আপনজন ডেস্ক: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোয় বারবার ভারতকে ফিরিয়ে আনার জন্য যশপ্রীত বুমরাকে আলাদা করে বাহবা দিয়েছেন বিরাট কোহলি। ভারতের সাবেক অধিনায়কের মতে, আরও অনেকের মতো তিনিও ভেবেছিলেন, এবারও ফাইনালটি হাত থেকে ছুটে যাচ্ছে তাঁদের। ভারতে ফিরে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কথাগুলো বলেন কোহলি। ঘূর্ণিঝড় বেরিলে ব্রিজটাউনে আটকে থাকার পর গতকাল ভারত ফিরে যায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসরের চ্যাম্পিয়ন দল। দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের পর কোহলিরা যান মুম্বাইয়ে। ছাদখোলা বাসে শহরের একটি অংশ প্রদক্ষিণের পর তাঁরা যান ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে।
সেখানে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় বুমরাকে আলাদা করে কৃতিত্ব দেন কোহলি। ৮ ইনিংসে মাত্র ৮.২৬ গড় ও ৪.১৭ ইকোনমি রেটে বোলিং করে বুমরা নেন ১৫ উইকেট। এ পেসারকে নিয়ে কোহলি বলেন, ‘এ স্টেডিয়ামের সবার মতো আমরাও একটা পর্যায়ে ভেবেছিলাম, এটি (ফাইনাল) আবারও ছুটে যাচ্ছে। তবে (শেষ) পাঁচ ওভারে যা ঘটেছে, সেটি সত্যিই বিশেষ কিছু।’
হাইনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলারের ব্যাটে ওই সময় বার্বাডোজের ফাইনালে ছুটছিল দক্ষিণ আফ্রিকা, শেষ ৫ ওভারে তাঁদের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩০ রান। ১৬তম ওভারে নিজের তৃতীয়টি করতে এসে বুমরা দেন মাত্র ৪ রান। পরের ওভারে হার্দিক পান্ডিয়ার বলে ক্লাসেন আউট হওয়ার পর ১৮তম ওভারে বুমরা দেন মাত্র ২, নেন মার্কো ইয়ানসেনের উইকেটও। অর্শদীপ সিং ও হার্দিক পান্ডিয়ার দারুণ বোলিংয়ে এরপর মুঠো থেকে প্রায় বেরিয়ে যাওয়া ম্যাচে দারুণ জয় পায় ভারত। তাতে কাটে কোনো বৈশ্বিক ট্রফি জয়ের ১১ বছরের অপেক্ষাও। কোহলি ওয়াংখেড়েতে বলেন, ‘আমি আসলে সবাইকে বলব, এ টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলোয় বারবার এবং বারবার আমাদের ফিরিয়ে আনার জন্য একজনকে বাহবা দিতে। (ফাইনালে) শেষ ৫ ওভারের দুটিতে বোলিং করে যা করেছে, সেটি দুর্দান্ত ছিল। যশপ্রীত বুমরার জন্য দয়া করে জোরে একটি হাততালি হোক।’
২০১১ সালে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামেই শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ট্রফি জিতেছিল ভারত। সে ম্যাচে খেলা কোহলি বলেছেন, তখন কেন সিনিয়র ক্রিকেটাররা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন, সেটি তিনি বোঝেননি। তবে এখন সেটি বুঝতে পারছেন। এবারের উদ্যাপনের দিনটিও তিনি ভুলবেন না বলে জানিয়েছেন কোহলি, ‘স্টেডিয়ামে যাঁরাই এসেছেন, সবাইকে অনেক ধন্যবাদ। আজ রাস্তায় যা দেখেছি, সেটি জীবনেও ভুলব না।’
২০১১ সালে না খেললেও ভারতের এবারের অধিনায়ক রোহিত শর্মা ২০০৭ সালে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন। তবে রোহিতকে এবারের ফাইনালের দিনের মতো আবেগপ্রবণ কখনো দেখেননি বলেও জানান কোহলি, ‘আমি জানি না, ইন্টারনেট (দুজনের ছবি দেখে) ভেঙে গেছে কি না, কিন্তু ১৫ বছর একসঙ্গে খেলার পর এই প্রথম আমি রোহিতকে মাঠে এতটা আবেগপ্রবণ দেখেছি। সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় আমি কাঁদছিলাম, সে কাঁদছিল। এরপর আমরা আলিঙ্গন করলাম। আমার কাছে ওই দিনের বিশেষ স্মৃতি হিসেবে থাকবে এটি।’
আর অধিনায়ক রোহিত বলেছেন, ভারতের দীর্ঘ অপেক্ষা ফুরোনোর পর তিনি স্বস্তি পেয়েছেন, ‘এ দেশে বিশ্বকাপ আনা আসলে আমাদের কাছে অনেক বড় ব্যাপার। যাঁরা সমর্থন দেন ও দেখেন, এটি তাঁদের জন্য। আর আমাদের সবার মতো শেষ ১১ বছরে তাঁরাও ট্রফি ফিরে আসার অপেক্ষা করছিলেন। অবশেষে এসেছে এটি। আমি অনেক খুশি ও নির্ভার এখন।’
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct