সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: বিলুপ্তের পথে মল্ল রাজাদের ঐতিহাসিক বাঁধ, বাঁধ দখল করে হয়েছে বড় বড় চাষের জমি, কোথাও বা কংক্রিটের তৈরি বাড়ি, কোথাও আবার দখল নিয়েছে কচুরিপানায়, সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে মল্ল রাজাদের ইতিহাস ।
মন্দিরন নগরী বিষ্ণুপুর এবং আশেপাশের কৃষকদের শেচ কাজের জন্য এবং জল সমস্যার সমাধানের জন্য তৎকালীন সময়ে মল্ল রাজারা একের পর এক মোট সাতটি বাঁধ অর্থাৎ জলাশয় তৈরি করেছিলেন বিষ্ণুপুরে। বাঁধ গুলির নাম রাখা হয়েছিল লালবাঁধ, যমুনাবাঁধ, পোকাবাঁধ, কালিন্দীবাঁধ, গাতাতবাঁধ, শ্যামবাঁধ, কৃষ্ণ বাঁধ । প্রত্যেকটা বাঁধই বৃহৎ আকার । বর্তমানে সরকারের পক্ষ থেকে লাল বাঁধ সংস্কার করা হলেও বাদবাকি বাঁধ গুলি নিজের আয়তন হারিয়েছে। কিছু জমি মাফিয়া, কিছু প্রোমোটার, কিছু অসাধু ব্যক্তি ও কচুরিপানার দখলে অধিকাংশ বাঁধই হয়েছে অর্ধেক। কোন বাঁধের পাশে তৈরি হয়েছে বিঘার পর বিঘা চাষের জমি। কোথাও বা হয়েছে বড় বড় ইটের বাড়ি। কোথাও আবার বাঁধকে বুজিয়ে করা হয়েছে ছোট ছোট পুকুর। অসাধুদের দখল হওয়ার পর যেটুকু বাঁধের অংশ রয়েছে তা ধুকছে সংস্কারের অভাবে। অবশিষ্ট বাঁধগুলি দখল করেছে কচুরিপানায়। ফলে আগের মত ব্যবহারে উপযোগী নয় এই বাঁধগুলি। সমস্যায় স্থানীয় বাসিন্দা এবং কৃষকরা। প্রত্যেকের দাবি সরকার বাঁধ গুলির দিকে নজর দিক এবং তার সংস্কার করুক। বাঁধগুলি যেন পুনঃঅবস্থায় ফিরে আসে, তার ব্যবস্থা করুক সরকার। কিছু কিছু স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি সরকার লাল বাঁধ সংস্কার করেছে, লাল বাঁধের তীরে পর্যটন কেন্দ্র করে উঠেছে। এইভাবে প্রত্যেকটি বাঁধ নিজেদের হস্তক্ষেপ করে সংস্কার করলে বিষ্ণুপুরের পর্যটন মানচিত্রের প্রসার ঘটবে ।
বিষ্ণুপুরের মহকুমা শাসক প্রসেনজিৎ ঘোষ জানান বিষ্ণুপুর শহর জুড়ে ট্রপোগ্রাফিক্যাল সার্ভে শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করার কাজ। ভূমি সংস্কার দপ্তরের কর্মীরা যাচ্ছে এবং সরকারি সম্পত্তির উপর বোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই লাল বাঁধের যা কিছু সমস্যা ছিল সেই সমস্যার সমাধান করে তা সংস্কার করা হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct