সাইফুল লস্কর, বারুইপুর, আপনজন: এরাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের এর অধীন সমস্ত হাই মাদ্রাসা, জুনিয়র হাই মাদ্রাসা, সিনিয়র মাদ্রাসাগুলি পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষক পর্ষদ ও ডিরেক্টর অফ মাদ্রাসা এডুকেশন বা ডিএমই দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। কিন্তুস্কুলগুলির ন্যায় মাদ্রাসারগুলির জন্যও একই বিদ্যালয় পরিদর্শক বা ডি.আই এর দফতরের মাধ্যমেই সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির বেতন, ভ্যাকেন্সি অনুমোদন, এপ্রুভাল, শিক্ষকদের রিটেনসন সহ অন্যান্য কাজকর্ম সম্পন্ন হয়। মাদ্রাসার বেতন ও এরিয়ার সংক্রান্ত অর্থ বিকাশ ভবনের ডি.এম.ই কর্তৃক বরাদ্দ হয় এবং জেলার ডি.আই কিংবা এ.ডি.আই অফিসের মাধ্যমেই তার সদ্ব্যবহার হয়। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জেলার বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষকদের অভিযোগ হল ডি.এম.ই কর্তৃক অর্থ এরিয়ার বাবদ মেটানোর জন্য গত আর্থিক বছর এবং এমনকি এবছরের এপ্রিল মাসে ডি.আই অফিসে টাকা পাঠানো হয়েছে। কিন্ত ডি.আই অফিসের গাফিলতি ও অসহযোগিতার কারনে শিক্ষকরা তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এমনকি শিক্ষকদের একাংশ অভিযোগ করেছেন যে তাদের এরিয়ার এর টাকা পাওয়ার জন্য অফিসের কয়েকজন কর্মী অনৈতিক ভাবে অর্থ ( ঘুষ) দাবি করছেন। টাকার জন্য ফাইল আটকে রাখার বিষয়টি ডি.আই এর নজরে আনার পর ডি.আই . জয়ন্তী জানা কিছু কিছু পদক্ষেপ নিলেও শিক্ষকদের লস্ট ইনক্রিমেন্ট সহ বেশ কতকগুলি বিষয়ের এরিয়ার এর টাকা আজও পান নি শিক্ষকরা। সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক মোজাম্মেল হক এর কাছে বারাংবার আবেদন নিবেদন করেও কোনো সুরাহা হচ্ছে না বলে আক্ষেপ করেছেন শিক্ষকরা। মাদ্রাসার জন্য নিযুক্ত ডিলিং করণিক তন্ময় বাবু সঠিক সময়ে সঠিক ভাবে ফাইল প্রস্তুত করছেন না বলে অভিযোগ মাদ্রাসার শিক্ষকদের ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন করার উপর জোর দিলেও কিছু কিছু কর্মীর গাফিলতির কারণে কাজের গতি ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন শিক্ষকদের অন্যান্য কয়েকটি সংগঠন। শিক্ষা দফতরের নিয়ম মেনেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রশিক্ষণ না নিলে বার্ষিক বেতন বা ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। মাদ্রাসা শিক্ষকদের একাংশ জানান, শিক্ষকদের চাকরির নিশ্চিয়তা ও বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি অব্যাহত রাখার জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ও.ডি.এলপদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। স্কুলের শিক্ষকদের ন্যায় মাদ্রাসার শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হওয়ার আগেই যাদের ইনক্রিমেন্ট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তাদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হওয়ার পর রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে লস্ট ইনক্রিমেন্ট সংক্রান্ত অর্থ এরিয়ার বাবদ মেটানোর বন্দোবস্ত করা হয় বেশ কয়েক বার । জেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসের এর মাধ্যমে শিক্ষকদের ইনক্রিমেন্ট সংক্রান্ত নথি পত্র সহ অর্থের জন্য রিকুইজিশন জমা দিতে হয় ডি.এম.ই দফতরে । অভিযোগ এই ক্ষেত্রেও পিছিয়ে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা । নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রিকুইজিশন জমা না দেওয়ার জন্য শিক্ষকরা তাদের এরিয়ার বাবদ প্রাপ্ত টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। একাধিক বার নথি জমা দেওয়া সত্ত্বেও বার বার একই নথি চাওয়া হচ্ছে ।আবার গতবছর এরিয়ার বাবদ সমূহ টাকা সঠিক সময়ের মধ্যেই সদ্ব্যবহার না হওয়ার কারনে টাকা ফেরত চলে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার মাদ্রাসার শিক্ষকদের ক্ষেত্রে । এবারেও সেই অবস্থার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় তার জন্য শিক্ষকরা ডি.আই অফিসে দৌড়াদৌড়ি করছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct