আপনজন ডেস্ক: শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে, ২০১৪ সালের টিচার্স এলিজিবিলিটি টেস্টের (টেট) স্ক্যান করা ওএমআর শিট যেখানে মজুত ছিল, সেগুলি খুঁজে বের করতে হবে।
মেসার্স এস বসু রায় অ্যান্ড কোং-এর বিদ্যমান সার্ভার, হার্ড ডিস্ক এবং টেট পরীক্ষার জন্য কিছু কাজ করা কম্পিউটার আউটসোর্স করা হয়েছিল কিনা তা নির্ধারণের জন্য এনআইসি, উইপ্রো, টিসিএস, ইনফোসিস ইত্যাদির মতো বিশেষজ্ঞ সরকারী বা বেসরকারি সংস্থার সহায়তা নেওয়ার জন্য আদালত সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে।
গত মঙ্গলবার প্রাথমিকের নিয়োগে ওএমআর শিট সংক্রান্ত মামলায় সিবিআইয়ের কাছে অরিজিনাল সার্ভার বা হার্ড ডিস্কের তথ্য চেয়েছিল হাই কোর্ট। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, ওএমআর শিট স্ক্যান করে কোথায়, কোন হার্ড ডিস্কে রাখা হয়েছিল, শুক্রবার আদালতের কাছে সেই বিষয়ে তথ্য জমা দিতে হবে সিবিআইকে। কিন্তু শুক্রবার সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়, তারা ওই তথ্য জমা দিতে পারছে না।
টেট ২০১৪-তে অনিয়মের অভিযোগে র শুনানিতে এদিন কলকাতা হাইকোর্টের
বিচারপতি রাজশেখর মান্থা সিবিআইকে নির্দেশ দেন, স্ক্যান করা ওএমআর শিট যেখানে মজুত করা হয়েছিল, সেখানে আসল/ধ্বংস হয়ে যাওয়া সার্ভার/ডিস্ক/মাধ্যমের অবস্থান খুঁজে বের করতে হবে। আদালত বলেছে যে মেসার্স এস বসু রায় অ্যান্ড কোংয়ের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ডব্লিউবিবিপিই-র যে কোনও কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে এটি অর্জন করা যেতে পারে।
আদালত অতিরিক্ত প্রশ্নের সমাধান করার জন্য সফ্টওয়্যার এবং আইটি বিশেষজ্ঞদের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে, সিবিআইকে এনআইসি, উইপ্রো, টিসিএস, ইনফোসিস ইত্যাদির মতো সংস্থাগুলিকে ওএমআর শিট সম্পর্কিত ডিজিটাল পদচিহ্নের অস্তিত্ব সম্পর্কে উত্তর খুঁজে বের করার নির্দেশ দেয়।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, একবার ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট তৈরি হয়ে গেলে তা পুনরুদ্ধার করা যায়। আদালত আদেশ দিয়েছে যে এই বিশেষজ্ঞ সংস্থাগুলির দ্বারা ব্যয় করা ব্যয় সিবিআইয়ের দাবি অনুসারে ডাব্লুবিবিপিই বহন করবে।
বিচারপতি মান্থা আরও নির্দেশ দিয়েছেন যে এই বিশেষজ্ঞদের সিবিআই এবং পরে আদালতকে জানাতে হবে যে ওএমআর শিট থেকে প্রাপ্ত মূল তথ্যে কোনও কারচুপি বা পরিবর্তন হয়েছে কিনা, এই জাতীয় পরিবর্তনের তারিখ এবং প্রকৃতির বিবরণ সহ।
আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে বিষয়টি ২৩ শে আগস্ট আবার শুনানর জন্য আসবে।
সিবিআই সূত্রে খবর, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট সংস্থা এস বসু রায় অ্যান্ড কোং-কে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত কাজ আউটসোর্স করে ডেটা প্রসেসিং এবং কম্পিউটার কনসালটেন্সির ভূমিকা নিয়েছিল।
সিবিআইয়ের উপর কলকাতা হাইকার্টের নির্দশ এবং ওএমআর শিট খুঁজে না পাওাঁ প্রসঙ্গে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, সিবিআই তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছে, ওএমআর শিটের ওরিজিনাল ডিস্ক নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। আদালত জানতে চায়, এভাবে ডিস্ক নষ্ট করা যায় কি? নষ্ট করা গেলেও তথ্য উদ্ধার করা যায় কি না। আদালতের ধারণা, তথ্য উদ্ধার করা যায়। ডিজিটাল রেকর্ড এত সহজে ধ্বংস করা যায় না। সে ব্যাপারে সিবিআইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে তাঁরা যে কোনও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।” প্রসঙ্গত ২০১৪ সালে প্রাথমিকে নিয়োগের পরীক্ষায় আসল ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছে বলে হাইকোর্টে আগেই জানিয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। তাদের বক্তব্য ছিল, আসল প্রতিলিপি নষ্ট করা হলেও পরিবর্তে তার ডিজিটাইজড তথ্য রয়েছে। পরীক্ষার্থীদের ওএমআর শিট বা উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি নামের একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তারাই ওএমআর শিট স্ক্যান করেছে। এখন দেখার সিবিআই মূল ওএমআর শিটের সন্ধান পায় কিনা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct