আপনজন ডেস্ক: রিয়াল মাদ্রিদ ২-০ বরুসিয়া ডর্টমুন্ডধারাটা অবশেষে ভাঙল।চ্যাম্পিয়নস লিগে সর্বশেষ চারটি ফাইনালেই স্কোরলাইন ছিল ১-০। লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে সেই ধারা ভেঙে স্কোরলাইন হলো ২-০। জয়ী দলের নামে অবশ্য একটি ধারা ঠিকই থাকল। ইউরোপের এই শীর্ষ ক্লাব প্রতিযোগিতায় ১৯৮১ সালের পর ফাইনালে কখনো হারেনি রিয়াল মাদ্রিদ। এবারও ধারাটা বদলায়নি।ওয়েম্বলিতে ভর করেছিল অদ্ভুত এক দৃশ্য। মার্কো রয়েসের চোখ দুটো টলমল। ভালোবাসার ক্লাবের হয়ে শেষ ম্যাচেও ১১ বছর আগের ভাগ্যটা তাঁর পাল্টায়নি। সেই ওয়েম্বলির ফাইনাল এবং আবারও হার! টনি ক্রুসের চোখ দুটোও টলমল। কিন্তু মুখে হাসি। রিয়ালের সমর্থকদের করতালিতে ভিজে শেষবারের মতো বিদায় নিচ্ছিলেন। তাঁরা দুজনেই কিংবদন্তি। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের স্কোরলাইন ক্রুস ও রয়েসকে উপহার দিয়েছে ভিন্ন ভিন্ন অনুভূতি। না, ১৯৯৭ ফেরাতে পারেনি ডর্টমুন্ড। ওয়েম্বলিতে তাঁদের জন্য ফিরেছে ২০১৩ ফাইনালের দুঃস্বপ্নই। বিশেষজ্ঞদের কাছে সেটাই ছিল প্রত্যাশিত। প্রতিপক্ষ যে রিয়াল মাদ্রিদ। চ্যাম্পিয়নস লিগের অবিসংবাদিত ‘রাজা’। দানি কারভাহল ও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র রিয়ালকে ইউরোপের সেই রাজত্বই পুনরুদ্ধার করিয়ে দিলেন বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের জালে গোল করে। ইউরোপের শীর্ষ ক্লাব প্রতিযোগিতায় ১৮তম ফাইনালে এটি রিয়ালের ১৫তম শিরোপা। অথচ ডর্টমুন্ড স্বপ্ন দেখেছিল নিজেদের দ্বিতীয় ইউরোপসেরার শিরোপার। সেই স্বপ্ন চূর্ণ হলো ফিনিশিংয়ে দুর্বলতা, কিছুটা দূর্ভাগ্য এবং রিয়ালের ‘ডিএনএ’-তে। চাপ কাটিয়ে গোল আদায় করে কীভাবে ফাইনাল জিততে হয়, তা রিয়ালের চেয়ে ভালো কে জানে! একাদশে দুটি পরিবর্তন এনেছিলেন রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি। চোট পাওয়া অঁরেলিয়ে চুয়ামেনির জায়গায় এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা এবং পোস্টে আন্দ্রেই লুনিনের জায়গায় থিবো কোর্তোয়া। ডর্টমুন্ড কোচ এদিন তেরজিচ একাদশ পাল্টাননি। চ্যাম্পিয়নস লিগে নিজেদের সর্বশেষ তিন ম্যাচের একাদশেই ভরসা রেখেছেন। কোচের ভরসার প্রতিদান প্রথমার্ধেই দিতে পারতেন ডর্টমুন্ডের খেলোয়াড়েরা। ফিনিশিংয়ে দুর্বলতা, ভাগ্যের সহায়তা না পাওয়া এবং থিবো কোর্তোয়ায় ঠেকেছে ডর্টমুন্ড। ১৪ মিনিটে প্রথম সুযোগটি নষ্ট করেন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ইউলিয়ান ব্রান্ট। বাতাসে ভেসে আসা বল দারুণ রিসিভের পর তাঁর সামনে ঠেলে দিয়েছিলেন নিকলাস ফুলক্রুগ। শটটা পোস্টে রাখতে পারেননি ব্রান্ট। ৭ মিনিট পর ম্যাটস হুমেলসের ডিফেন্স চেরা পাস থেকে আবারও সুযোগ পেয়েছে ডর্টমুন্ড। করিম আদেয়েমি বুদ্ধি খাটিয়ে অফ সাইড ফাঁদে এড়িয়ে কোর্তোয়াকে সামনে একা পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে কাটাতে গিয়ে বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। রিয়ালের ডিফেন্ডার কারভাহাল ততক্ষণে আদেয়েমির সামনে চলে আসেন। এর ২ মিনিট পরই রিয়ালের পোস্টের পেছনে গ্যালারিতে ২৫ হাজার ডর্টমুন্ড সমরর্থকের ‘ইয়েলো ওয়াল’ টের পেয়ে যায়, ভাগ্যও বোধ হয় তাদের সঙ্গে নেই। নইলে ফুলক্রুগের বাঁ পায়ের শটটি রিয়ালের পোস্টে লাগত না! ইয়ান মাতসেনের পাস থেকে সহজ গোলটি না পাওয়ায় ফুলক্রুগ নিশ্চিত প্রথমার্ধ শেষে ড্রেসিংরুমে কপাল চাপড়েছেন। তার আগেই অব্শ্য রিয়ালের খেলোয়াড়েরা দুবার কোর্তোয়ার পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন। প্রথমবার ২৭ মিনিটে ; ব্রান্ডটের পাস থেকে আদেয়েমির বিপজ্জনক শট রুখে দেন চ্যাম্পিয়নস লিগে এবারের মৌসুমে এই প্রথমবারের মতো একাদশে সুযোগ পাওয়া কোর্তোয়া। সেটাও ফাইনালে! ‘স্কোয়াকা’ জানিয়েছে, এমন নজির নাকি আগে দেখা যায়নি। কোর্তোয়া অবশ্য ৪১ মিনিটে আরও একটি সেভ করে বেঞ্চে বসে থাকা লুনিনের আক্ষেপ বেশি বাড়তে দেননি। সাবিতজারের ২৫ গজি শট ঠেকিয়ে কোর্তোয়া বুঝিয়ে দেন, চোটের কারণে মৌসুমের অধিকাংশ সময় বাইরে থাকলেও তিনি বড় ম্যাচের গোলকিপার।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct