আপনজন ডেস্ক: নবরাত্রির সময় বিরোধীরা মাছ খাওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাম্প্রতিক মন্তব্যের সমালোচনা করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যারা মাছ খায় তাদের নিয়ে বিজেপির সমস্যা রয়েছে।মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি জেলায় এক জনসভায় যখন মুখ্যমন্ত্রী একথা বলেন, উত্তরের রায়গঞ্জে একটি জনসভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী।মমতা বলেন, এক শিখকে দেখে বিজেপি নেতারা তাকে খালিস্তানি বলে ডাকছেন, মুসলিমকে পাকিস্তানি বলছেন। কেউ যদি মাছ খায়, তাতেও বিজেপির সমস্যা আছে। আমরা কী খাব বা কী পরব তা ঠিক করার তুমি কে?চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সন্দেশখালিতে এক আইপিএস অফিসারকে ‘খালিস্তানি’ বলার অভিযোগে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। বিজেপি নেতারা যখন সন্দেশখালিতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন, তখনই ওই এলাকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করায় পুলিশ তাদের বাধা দেয়।
বিজেপির সমালোচনা করে মমতা বলেন, প্রত্যেকের নিজস্ব রীতিনীতি এবং ঐতিহ্য রয়েছে। তবে বিজেপি আমাদের বৈচিত্র্যকে মুছে ফেলবে। তারা আপনার জন্য সবকিছু সিদ্ধান্ত নেবে— কী খাবে এবং কী পরবে। মানুষকে হয়তো তার মনের কথা বলতে দেওয়া হবে না। দেশে কোনও নির্বাচন হবে না, কোনও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো বা সংবিধান থাকবে না এবং তারা ক্ষমতায় এলে কেবল মোদি সরকার থাকবে।আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ইস্তেহার নিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, বিজেপির ইস্তাহার আমার অবস্থানকে প্রমাণ করেছে। আমি আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলাম যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) মাছের মাথা, জাতীয় নাগরিক নিবন্ধক (এনআরসি) হল লেজ, এবং ইউনিফর্ম সিভিল কোড (ইউসিসি) হল অন্ত্র। বিজেপি ক্ষমতায় এলে প্রত্যেকের পরিচয় এবং স্বাধীনতা বিপন্ন হবে— সে তপশিলি, আদিবাসী, রাজবংশী, মতুয়া, কামতাপুরি, সংখ্যালঘু, হিন্দু বা অন্যান্য আদিবাসী সম্প্রদায়ই হোক না কেন।লোকসভা ভোটের পর তৃণমূলের বিশেষ প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে বিজেপি নেতাদের সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি খবরের কাগজে পড়ে জেনেছি বিজেপি লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে। আমি তাদের এটা করার চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি। তারা কখনোই তা করতে পারবে না।২০২১ সালে চালু হওয়া ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ তৃণমূল নেতৃত্বাধীন সরকারের একটি বিশেষ প্রকল্প এবং সুবিধাবঞ্চিত মহিলাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।জলপাইগুড়ির সাম্প্রতিক ঝড়ে বাস্তুচ্যুতদের জন্য ঘর নির্মাণের অনুমতি না দেওয়ার জন্য ভারতের নির্বাচন কমিশনের (ইসিআই) সমালোচনা করেন মমতা। গত ৩১ মার্চ জেলা ও এর আশপাশের এলাকায় আকস্মিক ঝড় ও ভারী বর্ষণে কমপক্ষে পাঁচজন নিহত এবং ২০০ জনেরও বেশি লোক গৃহহীন হয়ে পড়ে।তিনি বলেন, যেহেতু লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে আদর্শ আচরণবিধি (এমসিসি) কার্যকর রয়েছে, তাই বিজেপির কমিশন ঝড়ে যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন, তাদের বাড়ি দেওয়ার অনুমতি দেয়নি। মমতা বলেন, ওরা (বিজেপি) ২০০ পার করবে না। আমরা বাংলায় জিতব। পঞ্জাবে জিতবেন অরবিন্দ। স্তালিন জিতবেন। উত্তরপ্রদেশে জিতবেন অখিলেশ। অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি, দিল্লিতে আম আদমি পার্টি এবং তামিলনাড়ুতে ডিএমকে) কথা উল্লেখ করে মমতা বলেন, বিজেপি সেখানে শূন্য আসন পাবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct