সুভাষ চন্দ্র দাশ, ক্যানিং, আপনজন: বছরে ৩৬৫ দিনের মধ্যে প্রায় ২০০ দিন অনাহারে কাটে।অন্যান্য দিন গুলো স্বহৃদয় ব্যক্তিদের দেওয়া চা-বিস্কুট কিংবা একবেলা এক মুঠো ভাত খেয়ে দিন কাটাতে হয় নিরুপায় হয়ে।আশ্রয়স্থল বলতে দিনের বেলায় কোন এক বাঁশের মাচার উপর। আর সন্ধ্যা হলেই কারোর গোয়াল ঘর কিংবা দোকানের বারান্দায় মশার কামড়ে রাত কাটাতে হয়। এমন ভাবেই চলছে প্রায় তিন বছরের অধিক সময়।বর্তমানে শারীরিক অক্ষমতার জন্য দুটি ক্রাচে ভর করে হাঁটতে হয়।সব থেকে ও বর্তমানে ৮০ উর্দ্ধ একাকী বৃদ্ধ একটু আশ্রয়ের জন্য চাতকের মতো অপেক্ষায়।
জানা গিয়েছে প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের উত্তর মোকামবেড়িয়া পঞ্চায়েতের মাতলা নদীর তীরে রয়েছে হাড়ভাঙী গ্রাম।গ্রামেই বসবাস করতেন সন্তোষ প্রধান নামে ওই ব্যক্তি।স্ত্রী লক্ষ্মী ও এক ছেলে কৃষ্ণ প্রধান কে নিয়ে সংসার।বিগত প্রায় ১০ বছর আগে স্ত্রী মারা যায়। একমাত্র ছেলে বিয়ে করেছিল। বৃদ্ধ বাবা কে ফুঁসলিয়ে সামান্য যেটুকু পৈতৃক সম্পত্তি ছিল সেটা বিক্রি করে স্ত্রী কে নিয়ে অন্যত্র বসবাস শুরু করে।বাবার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়।এমত অবস্থায় বৃদ্ধ সন্তোষ প্রধান কে বেশকিছু দিন তাঁর এক ভাইপো দেখাশোনা করতো।অবশেষে বৃদ্ধ’র শেষ সম্বল যা কিছু ছিল তা আত্মসাত করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় বলে অভিযোগ।এরপর একাকী বৃদ্ধ’র মেলেনি বার্ধক্য ভাতা কিংবা কোন সরকারী সুযোগ সুবিধা। এমত অবস্থায় বৃদ্ধ দিশেহারা হয়ে পড়েন।পাড়া প্রতিবেশীরা যখন যা দেয় তাই খেয়ে অর্ধাহারে কখনও বা অনাহারে কোন রকমে প্রাণে বেঁচে রয়েছেন। বৃদ্ধ সন্তোষের করজোড়ে আবেদন যদি কেউ একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়, তাহলে হয়তো যেকটা দিন বাঁচবো ভালো ভাবে বাঁচতে পারবো।আর পারছি না!যদি কোন বৃদ্ধাশ্রমেও ঠাঁই হয় সেই আবেদন জানিয়েছেন’।
বৃদ্ধ’র এমন মর্মান্তিক পরিনতি তে মর্মাহত এলাকার বাসিন্দারা।তাঁদের দাবী,আমাদেরও তো গরীবের সংসার,যতক্ষণ পারি ততক্ষণই বৃদ্ধকে সাহায্য সহযোগিতা করি।তবে কোন সংস্থা,সংগঠন কিংবা সরকারী ভাবে মৃত্য পথযাত্রী বৃদ্ধকে যদি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয় তাহলে হয়তো কষ্ট-যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে পারেন বৃদ্ধ সন্তোষ। বৃদ্ধ’র মতো চাতকের মতো অপেক্ষায় রয়েছে হাড়ভাঙী গ্রামের বাসিন্দারাও।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct