আপনজন ডেস্ক: ইউরোয় কিলিয়ান এমবাপ্পের গোলসংখ্যার চেয়ে তাঁর মাস্কসংখ্যা বেশি। প্রথমেই জানিয়ে রাখা ভালো, ইউরোয় এখন পর্যন্ত এমবাপ্পে গোল করেছেন ১টি। কিন্তু মাস্ক পরে নেমেছেন একাধিকবার। শুধু তা-ই নয়, ফ্রান্স তারকাকে এরই মধ্যে মাস্ক পাল্টাতেও হয়েছে। অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে ফ্রান্সের প্রথম ম্যাচে নাক ভেঙে যাওয়ায় বিশেষ একধরনের মাস্ক ব্যবহার করতে বাধ্য হন এমবাপ্পে। মাস্ক পরে গ্রুপ পর্বে ফ্রান্সের বাকি ম্যাচগুলো খেলেছেন এই ফরোয়ার্ড। তবে এই মাস্ক নিয়ে এমবাপ্পের অস্বস্তির কথা জানা গিয়েছিল আগেই। চোখের পাশের (সাইডের) কোনো কিছু দেখতে তাঁর অসুবিধা হয়। ডুসেলডর্ফে গত সোমবার ইউরোর শেষ ষোলোয় বেলজিয়ামকে ১-০ গোলে হারিয়ে ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে ফ্রান্স। এ ম্যাচে এ নিয়ে ৩ নম্বর মাস্ক পরে খেললেন এমবাপ্পে। অর্থাৎ গ্রুপ পর্বে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে নাক ভেঙে যাওয়ার পর দুটি আলাদা মাস্ক পরে খেলেছেন এমবাপ্পে। এরপর শেষ ষোলোর ম্যাচেও পাল্টেছেন মাস্ক—সেটি ছিল তাঁর তৃতীয় মাস্ক। এ ম্যাচে পাঁচবার গোল করার মতো অবস্থানে থেকেও গোল পাননি এমবাপ্পে। একের পর এক মাস্ক পাল্টালেও স্বস্তি পাচ্ছেন না ফ্রান্স অধিনায়ক। মাস্ক নিয়ে এমবাপ্পের সমস্যার কথা বলেছেন ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশম, ‘ঘামের ব্যাপারটি মাথায় রাখতে হবে। ঘাম তার চোখে যেতেই পারে। সে এটার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেও দৃষ্টিশক্তিতে সমস্যা হচ্ছে। সামনের কোনো কিছু দেখতে অসুবিধা হচ্ছে না। তবে পার্শ্বীয় (চোখের দুই পাশে) দৃষ্টিতে কোনো কিছু দেরিতে দেখছে।’ এমবাপ্পে নিজেও এই মাস্ক পরাকে ‘হরর’ বা বীভৎস কোনো কিছুর সঙ্গে তুলনা করে পোল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে বলেছিলেন, ‘আমি লোকজনকে দেখছি ঠিকই, তবে মনে হচ্ছে না যে আমি খেলছি।’ নাক ভেঙে যাওয়ার পর শুরুতে এমবাপ্পেকে ফ্রান্সের পতাকার রঙে বানানো একটি মাস্ক দেওয়া হয়। কিন্তু উয়েফা তাতে বাধা দেয়। নিয়মের বরাত দিয়ে সংস্থাটি রায় দেয়, প্রতিরক্ষামূলক যেকোনো কিছু এক রঙের হতে হবে। এমবাপ্পে এরপর পোল্যান্ড ম্যাচে কালো রঙের মাস্ক পরে মাঠে নেমেছিলেন। বেলজিয়ামের বিপক্ষে শেষ ষোলোর ম্যাচেও মাস্ক পাল্টেছেন এমবাপ্পে। সেই মাস্কের মুখের সামনের অংশ একটু অন্যভাবে কাটা হয়েছে এবং শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে একটু বেশি জায়গাও রাখা হয়। পেছনে বাঁধার জন্য ফিতা ছিল একটি, আগের মাস্কে ছিল দুটি ফিতা।
কিন্তু মাস্ক পাল্টেও গোল পাননি এমবাপ্পে। পোল্যান্ডের বিপক্ষে পেনাল্টি থেকে করা গোলটাই তাঁর ইউরো ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত একমাত্র গোল। এখন পর্যন্ত ফ্রান্সের খেলোয়াড়দের করা গোলও ওই ১টিই, বাকি ২টি এসেছে প্রতিপক্ষের আত্মঘাতী গোল থেকে।
এমবাপ্পেকে যদি আগামী মৌসুমেও মাস্ক পরে খেলতে হয়, তবে ঝামেলায় পড়বে রিয়াল মাদ্রিদ। গত মাসেই মাদ্রিদের ক্লাবে যোগ দেওয়া চূড়ান্ত করেন এমবাপ্পে। তবে তার আগে ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালের বিপক্ষে পরীক্ষা দিতে হবে এমবাপ্পেকে। শনিবার কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হবে ফ্রান্স-পর্তুগাল। এমবাপ্পের ইউরো ক্যারিয়ারে এটাই হবে প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল। এর আগে ২০২১ ইউরোর শেষ ষোলোয় সুইজারল্যান্ডের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল ফ্রান্স।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct