আনোয়ার হোসেন, হলদিয়া, আপনজন: তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যের সমর্থনে হলদিয়া এইচ এফ সি মাঠে নির্বাচনী প্রচারে আসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়,তৃণমূল নেত্রীর নিশানায় প্রথম থেকেই ছিল অধিকারী পরিবার। মমতা বলেন,চিরকাল ইডি-সিবিআই-ইনকাম ট্যাক্স কোলে রেখে দেবে না। একদিন না একদিন উপযুক্ত জায়গায় পড়বেন। যাঁরা করেছেন, তাঁদের বলছি,ঈশ্বর থাকলে বুঝতে পারবেন। সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের যা খাওয়ায়, তাই খান আপনারা। এর পর থেকে সুর সপ্তমে চড়ে আর বদল নয়,সরাসরি বদলার কথা শোনা গেল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গলায়। হলদিয়ার মাটিতে দাঁড়িয়েই তৃণমূল নেত্রীর হুংকার নন্দীগ্রামে বিধানসভা ভোটে হারের বদলা তিনি নেবেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে হটসিট হিসেবেই চিহ্নিত হয়েছিল নন্দীগ্রাম। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং আর প্রতিপক্ষ বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। নির্বাচনে লোডসেডিং করে ভোট গণনায় কারচুপি করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ মমতার। যা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও দায়ের করা হয়েছিল। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন। ’বিজপি ক্ষমতায় আছে বলে গায়ের জোরে জেলাশাসক বদলেছিল,পুলিশ সুপার বদলে ছিল। আইসি বদলেছিল। আর ভোট হয়ে যাওয়ার পরে লোডশেডিং করে দিয়ে রেজাল্ট পাল্টে দিয়েছিল। আমি আজ না হয় কাল এর বদলা নেবই। কী ভাবে নেব,কেমন করে নেব,সেটা আগামী দিনে পথ দেখাবে। ’ নন্দীগ্রামে যে ফলাফল হয়েছিল তা নন্দীগ্রামের মানুষের রায় ছিল না বলেও দাবি করেন মমতা,এদিন নির্বাচনী প্রচারে নন্দীগ্রামের স্মৃতি উস্কে দেন মমতা। তিনি নন্দিগ্রামকাণ্ডের জন্য নাম না করে নিশানা করেন শিরির অধিকারী ও শুভেন্দু অধিকারীকে তিনি বলেন, ‘নন্দীগ্রাম লড়াইয়ের সময় বাপব্যাটা কোথায় ছিলেন? ১৫ দিন বাড়ি থেকে ভয়ে বের হয়নি। আমি এখনও চ্যালেঞ্জ করে বলেছি সিপিএমএর সঙ্গে আন্ডারস্ট্যান্ডিং করে আপনারা নন্দীগ্রাম গণহত্যা ঘটিয়েছিলেন। একদিন না একদিন তা প্রমাণ হবে। তৃণমূল কংগ্রেস যখন তৈরি করেন তখনও শিশির অধিকারীরা তৃণমূলের অংশ ছিল না। ওরা তখন কংগ্রেসের হয়ে নির্বাচনী লড়াই করতেন। সেই সময় নন্দীগ্রামের প্রার্থী ছিল অখিল গিরি। কাঁথির রাজনীতিতে অধিকারীরা বরাবরই ফ্যাক্টর। অখিল গিরির সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর একটা দূরত্ব বরাবরই ছিল। প্রচারে মমতা বিজেপির বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগও করেছেন। হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরিহারা হয়েছিলেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। মামলা গড়িয়েছিল সুপ্রিমকোর্টে। হাইকোর্টের নির্দেশে আপাতত স্থগিতাদেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। চাকরিহারাদের তালিকায় মেদিনীপুরের সংখ্যাটা বেশ বেশি এবং তাঁরা মুখ খুললে কে বা কারা বিপদে পড়তে পারেন,বৃহস্পতিবার সেই সম্পর্কে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করতে শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। নিয়োগ দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে এদিন হলদিয়ার সভা থেকে মমতা বলেন,’পূর্ব মেদিনীপুরে কিন্তু সংখ্যাটা বেশি। এই ২৬ হাজার ছেলেমেয়ে মুখ খুলছে না,পাছে সত্যিটা বেরিয়ে পড়ে। কার কাছ থেকে কে কত নিয়েছেন,তাঁরা যদি একবার বলে দেন!”এরপরই সরাসরি চাকরিহারাদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা,”কিচ্ছু না চুপচাপ আমাকে বলে দেবেন,আমি আপনাদের কারও ক্ষতি করতে দেব নাআপনাদের জেলায় চাকরিখেকো বাঘ রয়েছে। ’সরাসরি কারও নাম করেননি। তবে এর আগেই ‘গদ্দার’ সম্বোধন করে তাঁকে বলতে শোনা যায়, যখন শিক্ষকদের চাকরি গেল, তার আগেই বাবুমশাই বললেন, বোমা ফাটাব।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct