আপনজন ডেস্ক: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যায়, কিন্তু ভারতের সামনে এই একটা প্রশ্ন থেকেই যায়। ২০০৭ সালে অনভিজ্ঞ এক দল নিয়েই প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাওয়া দলটি এরপর টানা ৭টি বিশ্বকাপ থেকে ফিরেছে খালি হাতে। অথচ প্রতিবারই শুরু করেছে অন্যতম ফেবারিট হিসেবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও তাই ভারতের জন্য পুরোনো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ারই মঞ্চ।সেই উত্তর মেলাতে ভারত ভরসা রেখেছে অভিজ্ঞদের ওপরই। ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের কাছে সেমিফাইনালে হারের পর ২০২৩ সালে ভারতের হয়ে কোনো টি-টোয়েন্টি খেলেননি রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। রোহিতের অনুপস্থিতিতে ভারতকে বেশির ভাগ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া। পান্ডিয়ার নেতৃত্বে ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তরুণদের ওপর ভরসা রাখবে ভারত—এমন একটা গুঞ্জন চলেছে অনেক দিন। তবে শেষ পর্যন্ত ভারত ভরসা রেখেছে সেই রোহিত-কোহলিতেই।
শুবমান গিল নন, রোহিতের ওপেনিং সঙ্গী হিসেবে বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেয়েছেন যশস্বী জয়সোয়াল। ওপেনিং জুটিতে রোহিতের সঙ্গে ডানহাতি ও বাঁহাতি সমন্বয় করতেই সম্ভবত জয়সোয়ালকে নেওয়া হয়েছে বিশ্বকাপ দলে। ভারতের টপ অর্ডারের অন্য ব্যাটসম্যান যথারীতি কোহলি। চার নম্বরে আছেন আইসিসি টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যানদেরা র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানে থাকা সূর্যকুমার যাদব।বাড়তি কৌতূহল থাকবে ঋষভ পন্তকে নিয়ে। গাড়ি দুর্ঘটনায় ১৫ মাস মাঠের বাইরে থাকা পন্ত আইপিএলে ফিরে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন। সেই পারফরম্যান্সই জায়গা করে দিয়েছে বিশ্বকাপ দলে। দ্বিতীয় উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান হিসেবে লোকেশ রাহুলকে পেছনে ফেলে দলে ঢুকেছেন সঞ্জু স্যামসন। মিডল অর্ডারে আরও আছেন অলরাউন্ডার শিবম দুবে ও হার্দিক পান্ডিয়া। তাঁদের প্রত্যেকেরই নিজের দিনে ভয়ংকর হয়ে ওঠার ক্ষমতা আছে। তবে পান্ডিয়ার ফর্মে না থাকা নিয়ে একটু দুশ্চিন্তা থাকাই স্বাভাবিক। এবারের আইপিএলে নিজে তো পারফর্ম করতে পারেননি, মুম্বাই ইন্ডিয়ানসকেও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারেননি। পুরো আইপিএলে হয়েছেন ট্রলের শিকার।সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা না পাওয়া স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহালকে ফেরানো হয়েছে বিশ্বকাপ দলে। মূলত বিশ্বকাপে স্পিন–সহায়ক উইকেট হতে পারে—সেটা মাথায় রেখেই একজন বাড়তি স্পিনার নিয়েছে ভারত। স্কোয়াডে আছেন আরও তিন স্পিনার—বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার কুলদীপ যাদব, বাঁহাতি স্পিন অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা ও অক্ষর প্যাটেল। সব দিক থেকেই স্পিন আক্রমণ বৈচিত্র্যপূর্ণ। সঙ্গে জাদেজা ও অক্ষর অলরাউন্ডার হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের ভরসার জায়গা।তবে ভারতকে ভোগাতে পারে তাদের পেস আক্রমণ। স্কোয়াডে বিশেষজ্ঞ পেসার তিনজন—যশপ্রীত বুমরা, মোহাম্মদ সিরাজ ও অর্শদীপ সিং। সিম বোলিংয়ে তাঁদের সঙ্গ দেবেন দুবে ও পান্ডিয়া। অন্য পেসাররা বুমরাকে কতটা সঙ্গ দিতে পারবেন, সেটা একটা প্রশ্ন।এমন প্রশ্ন সব দলকে নিয়েই করা যায়, যা পাশে সরিয়ে রাখলে ভারত ভারসাম্যপূর্ণ একটি দল। তবে দিন শেষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পারফর্ম করাই বড় কথা, যেটা ভারত বিশ্বকাপের পর বিশ্বকাপ ধরে করতে পারছে না। তাই ঘুরেফিরে সে প্রশ্নই উঠছে, ভারত এবার পারবে তো!
স্কোয়াড
রোহিত শর্মা
অধিনায়ক, ব্যাটসম্যান
বিরাট কোহলি
ব্যাটসম্যান
হার্দিক পান্ডিয়া
অলরাউন্ডার
যশস্বী জয়সোয়াল
ব্যাটসম্যান
সূর্যকুমার যাদব
ব্যাটসম্যান
ঋষভ পন্ত
উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান
সঞ্জু স্যামসন
উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান
শিবম দুবে
অলরাউন্ডার
রবীন্দ্র জাদেজা
অলরাউন্ডার
অক্ষর প্যাটেল
বাঁহাতি স্পিনার
কুলদীপ যাদব
বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার
যুজবেন্দ্র চাহাল
লেগ স্পিনার
অর্শদীপ সিং
বাঁহাতি পেসার
যশপ্রীত বুমরা
পেসার
মোহাম্মদ সিরাজ
পেসার