আপনজন ডেস্ক: সোমবার বিধানসভায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তিস্তা নদীর জল বণ্টন নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যেকোনো চুক্তির বিরোধী সরকার।
বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসেন বলে দাবি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তিস্তার জল বণ্টনের অর্থ হবে সেচের ব্যবস্থা তো দূরের কথা, উত্তরবঙ্গকে পানীয় জল থেকেও বঞ্চিত করা।
গত শনিবার পশ্চিমবঙ্গের সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ভারত ও ভুটানের মধ্যে জল বণ্টনবিষয়ক চুক্তিটি বিধানসভায় আলোচনার জন্য তালিকায় রেখেছিলেন। ওই দিন শোভনদেব পরিষ্কার করে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার গঙ্গা ও তিস্তা চুক্তি চূড়ান্ত করার বিষয়ে এককভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে কথাবার্তা বলছে। এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনো কথাবার্তা বলা হচ্ছে না। বিষয়টি পশ্চিমবঙ্গের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের। তাই এটি নিয়ে এবারের বিধানসভা অধিবেশনে আলোচনা হবে। সেই প্রস্তাবের অংশ হিসেবে বিধানসভার অধিবেশনে সোমবার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গে ভাঙন নিয়ন্ত্রণ ও বন্যা প্রশমন সংক্রান্ত প্রস্তাব নিয়ে বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শীত ও গ্রীষ্ম মৌসুমে তিস্তা নদীতে খুব কম জল থাকে। মমতা আরও অভিযোগ করেন, ফারাক্কা চুক্তি পুনর্নবীকরণ নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনায় রাজ্য সরকারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। অথচ তার রাজ্য এই ইস্যুতে অংশীদার, কারণ গঙ্গা নদী পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রতিবেশী দেশে প্রবাহিত হয়।
তিনি বলেন, নীতি আয়োগে গত সপ্তাহে আমি ভারত-ভুটান চুক্তি নিয়ে বলেছি। আমি তিস্তা চুক্তি নিয়েও কথা বলেছি। এ বিষয়ে বারবার কেন্দ্রকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেনি এবং বাজেটেও কোনো অর্থ বরাদ্দ করেনি। আমাদের প্রতিবেশীরা টাকা পেলেও আমরা পাইনি। আমরা কেন পাইনি, তা জানতে চেয়েছি এবং আবারও জানতে চাইব।
নীতি আয়োগের বৈঠক থেকে ফিরে রোববারই মমতা বিমানবন্দরে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে কথা না বলে এককভাবে যেসব চুক্তি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তা তাঁর পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
তিস্তার জল বণ্টন ও ফারাক্কা চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে গত মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘তীব্র আপত্তি’ প্রকাশ করেছিলেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিস্তা নদীর স্বাস্থ্যের অবনতির কারণ হিসাবে “সিকিমে একের পর এক জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ, উঁচু অববাহিকায় বন উজাড় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে” দায়ী করেছিলেন। বাংলার দুটি জেলা এবং বিহারের কয়েকটি জেলা নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি এবং উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্বের অংশ করার বিষয়ে কিছু বিজেপি নেতার দাবির বিরোধিতা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, চার মন্ত্রী বলেছেন উত্তরবঙ্গ ভাগের কথা। আমি ধিক্কার জানাই। আসুক বাংলা ভাগ করতে, কী করে রুখতে হয় দেখিয়ে দেব।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct