নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর, আপনজন: স্বামী পরিযায়ী শ্রমিক। সে অন্য নারীর প্রেমে মজেছে। সন্তানের চিকিৎসার জন্য স্বামীর কাছে টাকা চাইতে গিয়ে শুরু হয় ফোনে তুমুল ঝগড়া।স্ত্রীকে মরে যেতে বলে স্বামী। বাধ্য হয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে রেললাইনে আত্মঘাতী হতে যায় গৃহবধূ। গ্রামবাসীদের তৎপরতায় প্রাণ বাঁচল স্ত্রী সহ দুই সন্তানের।ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দুপুরে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার বারদুয়ারী রেলগেটে।ঘটনার খবর পেয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিস মা ও দুই সন্তানকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।এই নিয়ে এদিন চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায়।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,কয়েক বছর আগে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার মালিপাকড় গ্রামের আনোয়ারি খাতুনের সঙ্গে সাহাপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ তাজরুলের বিয়ে হয়।তাদের দুটি নাবালিকা সন্তান রয়েছে। দুই সন্তান খুব অসুস্থ। অপরদিকে তাজরুল বর্তমানে কাশ্মীরে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে নিযুক্ত রয়েছে।আনোয়ারি তার স্বামীর কাছে দুই মেয়ের চিকিৎসা এবং খাবারের খরচ চাইলে স্বামী জানায় সে টাকা দিতে পারবে না। এবং তার সঙ্গে আর সংসারও করবে না।সে আবার নতুন বিয়ে করবে বলে হুমকি দেয়।স্ত্রীকে মরে যেতে বলে।স্বামীর মুখ থেকে এই কথা শোনার পর এদিন বাড়ির পাশে বারদুয়ারী রেলগেটে গিয়ে রেললাইনের ওপরে দুই কন্যাকে নিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার জন্য ছুটতে থাকে।সে সময় দুরন্ত গতিবেগে ট্রেন আসছিল।গ্রামবাসীদের নজরে আসতেই এলাকার বাসিন্দারা তৎপর হয়ে দুই শিশু সহ মা কে হাত ধরে টেনে রেললাইন থেকে উঠিয়ে নেন।অল্পের জন্য রক্ষা পায় তিনটি প্রাণ।আনোয়ারি বলেন,’বিয়ের পর থেকে স্বামী আমাকে দেখতে পারে না।বছরের বেশিরভাগ সময় ভিন রাজ্যে কাজ করে স্বামী। আমি ফোন করলে ফোনে কথাও বলতে চাই না।পরিবারে কোন খরচ দেই না।এই নিয়ে সংসারে অশান্তি ছিল।আমাদের দুই মেয়ে কয়েকদিন থেকে অসুস্থ রয়েছ। চিকিৎসার খরচ চাইতে গেলে আমাকে মরে যেতে হুমকি দেন এবং বলেন আমি অন্য সংসার করবো। আমাকে তালাক দিতে চাইছে। তাই আমি এদিন মরার সিদ্ধান্ত নি।’ হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি মনোজিৎ সরকার বলেন,’খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিস। মা সহ দুই সন্তানকে থানায় নিয়ে আসা হয়। কেন সে এই মরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তা জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct