সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: বাঁকুড়া রেলের আন্ডারপাস তৈরী নিয়ে জটিলতা, রেলের তরফে নোটিশ দিলেও উচ্ছেদে না বস্তির মানুষের, আন্ডারপাসের পরিকল্পনা বাস্তব সম্মত নয় দাবী করে আন্দোলনে এলাকাবাসী, ঠিকা সংস্থার কর্মীদের ঘিরে বিক্ষোভ ।
রেলের আন্ডার পাস তৈরী নিয়ে ফের জটিলতা তৈরী হল বাঁকুড়ায়। বাঁকুড়ার ভাদুল রেলগেটের কাছে এই আন্ডারপাস তৈরীর জন্য ইতিমধ্যেই স্থানীয় একটি বস্তি উচ্ছেদের নোটিশ দিয়েছে রেল। এই উচ্ছেদ নিয়ে যেমন জটিলতা তৈরী হয়েছে তেমনই আন্ডারপাস তৈরীর পরিকল্পনা নিয়েও প্রশ্ন তুলে জোরদার আন্দোলনে নেমেছেন এলাকাবাসী। আজ রেলের বরাত পাওয়া ঠিকা সংস্থা এলাকায় আন্ডারপাস তৈরীর কাজ করতে গেলে ঠিকা সংস্থার কর্মীদের ঘিরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন আন্দোলনকারীরা।
বাঁকুড়া শহর লাগোয়া ভাদুল এলাকায় দক্ষিণপূর্ব রেলের বিডিআর রেলপথকে আড়াআড়ি ভাবে ছেদ করেছে ঐতিহ্যবাহী ও সুপ্রাচীন অহল্যাবাঈ সড়ক। এতদিন ভাদুলের কাছে আনম্যানড লেভেল ক্রসিং দিয়েই চলত এই সড়কে যাতায়াত। কিন্তু সম্প্রতি এই লেভেল ক্রসিং তুলে দিয়ে সেখানে আন্ডারপাস তৈরীর সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। আর তাতেই গোল বাধে। এলাকাবাসীর দাবী অহল্যাবাঈ রাস্তার লেভেল ক্রসিং থেকে প্রায় ৫০ মিটার দূর দিয়ে ঘুরিয়ে তৈরী করা হচ্ছে আন্ডারপাস। এই আন্ডারপাস তৈরীর জন্য স্থানীয় একটি বস্তিকে ইতিমধ্যেই উচ্ছেদের নোটিশ দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। বর্ষার মুখে এভাবে উচ্ছেদের প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই জোরদার আন্দোলনে নেমেছেন স্থানীয় বস্তির মানুষ। গত ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বসবাস করা ওই বস্তির মানুষেরা বর্ষার মুখে কোনোভাবেই তাঁদের বাড়ি ভাঙতে দেবেন না বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন। অন্যদিকে রেলের অপর পাড়ে থাকা প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ টি গ্রামের মানুষও আন্ডারপাস তৈরীর পরিকল্পনা বদলের দাবীতে শুরু করেছেন আন্দোলন। তাঁদের দাবী রেল যেভাবে ঘুরপথে আন্ডারপাস তৈরীর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে আগামীদিনে রেলের অপর পাড়ে থাকা ৩০ - ৩৫ টি গ্রামে পৌঁছাতে পারবে না দমকল সহ অন্যান্য বড় গাড়ি। আর তার ফলে গ্রামগুলি বঞ্চিত হবে বিভিন্ন জরুরী পরিসেবা থেকে। আন্দোলনকারী স্থানীয়দের দাবী যে জায়গায় লেভেল ক্রসিং রয়েছে সেখানেই আন্ডারপাস তৈরী করা হলে একদিকে যেমন বস্তি উচ্ছেদের প্রয়োজন হবে না তেমনই রেল পাড়ের গ্রামগুলিও দমকল ও অন্যান্য জরুরী পরিসেবা থেকে বঞ্চিত হবে না।
রেল কর্তৃপক্ষ দ্রুত পরিকল্পনা বদল না করলে আগামীদিনে আরো বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্থানীয় ৩০ -৩৫ টি গ্রামের মানুষ। বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য দিতে চায়নি বরাত পাওয়া ঠিকা সংস্থার কর্মীরা। তাঁদের দাবী পরিকল্পনা বদলের বিষয়টি রেলের এক্তিয়ারভূক্ত তাই তাঁদের কিছু করণীয় নেই।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct