যের আলো, পানি ও কার্বন ডাই–অক্সাইড ব্যবহার করে জ্বালানি ও অক্সিজেন তৈরি করতে পারে। গাছপালা ও শেওলা এভাবেই পৃথিবীতে অক্সিজেন তৈরি করে। তবে প্রশান্ত মহাসাগরের প্রায় ১৩ হাজার ফুট গভীরে গাঢ় অন্ধকার স্থানে অক্সিজেন উৎসের খোঁজ পেয়েছেন স্কটিশ অ্যাসোসিয়েশন ফর মেরিন সায়েন্সের (এসএএমএস) বিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু সুইটম্যান। প্রশান্ত মহাসাগর নিয়ে গবেষণার সময় গভীর সমুদ্রতলে বিভিন্ন ধাতুর সন্ধান পান তিনি। এসব ধাতু অন্ধকারেও অক্সিজেন তৈরি করতে পারে।
প্রশান্ত মহাসাগরের রিজ ক্লারিওন-ক্লিপারটন জোনের গভীর সমুদ্রতলে অক্সিজেন উৎসের খোঁজ পাওয়ার বিষয়ে বিজ্ঞানী সুইটম্যান বলেন, ‘আমাদের গ্রহে জীবন শুরু করার জন্য অক্সিজেন থাকতে হবে। আমরা জানি, পৃথিবীর অক্সিজেন সরবরাহ সালোকসংশ্লেষিত জীবের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, গভীর সমুদ্রেও অক্সিজেন তৈরি হয়, যেখানে আলো নেই। যখন আমরা প্রথম অক্সিজেনের সন্ধান পেয়েছিলাম, তখন আমরা ভেবেছিলাম সেন্সরের সমস্যা।’
বিভিন্ন খনিজ পদার্থের সংমিশ্রণে পলিমেটালিক নোডুলস তৈরি হয় সমুদ্রতলে। যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী ফ্রাঞ্জ গেইগার বলেন, ‘অক্সিজেন উৎপন্নকারী পলিমেটালিক নোডুলসে কোবাল্ট, নিকেল, তামা, লিথিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজের মতো ধাতু রয়েছে, যা ব্যাটারিতে ব্যবহৃত হয়। মনে হচ্ছে আমরা একটি প্রাকৃতিক জিও ব্যাটারি বা ভূ-ব্যাটারি আবিষ্কার করেছি। এই জিও ব্যাটারি সমুদ্রের অন্ধকারে অক্সিজেন উৎপাদনের কারণ হতে পারে।’
নেচার জিওসায়েন্স সাময়িকীতে সমুদ্রতলে অক্সিজেনের উৎস আবিষ্কার নিয়ে গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, গভীর সমুদ্রতলে থাকা বিভিন্ন খনিজ পদার্থের সংমিশ্রণে তৈরি হওয়া পলিমেটালিক নোডুলস নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, গভীর সমুদ্রতলে থাকা নোডুলস অক্সিজেন তৈরির জন্য পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct