আপনজন ডেস্ক: প্রায় ছয় মাস ধরে অবরুদ্ধ ছিল ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। তবে নেতানিয়াহু প্রশাসনের ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর শহরটিতে ফিরতে শুরু করেছেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা। ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়িঘরেই আশ্রয় নিচ্ছেন তারা। তবে যুদ্ধবিধ্বস্ত শহরের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন অনেকেই।
সোমবার (৮ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি ও কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। এর আগে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রোববার (৭ এপ্রিল) দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহর থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দেয় নেতানিয়াহু প্রশাসন।
রোববার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) লেফটেন্যান্ট জেনারেল হার্জি হাভেলি এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, সেনা সরিয়ে নেওয়া মানে অভিযান বন্ধ এমনটি বলার সুযোগ নেই। তবে গাজায় ইসরায়েলের উদ্দেশ্য পুরোপুরি সফল হয়েছে।
খান ইউনিসে ফিরে বার্তা সংস্থা এএফপিকে মাহা তাহের নামের তিন সন্তানের এক মা বলেন, চারদিকে লাশের গন্ধ পাচ্ছি। আমাদের শহর আর আগের মতো নেই। এখন এটি শুধুই ধ্বংসস্তূপ। রাস্তা দিয়ে যখন হেঁটে যাচ্ছিলাম, তখন আমি কান্না ধরে রাখতে পারছিলাম না।
তিনি বলেন, প্রতিটি বাড়িতে বুলডোজার চালানো হয়েছে। এমনকি, আমি মানুষজনকে মাটি খুঁড়ে মরদেহ বের করতেও দেখেছি। এ এক অসহনীয় পরিস্থিতি। গত ৭ অক্টোবরের আগে খান ইউনিসে চার লাখেরও বেশি মানুষ বসবাস করত। কয়েক মাসের ইসরাইলের লাগাতার বোমা হামলা ও হামাস সদস্যদের সঙ্গে লড়াইয়ে শহরটির অধিকাংশ স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে।
দীর্ঘদিন ধরেই গাজা উপত্যকাটির নিয়ন্ত্রক গোষ্ঠী হামাসকে নির্মুলের নামে পুরো গাজাজুড়ে বর্বর হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। তবে তারা নিজেদের লক্ষ্যে সাফল্য পায়নি। বিন্দুমাত্র টলাতে পারেনি ফিলিস্তিনিদের মনোবল। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় গত প্রায় ছয় মাসে এক লাখেরও বেশি মানুষ হতাহত হয়েছেন। জানা গেছে, ইসরায়েলের হামলায় প্রায় ৩৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ৭৬ হাজার।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct