ইসহাক মাদানি, আপনজন: ৪০ হিজরী মোতাবেক ৬৬১ খৃষ্টাব্দের কথা হজরত আলি তখন মুসলিম জাহানের খলিফা।
সন্ত্রাসী খারেজী গ্রুপের এক ব্যক্তি (যার নাম আব্দুর রহমান বিন মুলজেম) ফযর নামাযের সময় হজরত আলির মাথায় বিষ মাখানো তলওয়ার মারে। অপরাধী সংগে সংগে ধরা পড়ে। তৎক্ষনাৎ মুসলিমগণ উত্তেজিত হয়ে তাকে হত্যা করতে উদ্যোত হয়। এমতাবস্থায় মৃত্যুর দ্বারে দাঁড়িয়ে হজরত আলি জনতার উদ্দেশ্যে বলেন-“ আমি এখনো জিন্দা আছি, আমার জীবিত অবস্থায় হত্যা তথা কিসাস হতে পারে না, আমার মৃত্যুর পর বিচার মূলে ওর সাজা হবে, এখন নয়। ”
এরপর তিনি দুদিন বেঁচে ছিলেন। তাঁর মৃত্যান্তে হজরত হাসান খলিফা নির্বাচিত হন এবং বিচার মূলে আব্দুর রহমান বিন মুলজেম এর মৃত্যুদন্ড হয়। লক্ষ্যণীয় বিষয়- মাথার আঘাতে মৃত্যু অবধারিত জেনেও হজরত আলি খলিফা হিসাবে নির্দেশ দেন মৃত্যুর পূর্বে অপরাধীকে মৃত্যুদন্ড নয় আর তাঁর সে হুকুম কড়ায় গুন্ডায় পালন করা হয়। তাঁর মৃত্যুর পর পরবর্তী খলিফার হুকুমে বিচার মূলে তাঁর মৃত্যুদন্ড কার্যকরী করা হয়। এ হল ইসলামী আইন ব্যবস্থা। ফলে ইসলামী আইন মোতাবেক আদালতের বাইরে ক্ষুদ্র থেকে বৃহত কোনো প্রকার অপরাধের সায়েস্তা করার ইখতিয়ার আমজনতার নেই। যদি কেউ করে তবে ইখতিয়ার বহির্ভুত কর্মের জন্য সে অপরাধী। অপরাধের বিচার আদালত করবে।
প্রত্যেক দেশের আইন বহি তথা constitution আছে। সে দেশের প্রজা অপরাধ করলে কোর্ট কাচারি আছে প্রশাসন আছে। অপরাধের বিচার কোর্ট মাধ্যমে হবে। জনতা অপরাধের বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়ে সহযোগীতা করতে পারে। উপযুক্ত বিচারের দাবী জানাতে পারে তার বেশী নয়। যে রকমই অপরাধ হোক — যেনা হোক বা ব্যভিচার —অপরাধী ভেবে কেউ তাকে মারবে পিটবে আর জনতা গোল হয়ে দাঁড়িয়ে দেখবে এটা অপরাধ। আবার চুরি হোক বা ডাকাতি, কেউ কাউকে চোর বললেই লাঠি সোটা নিয়ে পিটিয়ে মারতে মারতে মেরেই ফেলবে এটা অপরাধ। ট্রেনে হোক বা জনপদে হোক বিনা বিচারে মানুষ মানুষকে মারবে এর চাইতে বন্য আচরণ আর কি হতে পারে ?
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct