আপনজন ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছেন সিনেটর ফাতিমা পেম্যান। ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার গ্রিন পার্টির প্রস্তাবকে সমর্থন করায় তাকে দল থেকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর তিনি দল থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি কোনও যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ থেকে পালিয়ে আসা উদ্বাস্তু নই যে নিরাপরাধ মানুষের উপর নৃশংসতা দেখে চুপ থাকব। আমি এ দেশের নাগরিক। তাই আমি আমার মত প্রকাশে স্বাধীন।
ফাতিমা বলেন, লেবার পার্টির এমন একটি বিষয় নিয়ে দ্বিমত পোষণ করছি, যে বিষয়ে আমি কোনোভাবেই আপস করতে পারি না।
ফিলিস্তিনকে সমর্থন করার জন্য তিনি দলের সদস্যদের থেকে আলাদা হয়ে গেছেন বলেও অভিযোগ করেন।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ান লেবার পার্টির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দলের নীতিগত অবস্থানকে যারা দুর্বল করে দেয়, তাদের ‘কঠোর শাস্তি’ পেতে হয়। দলীয় নীতি ভঙ্গ করার জন্যই ফাতেমা পেম্যানকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে।
ফাতেমার পদত্যাগের পর ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এক বিবৃতিতে তাকে তার নেতৃত্বের জন্য ধন্যবাদ জানান। তবে পেম্যানকে পদত্যাগ করার জন্য ভয়-ভীতি দেখানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
এদিকে ফিলিস্তিন বিষয়ক ভোটের আগে তিনি সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার জন্য একটি মতামত নিবন্ধ লেখেন। সেখানে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতিকে নৈতিক বাধ্যতামূলক কাজ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
পেম্যান যখন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে মত দিয়ে পদমর্যাদা হারিয়েছেন, তখন তিনি একটি জাতীয় প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হয়েছেন, যারা ফিলিস্তিনকে অগ্রাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে।
পেম্যান বলেন, আমি পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ানদের সাথে বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ করেছি। তবে তারা আমাকে হাল না ছাড়তে বলেছে। আমি লেবার পার্টির মূল মূল্যবোধ নিয়ে কাজ করছি যা সমতা, ন্যায়বিচার, নায্যতা এবং কণ্ঠহীন ও নিপীড়িতদের সমর্থনে কাজ করে থাকে।
অবশ্য তিনি অস্ট্রেলিয়ান সিনেটে স্বতন্ত্র হিসেবে কাজ চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে পেম্যান অস্ট্রেলিয়ার প্রথম হিজাব-পরা সিনেটর হিসেবে পার্লামেন্টে বসেন। ফিলিস্তিনের স্বীকৃতির পক্ষে সমর্থন যোগাতে লেবার পার্টির একমাত্র সদস্য পেম্যান।
পদত্যাগের পর স্বাধীন সিনেটর হিসেবে ‘ক্রসবেঞ্চে’ যোগ দেবেন ফাতেমা। ক্রসবেঞ্চে স্বতন্ত্র সিনেটর এবং ছোট দলগুলোর সদস্যরা বসে থাকেন। ক্রসবেঞ্চ সিনেটর এবং সদস্যরা সংসদের নির্বাচিত সদস্য ও তাদের রাজ্য বা অঞ্চল কিংবা ভোটারদের প্রতিনিধিত্ব করে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct