এম মেহেদী সানি, খলতপুর, আপনজন: আদর্শ ছাত্রছাত্রী গড়ার কারিগর এম নুরুল ইসলামের নিরলস প্রচেষ্টায় আশির দশকে প্রতিষ্ঠিত আল আমীন মিশন রাজ্যের শিক্ষা মানচিত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছে । এবছরও তার ব্যতিক্রম হল না, মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে জয়জয়কার রাজ্যের শীর্ষ এই সংখ্যালঘু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আল আমীন মিশনের । এই প্রতিষ্ঠানে আবাসিক ভাবে পড়াশোনা করে এবছর প্রথম কুড়িতে চোদ্দ জন পড়ুয়া স্থান পেয়েছে । উল্লেখ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদ প্রথম দশ জনের যে মেধা তালিকা প্রকাশ করেছে তার মধ্যে নবম স্থান অধিকারী অমিনূর ইসলাম বর্তমানে আল-আমীন মিশনের খলতপুর শাখায় একাদশ শ্রেণীতে পাঠারত ৷ অন্যদিকে ২০২৪ সালের মাধ্যমিকের ফলাফল অনুযায়ী রাজ্যজুড়ে মোট মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৯০% নম্বর পেয়েছে ১% পরীক্ষার্থী ৷ পাশাপাশি আল-আমীন মিশনের ৩৭ টি শাখার মোট ১৯৪৯ পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৯০% নম্বর পেয়েছে ২১.৯০% পরীক্ষার্থী ৷ মাধ্যমিকে সাফল্যর খতিয়ান তুলে ধরতে গিয়ে আল-আমীন মিশনের সম্পাদক এম নুরুল ইসলাম ‘আপনজন’কে বলেন, আমীন মিশনে পড়াশোনা করে এবছর প্রথম কুড়িতে ১৪ জন পড়ুয়া স্থান পেয়েছে । আল আমীন মিশনের বালক-বালিকা মিলিয়ে রাজ্যের মোট ৩৭টি ক্যাম্পাস থেকে মোট ১৯৪৯ জন মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল তাঁদের মধ্যে ৯৫ শতাংশ এবং তার বেশি নম্বর পেয়েছে ৫২ জন, ৯০ শতাংশ এবং তার বেশি নম্বর পেয়েছে ৪২৭ জন, যা শতাংশের অনুপাতে গতবারের তুলনায় বেশ কিছুটা ভালো ৷ ৮০ শতাংশ এবং তার বেশি নম্বর পেয়েছে ১২৮৬ জন, ৭০ শতাংশ এবং তার বেশি নম্বর পেয়েছে ১৭১২ জন । নুরুল ইসলাম আরও বলেন, রাজ্যের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মেধাবী ও গরিব ছাত্রছাত্রী । মূলত সেই সব মেধাবীদের একসূত্রে বেঁধে বিজ্ঞানসম্মত ও আধুনিক পদ্ধতিতে শিক্ষা দেওয়ায় ব্রত আল-আমীন মিশন । সেই লক্ষ্যকে সফল করে তুলেছে মাধ্যমিকের কৃতীরা । তবে, ছাত্রছাত্রীদের একনিষ্ঠ পড়াশুনাও কৃতিত্বের ভাগিদার বলে তিনি জানান । তাদের উচ্চশিক্ষায় সবসময় আল-আমীন মিশন পাশে থাকবে বলে তিনি অঙ্গীকার করেন। প্রত্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মূলত গরিব মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের এক মিলন ক্ষেত্রে পরিণত করার যে প্রয়াস আল আমীন মিশন চালিয়ে আসছে নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে, তার সাফল্য ঈর্ষা করার মতো ।আল-আমীন মিশন থেকে মাধ্যমিকে প্রথম স্থান পেয়েছে বেলপুকুর শাখার ছাত্র মালদার কৃষক পরিবারের সন্তান শেখ শাকিল আহমেদ, তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮০ ৷ রাজ্যের নিরিখে ১৪ তম স্থানে রয়েছে সে, তার বিষয়ভিত্তিক নম্বর (বাংলা-৯৫, ইংরেজি- ৯০, গণিত-৯৯, ভৌত বিজ্ঞান-১০০, জীবন বিজ্ঞান- ৯৯. ইতিহাস ৯৭, ভূগোল - ১০০) । মেয়েদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে হাওড়া থেকে মারিয়া গোরি, তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৭৯, রাজ্যের নিরিখে ১৫ তম স্থানে রয়েছে সে ৷ মারিয়ার বিষয়ভিত্তিক নম্বর (বাংলা-৯৮, ইংরেজি- ৯১, গণিত-৯৫, ভৌত বিজ্ঞান-৯৮, জীবন বিজ্ঞান- ১০০. ইতিহাস ৯৮, ভূগোল - ৯৯) । ৬৭৯ নম্বর পেয়ে আল-আমীনের নিরিখে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে আরো তিনজন, তাঁরা হলেন মালদা থেকে সুমাইয়া সুলতানা, উত্তর ২৪ পরগনা থাকে রুপম ইসলাম, হাওড়া থেকে আলিফ মীর ৷ সমগ্র রাজ্যের নিরিখে প্রথম কুড়িতে আল-আমীনের ১৪ জন পড়ুয়ার মধ্যে অন্যান্যরা হলেন সুরাইয়া খাতুন, রেহান আনসারী, সওকাত জাহিদ, সামিম সরকার, শেখ মোঃ রামিজ, তৌফিক ওমর, শেখ মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ আসিফ, জেনিফার রোজা ৷ এই সাফল্যে খুশি আল আমীন কর্তৃপক্ষ। এই সাফল্যের জন্য আল-আমিন মিশন কর্তৃপক্ষকে বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছে কৃতীরা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct