আপনজন ডেস্ক: বুধবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার উত্তরবঙ্গের আট জেলাকে উত্তর পূর্ব ভারতের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে। তা নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই এবার লোকসভায় বাংলার মুসলিম অধ্যুষিত দুই মালদহ এবং মুর্শিদাবাদকে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল ঘোষণা করার দাবি জানালেন ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। একইসঙ্গে বিহারের মুসলিম অধ্যুষিত কাটিহার, আরারিয়া এবং কিষাণগঞ্জকেও ওই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন নিশিকান্ত। বৃহস্পতিবার লোকসভায় জিরো আওয়ারে নিশিকান্ত দাবি মালদহ, মুর্শিদাবাদ, আরারিয়া, কিষাণগঞ্জ, কাটিহার ও সাঁওতাল পরগনাকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার দাবি জানান।
নিশিকান্তের অভিযোগ, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের কারণে ওই জেলাগুলির জনবিন্যাস বদলে যাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসীদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে অসমের মতো এনআরসি লাগু করারও দাবি জানান তিনি। নিশিকান্ত দুবে দাবি করেন, এই অবৈধ অভিবাসন রুখতে কিছু ব্যবস্থা না নিলে হিন্দুরা এই জায়গাগুলি থেকে উধাও হয়ে যাবে। লোকসভায় জিরো আওয়ারে এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে দুবে দাবি করেন, ঝাড়খণ্ডের সাঁওতাল পরগনা অঞ্চলে আদিবাসীদের জনসংখ্যা কমেছে বাংলাদেশ থেকে মানুষের অনুপ্রবেশের অভিযোগের কারণে।
তিনি বলেন, ‘আমি যে রাজ্য থেকে এসেছি, সাঁওতাল পরগনা অঞ্চল থেকে এসেছি - যখন সাঁওতাল পরগনা বিহার থেকে পৃথক হয়ে ঝাড়খণ্ডের অংশ হয়েছিল, তখন ২০০০ সালে সাঁওতাল পরগনার জনসংখ্যার ৩৬% ছিল আদিবাসী। বর্তমানে তাদের জনসংখ্যা ২৬ শতাংশ। ১০ শতাংশ আদিবাসী কোথায় উধাও হয়ে গেল? এই সংসদে তাঁদের নিয়ে কখনও মাথা ঘামায় না, ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি হয়।’ তার অভিযোগ, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা আদিবাসী মহিলাদের বিয়ে করছে। এমনকী তার এলাকায় ১০০ জন আদিবাসী মুখিয়া থাকলেও তাদের স্বামী মুসলমান। পাকুড়ের তারানগর-ইলামি ও দাগাপাড়ায় দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছিল কারণ মালদা ও মুর্শিদাবাদের লোকেরা আমাদের লোকজনকে উৎখাত করছিল এবং হিন্দু গ্রামগুলি খালি হয়ে যাচ্ছিল। এটি একটি গুরুতর বিষয়। আমি রেকর্ডে বলছি, আমি যা বলছি তা ভুল হলে আমি পদত্যাগ করতে প্রস্তুত।
নিশিকান্তের আশঙ্কা কিষাণগঞ্জ, আরারিয়া, কাটিহার, মালদহ এবং মুর্শিদাবাদকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা উচিত, অন্যথায় হিন্দুরা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তাই এনআরসিও লাগু করো দরকার। তার জন্য অনুমতি অপরিহার্য হোক।
নিশিকান্ত দুবের মন্তব্যের বিরোধিতা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এতে বলা হয়েছে, বিজেপি সাংসদ একটি বিভাজনমূলক বিষয় উত্থাপন করেছেন।
তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সংসদে বলেন, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন- আমরা এনআরসি লাগু করতে দেব না। নিশিকান্ত দুবে হিন্দু-মুসলিম বিভাজন নিয়ে বক্তব্য সংসদের বিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার আর্জি জানান তিনি।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct