মাছ চাষের আধুনিকীকরণে নয়া যন্ত্রের হদিশ
সাইফুদ্দিন সেখ
একটি আধুনিক যন্ত্র তৈরি করেছি আমরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় ছাত্র, যেটি দিয়ে খুব সহজেই মাছ চাষ আরো ভালো বা লাভজনক ভাবে করা যাবে। মাছ চাষের ক্ষেত্রে জলের বিভিন্ন উপাদানের (যেমন জলের উষ্ণতা, জলে থাকা অক্সিজেন, জলের অম্লতা বা ক্ষার আরো বিভিন্ন উপাদান)উপর নির্ভর করে মাছ সুস্থ থাকে বা বেড়ে ওঠে। আমাদের এই আধুনিক যন্ত্রটা পুকুর, জলাশয়, বা মাছ চাষের ফার্মে ডোবালে দেখিয়ে দেবে আমাদের ভারতবর্ষের যে সমস্ত মাছ(যেমন কাতলা, রুই, চিংড়ি ,মৃগেল ইত্যাদি) চাষ হয়ে থাকে সেগুলির মধ্যে বর্তমান অবস্থায় জলাশয় টিতে কোন মাছটি কত শতাংশ চাষের উপযুক্ত বা কোন মাছটি চাষ করে থাকলে ভালো হবে, এছাড়াও যদি জলাশয় টি অনুপযুক্ত থাকা সত্ত্বেও অন্য মাছ চাষ করতে চায় তাহলে জলের মধ্যে কি কি উপাদান কত পরিমাণ বাড়াতে বা কমাতে হবে দেখিয়ে দেবে। এটিকে ব্যবহার করা সাধারণ মানুষের কাছে খুব সহজলভ্য, জলাশয়ে যন্ত্রটা ডুবালেই সমস্ত তথ্য যন্ত্র টাতে লেগে থাকা ডিসপ্লেতে দেখিয়ে দেবে এবং চাইলেও মোবাইলে সমস্ত কিছু দেখতে পারি।
সাধারণ মানুষের কি উপকারে লাগবে?
এই যন্ত্রটি ব্যবহার করে কোন মাছ চাষ করলে ভালো উৎপাদন হবে যেহেতু জানতে পারবো সেখানে মাছ চাষিদের মাছ চাষ করা একটি লাভজনক ব্যবসা হয়ে দাঁড়াবে। অপরপক্ষে যদি কোন মাছ চাষি বেশি লাভজনক বা চাহিদাশীল মাছ (যেমন চিংড়ি পমফ্রেট ইত্যাদি) চাষ করতে চাই সেই মাছ চাষের উপযুক্ত পরিবেশ বা জলাশয় তৈরি করে নিতে পারবে, যার ফলে তার ব্যবসা আরো অনেক লাভজনক হয়ে উঠবে। এছাড়াও আমরা যদি দেখি আমাদের ভারতবর্ষে, কৃষি কাজের সঙ্গে সঙ্গে ভারত তৃতীয় বৃহত্তম মাছ উৎপাদনকারী দেশ। ভারতবর্ষ বাইরেও মাছ রপ্তানি করে থাকে যেটি আমাদের ভারতবর্ষের জিডিপির(১ শতাংশ) উপর একটি ভালো প্রভাব রয়েছে। সে অর্থে আমাদের এই যন্ত্রটি সাধারণ মাছ চাষি তথা বড় বড় মাছ চাষের ফার্মকে অনেক উন্নত ,লাভজনক করে তুলবে এবং মাছ চাষিদের জন্য মাছ চাষের ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসবে।
ব্যক্তিগত জীবন:
আমার নাম সাইফুদ্দিন সেখ আমার গ্রামের নাম লোহাপুর, থানা নলহাটি, জেলা বীরভূমের নিবাসী, আমার প্রথম থেকে চতুর্থ বর্ষ সাইনমাইল স্কুল থেকে ও পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণী লোহাপুর রাম মেমোরিয়াল হাইস্কুল থেকে এবং আমার একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী নলহাটি পরিপ্রসাদ হাইস্কুলে কেটেছে। এবং আমার স্নাতক ডিগ্রি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ কারিগরি বিভাগে সম্পূর্ণ করার পর, বর্তমানে আমি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স এবং টেলি-কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অন্তগত ইন্টেলিজেন্স অটো মেশিন এন্ড রোবোটিক্স এর শেষ বছরের ছাত্র।
উপদেষ্টা/শিক্ষিকা এবং সহকর্মী সদস্য বিবরণ :
মাছ চাষের এই আধুনিক যন্ত্রটি তৈরি করতে আমার বিভাগের আয়োটি ল্যাব ও শিক্ষিকা ডক্টর শেলী সিনা চৌধুরী (যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স এবং টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপিকা ) এবং পি.এইচ.ডি স্কলার আসফাক আলীর (যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স এবং টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ) অবদান অনেক। একইসঙ্গে আমার সহকর্মী রনধীর দাস (যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স এবং টেলি-কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অন্তগত ইন্টেলিজেন্স অটো মেশিন এন্ড রোবোটিক্স এর শেষ বছরের ছাত্র) এবং পারভেজ মোশারফ সেখ (যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ কারিগরি বিভাগে শেষ বছরের ছাত্র ) এই যন্ত্রটি তৈরি আমাকে করতে সাহায্য করেছে।
আগামী দিনের প্রচেষ্টা:
আমাদের প্রচেষ্টা আগামী দিনে এই মাছ চাষের যন্ত্রটিকে মানুষের কাছে খুব কম খরচে পৌঁছে দেওয়া, মাছ চাষ সহজ এবং মাছ চাষ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করা ও মাছ চাষের ফলনকে বৃদ্ধি করানো একইসঙ্গে মাছ চাষের ক্ষেত্রে ভারতবর্ষকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct