আপনজন ডেস্ক: ভারতকে হারাতে কেমন লাগে সেটি ভুলতেই বসেছিল জিম্বাবুইয়ানরা। আট বছর আগে ২০১৬ সালে হারারেতে রুদ্ধশ্বাস এক টি-টোয়েন্টিতে ২ রানে মহেন্দ্র সিং ধোনির ভারতকে হারিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। এরপর ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ছয় ম্যাচ খেলে প্রতিটিতেই হেরেছিল জিম্বাবুইয়ানরা। সেই জিম্বাবুয়ে আট বছর পর আজ আবার ভারতকে হারিয়েছে। হারারেতে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ১৩ রানে হারিয়েছে সিকান্দার রাজার দল।
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা অবশ্য দ্বিতীয় সারির দলই পাঠিয়েছে জিম্বাবুয়েতে। বিশ্বকাপজয়ী দলের কেউই ছিলেন না এই ম্যাচে। এই ম্যাচে ভারতের অধিনায়কত্ব শুবমান গিল ও ব্যাটসম্যান রিংকু সিং ভারতের বিশ্বকাপ দলের সঙ্গে ছিলেন ট্রাভেলিং রিজার্ভ হিসেবে।
এই তথ্য অবশ্য জিম্বাবুয়ের জয়ের গল্পে ফুটনোট হিসেবেই থাকবে। শেষ পর্যন্ত তো এটা ভারতের জাতীয় দলই। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে ওয়াশিংটন সুন্দর টেন্ডাই চাতারার বলে ব্লেসিং মুজারাবানির হাতে ক্যাচ তুলতেই ‘বিশ্বজয়ের’ উল্লাসে মাতে জিম্বাবুয়ের খেলোয়াড়েরা।
১১৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করা ভারত ৮৬ রানেই হারিয়ে ফেলে ৯ উইকেট। এরপর সুন্দরের ব্যাটেই রুদ্ধশ্বাস জয়ের স্বপ্ন দেখছিল ভারত। ১৭তম ওভারের শেষ বলে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে মুকেশ কুমারের বিদায়ের পর খলিল আহমেদ নিয়ে ১৬ রানের জুটি গড়েন সুন্দর। উইকেট আগলে রাখতে অবশ্য অনেকবারই সিঙ্গেল-ডাবলস নেননি এই অলরাউন্ডার। তাতে শেষ ওভারে গিয়ে ভারতের জয়ের সমীকরণটা দাঁড়ায় ১৬ রানের। চাতারার প্রথম চার বলে মাত্র ২ রানই নিতে পারেন সুন্দর। তাতে বড় অবদান ছিল জোনাথন ক্যাম্পবেলের দারুণ ফিল্ডিংয়ের। ডান পাশে অনেকটা দৌড়ে একটি চার বাঁচিয়ে দেন ক্যাম্পবেল। এরপর পঞ্চম বলে ক্যাচ তোলেন ৩৪ বলে ২৭ রান করা সুন্দর। প্রথম ওভারেই জিম্বাবুয়েকে প্রথম উইকেট এনে দেন ব্রায়ান বেনেট। এই পেসারের বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগে ক্যাচ তোলেন অভিষেক শর্মা। ভারতের হয়ে অভিষেকে ৪ বলে কোনো রান পাননি অভিষেক। পাওয়ার প্লেতেই ২৮ রান তুলতে ৪ উইকেট হারানো ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন গিল। ২৯ বলে ৫ চারে এই রান করার পর প্রতিপক্ষ অধিনায়ক সিকান্দার রাজার বলে বোল্ড হন ভারত অধিনায়ক। ১১তম ওভারে দলকে ৪৭ রানে রেখে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন গিল।
রাজা পরে ফিরিয়েছেন রবি বিষ্ণয় ও মুকেশ কুমারকেও। ২৫ রানে ৩ উইকেট নেওয়া রাজা এর আগে ব্যাট হাতেও করেন ১৭ রান। স্বল্প রানের ম্যাচে অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের জন্য ম্যাচসেরা জিম্বাবুয়ে অধিনায়কই।
এর আগে জিম্বাবুয়ে করে ৯ উইকেটে ১১৫ রান। ২৫ বলে সর্বোচ্চ ২৯ রান করে অপরাজিত ছিলেন সাতে নামা ক্লাইভ মাদান্দে। এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান মেরেছেন ৪টি চার। এ ছাড়া ২০-এর ঘরে রান করেছেন ওপেনার ওয়েসলি মাধেভেরে (২২ বলে ২১), ব্রায়ান বেনেট (১৫ বলে ২২), ডিওন মায়ার্স (২২ বলে ২৩)। ভারতের লেগ স্পিনার রবি বিষ্ণয় ১৩ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। ২৫ ম্যাচের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে বিষ্ণয়ের এটিই সেরা বোলিং। এর আগে ২০২২ সালে লডারহিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৬ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন ২৩ বছর বয়সী স্পিনার। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বিষ্ণয়ের ৪ উইকেট এই দুইবারই। এ ছাড়া ওয়াশিংটন সুন্দর ১১ রানে উইকেট নেন।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ আগামীকাল হারারেতেই।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct