জয়প্রকাশ কুইরি, পুরুলিয়া, আপনজন: ভূপতিনগরে যেভাবে এনআইএ মাঝরাতে অভিযানে গিয়ে মহিলাদের উত্ত্যক্ত করেছে তাতে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের সচেতন থাকতে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার পুরুলিয়া জেলার লুধুড়কা ময়দানে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন ,কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি প্ররোচনা তৈরি করে তৃণমূল কংগ্রেসের যারা এজেন্ট হবেন দেখে দেখে তাদের গ্রেপ্তার করতে পারে। তাছাড়া আগামী রামনবমীর সময় দাঙ্গা বাধানোরও চেষ্টা করতে পারে বিজেপি। ফলে নির্বাচনের আগে সবসময় সচেতন থাকতে হবে তৃণমূল কর্মীদের। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর জনসভা শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড় ঘন্টা পরে। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলেন, হেলিকপ্টার খারাপ হয়ে যাওয়ার জন্য দুর্গাপুর থেকে পুরুলিয়া সড়কপথে আসতে হয়েছে। তিনি কর্মীদের বলেন, অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছেন আপনারা আমি বেশি সময় নেব না। এরপরই তিনি চলে যান রাজ্য সরকারের উন্নয়ন গুলোর প্রসঙ্গে।
বলেন,রাজ্য সরকার এমন কোন পরিবার নেই যাকে পরিষেবা দেয়নি। কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, লক্ষ্মীর ভান্ডার এমনকি জয় জোহার পেনশন অবধি দিচ্ছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় সরকার বলছে স্বাস্থ্য সাথীর থেকে ভালো আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প কিন্তু আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প পেতে গেলে বাড়িতে সাইকেল থাকা চলবে না, পাকা বাড়ি থাকা চলবে না ,এরকম হাজার শর্ত থাকায় সারাদেশে মাত্র ১ কোটি মানুষ আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের সুযোগ পেয়েছেন। অন্যদিকে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গে ৯ কোটি মানুষ স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আয়ত্তায় আছেন। তিনি বলেন আবাস যোজনার জন্য কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না। প্রতি বাড়ি পিছু ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে আমারা দেব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে। এবিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন পুরুলিয়ার বিধায়ক গত পাঁচ বছরে কি কাজ করেছেন ? বিজেপি কেন্দ্রীয় প্রকল্প গুলি পশ্চিমবঙ্গের জন্য আটকে রেখেছে আবার পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে ভোট চাইছে। কর্মীদের তিনি এজন্য গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষকে বোঝানোর নির্দেশ দেন।
মমতা বলেন, ‘মোদি এক স্বৈচাচারী, দানবীয় অত্যাচারী সরকার চালাচ্ছে। এখানে দলিতরা সম্মান পায় না। আদিবাসীদের জমি কেড়ে নেওয়া হয়। লক্ষণীয় ভাবে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর জনসভায় বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সংঘটন গুলি উপস্থিত ছিলেন। ভূমিজ, মুন্ডা, আদবাসী, বাউরি সমাজ ইত্যাদি সংঘটন গুলি সকলেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন আমাদের রাজ্যে সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ স্বাচ্ছন্দের পাশাপাশি বাস করেন। বিজেপি এই পরিবেশ নষ্ট করে দিতে চাইছে। কিছুতেই এই পরিবেশ নষ্ট হতে দেওয়া চলবে না। রামনবমীর সময় যাতে কোন গণ্ডগোল পাকাতে না পারে বিজেপি সেইজন্য সকলকে সচেতন থাকতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্যর মাঝেই নীল আকাশে খানিকটা মেঘ উঠেছিল তা দেখে তিনি সকলেই বলেন সাবধানে বাড়ি যাবেন। এরপরই তিনি প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতো কে কাছে ডেকে তার হাত উর্ধে তুলে ধরেন এবং বলেন শান্তিরাম মাহাতো তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী। যে উন্নয়ন বিজেপি করে নি সেই উন্নয়নের জন্য শান্তিরাম মাহাতো কে ভোট দিতে হবে। উপস্থিত কর্মীরাও চিৎকার করে সঙ্গে সঙ্গে বলেন এবার ভোট শান্তিরাম মাহাতোকেই দেবেন তাঁরা। মমতা চ্যালেঞ্জের সঙ্গে আরও বলেন, আগামী দিনে ভারতবর্ষে বিজেপিকে বর্জন করবে মানুষ। আর দেশ বাঁচাবে তৃণমূল, দেশ গড়বে তৃণমূল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct