নকীব উদ্দিন গাজী ও বাইজিদ মণ্ডল, ডায়মন্ডহারবার, আপনজন: এবার লোকসভা নির্বাচনে সপ্তম দফা ভোটের আগেই তৃণমূল কংগ্রেস ২৩ টার বেশি আসন পেয়ে বসে আছে বলে দাবি করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নিজের লোকসভা কেন্দ্রে একটি বর্ণাঢ্য পদযাত্রা করেন ডায়মন্ডহারবার দু’নম্বর ব্লকের পালের মোড় থেকে সরিষা ২৪৬ মোড় পর্যন্ত। আর এরপরই নিজের লোকসভা কেন্দ্র থেকে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অভিষেক একের পর এক চ্যালেঞ্জ ও কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন। অভিষেক বেলেন, এই ঘূর্ণিঝড় রিমালে কোনও বিরোধী নেতা মানুষের পাশে ছিলেন না। একমাত্র ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক থেকে শুরু করে যে সমস্ত মানুষের ক্ষতি হয়েছে সমস্ত ক্ষতিপূরণ দেবে তৃণমূল কংগ্রেস। পাশাপাশি নিজের লোকসভায় দাঁড়িয়ে এবারে ৪ লক্ষ ভোটের ব্যবধান বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদি ৩৬৫ দিন ডায়মন্ড হারবারে পড়ে থাকলেও হারাতে পারবে না বলে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন অভিষেক। অন্যদিকে আবাস যোজনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদির মাথার চুল থেকে পায়ের নখ অব্দি সমস্তটাই দু’নম্বরি। কোনও টাকা দেননি। যদি টাকা দিয়ে থাকেন তাহলে কাকদ্বীপের সভা করতে আসছে বুধবার দিন সেখানেই বলুক কত টাকা দিয়েছেন আবাস যোজনার সাধারণ মানুষকে জানাক।পাশাপাশি তিনি চ্যালেঞ্জ জানান, ডায়মন্ড হারবারের সিপিএম বিজেপি প্রার্থী তাদের কাজের খতিয়ান নিয়ে আসুক লেজে গোবরে করে ছেড়ে দেব। কার্যত এদিনের এই পথ সভা থেকে একদিকে যেমন কেন্দ্রীয় সরকারকে হুংকার দিলেন অভিষেক ঠিক তেমনি নিজের জয় সুনিশ্চিত বলে দাবি করলেন অভিষেক।শুধু নরেন্দ্র মোদি নন সুকান্ত মজুমদার শুভেন্দু অধিকারী সুজন চক্রবর্তী মোঃ সেলিম অধীর রঞ্জন চৌধুরী প্রত্যেককে নাম ধরে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, তার বিপরীতে দাঁড়াতে পারতেন। ডায়মন্ডহারবার থেকে এত ভয় কিসের। এদিন জনসভা থেকে আবারও ডায়মন্ড হারবার মডেলকে সামনে তুলে আনলেন তিনি।তিনি জানান ভারতবর্ষের মধ্যে একমাত্র ডায়মন্ডহারবার লোকসভা যেখানটা ষাট উর্ধ্ব ব্যক্তিদের ১০০০ টাকা করে শ্রদ্ধার্ঘ্য দেওয়া হয়। দশ বছরের কাজের খতিয়ান রাস্তাঘাট পানীয় জল যে উন্নয়ন হয়েছে তার খতিয়ান তুলে ধরেন।
অভিষেক বন্দোপাধ্যায় বলেন কোভিডের সময় স্থানীয় দলীয় নেতৃত্ব রা গিয়ে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা এলাকায় সাধারণ মানুষকে রান্না করে খাবার দিয়ে আসত, তখন কোনো বিজেপি সহ অন্যান্য বিরোধী দলের নেতা দের দেখা পাওয়া যায়নি। ভোট আসলেই ভোটটা শুধু নেওয়ার জন্য মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলে যায়, মানুষ বিপদে পড়লে তাদের আর পরে খোজ পাওয়া যায় না,তাদের আবার বরো বরো কথা। আমরা ক্ষমতায় আসার পর কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, বিদ্যালয়, ইলেকট্রিক, পাকা, ও কংক্রিটের রাস্তা অনেক হয়েছে,জা ৩৪ বছর রাজ্যে বাম ক্ষমতায় থাকতে যা না করতে পেরেছে, তৃণমূল সরকার আসার পর বহুগুণ বেশি কাজ ও উন্নয়ন হয়েছে। কয়েকটা চোর জুয়াচোর মিলে দেশ চালাচ্ছে। আমরা যেটা বলি সেটা গ্যারান্টি, আর মোদির গ্যারান্টি মানে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি। দয়াকরে ভোটের লিস্টে নাম রাখুন ভোটটা দিন, নাহলে বিজেপি আসলে সকল কে ভাতে মারবে। বাংলায় বিজেপি হচ্ছে চাকরি খেকো বাঘ!অভিষেক বিজেপিকে চোরের দল বলে কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, চোরেরা বিজেপিতে গেলে সবাই ঠিক, ওয়াশিং মেসিনে ঢুকলেই ক্লিয়ার। গ্রামীণ রাস্তার কাজে দেশের মধ্যে বাংলা প্রথম হয়েছে। কিন্তু আমাদের বাংলাকে ভাতে মারতে চায়,ঠিক মত ন্যায্য টাকা দেয় না। আপনারা সবাই তৃণমূল কে ভোটটা দিন, সরিষা থেকে ডায়মন্ড হারবার মানুষকে আবেদন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। আমরা চাই বাবা সাহেব আম্বেদকরের সংবিধান বেঁচে থাক, মোদি নিপাত যাক। এইবার দিল্লিতে মোদিকে হাঁটিয়ে আমরা সরকার গড়বো। এবার খেলা হবে, আপনারা এবার আমাকে জিতিয়ে রেকর্ড করুন, আমি একজন তোমাদের পরিবারের সদস্য হিসেবে ডায়মন্ড হারবার মানুষকে আবেদন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের।মূল্যবৃদ্ধি সহ একাধিক ইস্যুতেও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হন অভিষেক। অভিষেক বলেন, আমজনতাকে যা কিছু প্রধানমন্ত্রীর দেওয়ার কথা, তা আদপে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। দেওয়ার কথা ছিল মোদীর, দিয়েছে দিদি। একদিকে দিদি দিচ্ছে, আর মোদী নিচ্ছে। দিদি ১২০০ টাকা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দিচ্ছে, আর গ্যাসের দাম ১২০০ টাকা করে নিচ্ছে মোদী। জিরে, বিস্কুটের উপর ১৮ শতাংশ জিএসটি বসিয়েছে। আর সোনা, হিরের শূন্য জিএসসটি।এই দিন এই পথসভা ও মিছিলে উপস্থিত ছিলেন ডায়মন্ড হারবার বিধানসভার বিধায়ক পান্নালাল হালদার ডায়মন্ড হারবার বিধানসভার পর্যবেক্ষক শামীম আহমেদ ডায়মন্ডহারবার পৌরসভার চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যান ও শিক্ষক নেতা মইদুল ইসলাম সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct