আপনজন ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি আয়োগের নবম গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠক চলার মাঝপথে ওয়াকআউট করেছেন।
২০২৪-২৫ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটের প্রতিবাদে বেশ কয়েকটি বিরোধী শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা সভা বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেও তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো বৈঠকে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। অ-এনডিএ শাসিত রাজ্য সরকারগুলির প্রতি ‘বৈষম্যমূলক’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
নীতি আয়োগের বৈঠক থেকে ওয়অক আউটের পর মমতা অভিযোগ করেন, তিনি যখন বক্তব্য রাখছিলেন তখন তাঁর মাইক্রোফোন বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০২৪-২৫ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলেও কটাক্ষ করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমি সভা বয়কট করে এসেছি। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুকে ২০ মিনিট সময় দেওয়া হয় বক্তব্য রাখার জন্য। অসম, গোয়া, ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রীরা ১০-১২ মিনিট বক্তব্য রাখেন। কিন্তু মাত্র পাঁচ মিনিট বরাদ্দ করা হয় তাকে বলার জন্য। তা-ও মাঝপথে মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আমাকে আটকালেন কেন? কেন আপনি বৈষম্যমূলক আচরণ করছেন? আমি মিটিংয়ে যোগ দিয়েছি। আপনার খুশি হওয়া উচিত। বরং আপনি আপনার দল ও সরকারকে বেশি সুযোগ দিচ্ছেন। শুধু আমি বিরোধী দলের পক্ষ থেকে আছি, আর আপনারা আমাকে কথা বলতে বাধা দিচ্ছেন... এটা শুধু বাংলার অপমান নয়, সমস্ত আঞ্চলিক দলেরও অপমান।
মমতা বলেন, এই বৈঠক বর্জন করেছিলেন তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক ও হিমাচল প্রদেশের তিন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী যথাক্রমে রেবন্ত রেড্ডি, সিদ্দারামাইয়া ও সুখবিন্দর সিং সুখু। গরহাজির ছিলেন ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক মুখ্যমন্ত্রীরাও। যেমন তামিলনাড়ুর ডিএমকে মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন, ঝাড়খন্ডের জেএমএম মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, পাঞ্জাবের আম আদমি পার্টির মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিং মান ও কেরালার সিপিএম মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল কারাগারে। তাঁর যোগ দেওয়ার প্রশ্ন ছিল না। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বৈঠকে মাইক বন্ধ করার আগে বলেছি কীভাবে বিরোধীশাসিত রাজ্যগুলোকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। ন্যায্য দাবি মানা হচ্ছে না। অথচ প্রতিটি রাজ্যের ও আঞ্চলিক দলের নানা আকাঙ্ক্ষা থাকে। রাজ্য শক্তিশালী হলেই দেশ শক্তিশালী হয়।’
বৈঠকে মমতা বলেন, বিরোধীদের পক্ষে একমাত্র আমিই এখানে উপস্থিত আছি। এসেছি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মজবুত করার কথা বলতে। অথচ বাজেটে বিরোধী রাজ্যগুলোকে চরম বঞ্চনা করা হল। একজন মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে এটা অপমানজনক।
মমতা আগেই বলেছিলেন, নীতি আয়োগ বন্ধ করে পুরোনো যোজনা কমিশন ফেরত আনা উচিত। আজ বৈঠক থেকে বেরিয়ে মমতা বলেন, আর কোনো দিন তিনি নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেবেন না।
মমতার অভিযোগ অবশ্য নস্যাৎ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি) আজ শনিবার ‘এক্স’ মারফত জানায়, নীতি আয়োগের নবম গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাইক বন্ধ করা হয়নি। ঘড়িতে শুধু দেখানো হয়েছিল, তাঁর বলার সময় শেষ হয়ে গেছে। কথাটি ঘন্টি বাজিয়ে তাঁকে জানানো হয়নি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct