সমীর দাস, দিল্লি, আপনজন: বুধবার বাজেট ভাষণ চলাকালীন ক্ষোভে ফেটে পড়লেন বিরোধী দলের নেতারা। কংগ্রেস সাংসদ সোনিয়া গান্ধী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী, রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে থেকে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেসের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন, অখিলেশ যাদব, দোলা সেন, মহুয়া মৈত্র–সহ আরও অন্যান্য সাংসদরাও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। কেন্দ্রীয় বাজেটকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘কুর্সি বাঁচাও বাজেট’ অভিহিত করে বিরোধী পক্ষ ভেতরে ও বাইরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাদের অভিযোগ, এই বাজেটের মূল লক্ষ্য অন্ধ্র প্রদেশ ও বিহারকে খুশি রাখা, যাতে দুই শরিক তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ও জনতা দল সংযুক্ত (জেডিইউ) জোট না ছাড়ে। দুই দলের দুই মুখ্যমন্ত্রী যথাক্রমে চন্দ্রবাবু নাইডু ও নীতীশ কুমার সরকার থেকে সমর্থন তুলে না নেন।
এদিন মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ‘বহু মানুষের সঙ্গে বাজেটে অন্যায় হয়েছে। তাঁদের সকলকে ন্যায় পাইয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই আমাদের আজকের আন্দোলন। কেন্দ্রীয় বাজেটে শুধুই বঞ্চনার সাক্ষ্য। আর তারই প্রতিবাদে ফেটে পড়ল ইন্ডিয়া জোট। আজ, বুধবার সংসদের বাইরে বিক্ষোভে সামিল হন ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা। কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে–সহ অন্যান্যরা আজ ওয়াকআউট করেন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সকলেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে সমালোচনা গতকাল থেকেই শুরু করেন ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা। কারণ বাংলা–সহ একাধিক রাজ্যকে ‘বঞ্চনা’ করে শুধু জোটসঙ্গী বিহার এবং অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য বিরাট বরাদ্দ ঘোষণা করা হয়েছে। তাই এই বাজেটকে ‘সরকার বাঁচানোর বাজেট’ বলে কটাক্ষ করে বিরোধী দলগুলি। আজ সেই ক্ষোভ আছড়ে পড়ল সংসদের বাইরে। এদিকে বাজেট পেশের পর মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেই নয়াদিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি খাড়গের বাসভবনে বৈঠকে বসেন বিরোধীদের মিলিত মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’র নেতারা। সেই বৈঠকেই স্থির হয়, বুধবার সংসদ ভবন চত্বরে বিক্ষোভ দেখানো হবে। তার সঙ্গে আগামী ২৭ জুলাই যেসব রাজ্যে কংগ্রেস আছে সেসব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা যোগ দেবেন না নীতি আয়োগের বৈঠকে। রাতেই খবর আসে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নীতি আয়োগের বৈঠক। কারণ কেন্দ্রীয় বাজেটে রাজ্যকে বঞ্চনা করা হয়েছে। এই বাজেট নিয়ে সাংসদ রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বলেন, ‘এটা প্রকৃত অর্থেই কুর্সি বাঁচাও বাজেট।
বিরোধীদের অভিযোগ, বাজেট প্রস্তুতের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদির একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল দুই শরিককে সন্তুষ্ট রাখা, সংসদে যাঁদের মোট সদস্য ২৮। এ কারণে এই বাজেটে অন্য সব রাজ্য বঞ্চিত হয়েছে। এমনকি চলতি বছরের শেষে যে চার বিধানসভার ভোট রয়েছে, যেমন মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, ঝাড়খন্ড ও জম্মু–কাশ্মীর, উপেক্ষিত হয়েছে তারাও। এই বঞ্চনার প্রতিবাদে আগামী শনিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে কংগ্রেসের কোনো মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন না। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নীতি আয়োগের বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct