আপনজন ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, সন্দেশখালিতে অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করার ‘প্রমাণ’ নেই। রাজ্য পুলিশকে না জানিয়েই তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই।তিনি অভিযানের বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, উদ্ধার করা অস্ত্র বা তদ সামগ্রীগুলি ‘কেন্দ্রীয় সংস্থার কর্মকর্তারা নিজেরাই নিয়ে আসতে পারেন’। মমতার অভিযোগ, বাংলায় বাজি ফাটলেও এনআইএ, সিবিআই, এনএসজি তদন্ত করতে আসছে। মনে হচ্ছে একটা যুদ্ধ চলছে। তল্লাশির বিষয়ে রাজ্য পুলিশকে জানানো হয়নি। তবে কী পাওয়া গেছে তা জানা যায়নি। কোনও প্রমাণ মেলেনি। বাজেয়াপ্ত করা জিনিসগুলি ওরা (সিবিআই) কোনও গাড়িতে করে নিয়ে এসেছিল বলে দাবি মমতার।শনিবার আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহার হয়ে নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন তিনি। সেখানেই মমতা সন্দেশখালিতে সিবিআই তল্লাশিতে বিপুল অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে মুখ খোলেন। শুক্রবার সন্দেশখালিতে তৃণমূলের সাসপেন্ডেড নেতা শাজাহান শেখের এক সহযোগীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ সার্ভিসের রিভলভার ও বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র সহ অস্ত্র ও গোলাবারুদ বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া শেখের প্ররোচনায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) একটি টিমের ওপর জানুয়ারিতে হামলা চালানোর ঘটনায় এই তল্লাশি চালানো হয়।উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবন সংলগ্ন নদীমাতৃক বদ্বীপ গ্রামে তল্লাশি চালায় সিবিআই, বোমা শনাক্তকরণ স্কোয়াড, ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি), কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ।
শুক্রবার সিবিআই ও এনএসজি-র যৌথ অভিযানে সন্দেশখালির যে দোকান থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল, সেখান থেকে কলকাতার যে দোকান থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল, তার হদিশ পেয়েছে সিবিআই। বহিষ্কৃত তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শেখ শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও আত্মীয়ের বাড়িতে যৌথ অভিযানে বিভিন্ন গোলাবারুদ ছাড়াও বেশ কয়েকটি দেশ-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক জব্দ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, অভিযান চলাকালীন সিবিআই একটি গোলাবারুদের দোকান থেকে বেশ কয়েকটি ক্রয় বিল সহ বেশ কিছু নথিও হাতে পেয়েছিল, যার ফলে সিবিআই কলকাতার যে দোকান থেকে বাজেয়াপ্ত গুলি এবং কার্তুজ কেনা হয়েছিল বলে জানা গেছে।বিলে ক্রেতা হিসেবে শাহজাহানের নাম রয়েছে বলে জানা গেছে। সিবিআই এখন খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে যে কারা গোলাবারুদের দোকানে জিনিসগুলি কিনতে গিয়েছিল।সূত্রের খবর, আমদানি করা আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার নিয়ে সিবিআইও ‘বিস্মিত’, কারণ ভারতে বেসরকারি বাজারে এই জাতীয় জিনিস কেনা বেচার অনুমতি নেই। শুক্রবার তল্লাশি অভিযানের সময় এ জাতীয় তিনটি রিভলবার এবং একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছিল।শুক্রবার সন্দেশখালির ওই বাড়ি থেকে একটি কোল্ট অফিসিয়াল পুলিশের রিভলভার বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই।অন্যদিকে, সিবিআই ও ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ডের (এনএসজি) বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। অভিযোগের বলা হয়, ২৬ এপ্রিল তৃণমূলের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে সন্দেশখালির একটি ফাঁকা জায়গায় অভিযান চালিয়েছে অভিযোগ।চিঠিতে বলা হয়েছে, তল্লাশি ও বাজেয়াপ্ত করার সময় এই অস্ত্রগুলি সত্যিই উদ্ধার করা হয়েছিল কিনা বা সেগুলি সিবিআই বা এনএসজি গোপনে রেখেছিল কিনা তা নিশ্চিতভাবে জানার কোনও উপায় নেই।এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের অভিযোগ, যদিও ‘আইনশৃঙ্খলা’ সম্পূর্ণরূপে রাজ্য সরকারের আওতাধীন একটি বিষয়, তবে সিবিআই এই জাতীয় অভিযান চালানোর আগে রাজ্য সরকার বা পুলিশ কর্তৃপক্ষকে কার্যকর করার জন্য কোনও পদক্ষেপযোগ্য নোটিশ জারি করেনি। পাশাপাশি, রাজ্য পুলিশের একটি বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড নিয়ে অভিযানে সহায়তা করতে পারত বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct