আপনজন ডেস্ক: ইউরোপিয়ান সুপার লিগের বিরোধিতা করে ফিফা ও উয়েফা ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ এবং ‘মুক্ত প্রতিযোগিতা প্রতিরোধ’ করেছে বলে আজ রায় দিয়েছেন স্পেনের আদালত। এই রায়ের মধ্য দিয়ে স্পেনের আদালত ইউরোপের সর্বোচ্চ আদালত ‘ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিস’ (ইসিজে)–এর রায়ের সঙ্গেই সুর মেলাল। ইউরোপের সর্বোচ্চ আদালত এর আগে সুপার লিগ নিয়ে ফিফা এবং উয়েফাকে ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতাবিরোধী আচরণ বন্ধ করা’র নির্দেশ দিয়েছিলেন। স্পেনের আদালত বলেছেন, ফিফা ও উয়েফা খেলাধুলার মুক্ত প্রতিযোগিতায় ‘অনৈতিক এবং অসামঞ্জস্য বিধিনিষেধ’ আরোপ করেছে। ইউরোপিয়ান সুপার লিগের পক্ষে থাকা প্রতিনিধিদের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই রায় দিয়েছেন স্পেনের আদালত। স্পেনের দুই ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা এখনো সুপার লিগ আয়োজনের পক্ষে। ইউরোপের অন্য বড় ক্লাবগুলো এ ব্যাপারে তাঁদের সঙ্গ ত্যাগ করেছে।মাদ্রিদভিত্তিক স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি এ২২ এই মামলার বাদীপক্ষ। মোট ৮০টি ক্লাব নিয়ে তিন স্তরের ইউরোপিয়ান সুপার লিগ আয়োজনের ব্যাপারে মাদ্রিদের বাণিজ্যিক আদালতে মামলা ঠুকেছে এ২২ স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট। গত বছর ডিসেম্বরে ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিস (ইসিজে) রায়ে বলেছিলেন, সুপার লিগ নিষিদ্ধ করা ইউরোপিয়ান আইনের পরিপন্থী। ইসিজে জানতে পারে, নতুন কোনো প্রতিযোগিতার অনুমোদন দেওয়া কিংবা না দেওয়ার ব্যাপারে ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফার নির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা নেই।
স্প্যানিশ আদালতের বিচারক সোফিয়া গিল গার্সিয়ার দেওয়া আজকের রায় দেখেছে বার্তা সংস্থা এএফপি। রায়ে বিচারক বলেছেন, ‘ভবিষ্যতের কোনো প্রকল্পের ব্যাপারে আদর্শিকভাবে নিষেধাজ্ঞা কিংবা বিধিনিষেধ দেওয়া সম্ভব নয়। এর উল্টো কিছু করা মানে যেকোনো ফুটবল প্রকল্পের ওপর আসা নিষেধাজ্ঞাকে মেনে নেওয়া।’ইউরোপের যে ২৬টি দেশ গত ফেব্রুয়ারিতে সুপার লিগের বিরুদ্ধে যৌথভাবে সই করে অবস্থান নিয়েছিল, স্পেন সেখানে ছিল না। স্প্যানিশ ফুটবলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তারা ‘মুক্ত প্রতিযোগিতা’য় বিশ্বাসী।২০২১ সালে রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনাসহ ইউরোপের মোট ১২টি বড় ক্লাব সুপার লিগ আয়োজনের পরিকল্পনা প্রথম জানিয়েছিল। কিন্তু ফিফা ও উয়েফার হুমকির পাশাপাশি ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলোর সমর্থকদের তুমুল বিরোধিতার মুখে প্রকল্পটি ভেঙে পড়ে। কিন্তু ফিফা ও উয়েফাকে নিয়ে ইসিজের একটি রায়ের পর পরিকল্পনাটি আবার নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ইসিজের রায়ে বলা হয়, দুই পক্ষ ফিফা ও উয়েফার ক্ষমতা ‘এমন কোনো অনুমিতির ওপর ভর করে চর্চা করা হয় না, যা নিশ্চিত করবে তারা স্বচ্ছ, বৈষম্যহীন এবং সুষম।’উয়েফাও এরপর নিজেদের খামতি সংশোধন করে নেয়। ২০২২ সালের জুনে নিজেদের নিয়মনীতি পরিমার্জনা করে সংস্থাটি। ইসিজের রায়ের পর উয়েফার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ‘এই রায়ের অর্থ এই নয় যে তথাকথিত সুপার লিগ অনুমোদন পেয়েছে।’ লা লিগা সভাপতি হাভিয়ের তেবাসও সুপার লিগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বলেছিলেন, ‘এই রায়ই চূড়ান্ত নয়। কিংবা (এই রায়) আলাদা করে নতুন কিছু যোগও করতে পারবে না।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct