আপনজন ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উভয়ই একের পর এক জনসভা করে বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার আসনটি অগ্নিগর্ভ প্রচারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে কোচবিহারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি জনসভায় বক্তব্য রাখবেন এবং প্রধানমন্ত্রী বিকেল তিনটে নাগাদ রাসলীলা ময়দানে একটি মহাসমাবেশে ভাষণ দেবেন। একটি সভার স্থান অন্যটি থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সম্প্রতি বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক এবং তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী উদয়ন গুহর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে জর্জরিত কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রটি এখন মর্যাদার লড়াইয়ের ময়দানে পরিণত হয়েছে।লোকসভা প্রার্থী হিসেবে পুনঃমনোনয়ন পাওয়া নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রাজবংশী সম্প্রদায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তথা সিতাইয়ের বর্তমান বিধায়ক জগদীশ বর্মা বসুনিয়া।এ বিষয়ে বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, কোচবিহারের মানুষ দৃঢ়ভাবে বিজেপির পাশে রয়েছেন, ৪ জুনের ভোটের ফলাফলে তার প্রতিফলন ঘটবে। বিজেপি সাংসদ এবং কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার যে উন্নয়নমূলক উদ্যোগ নিয়েছে তা গেরুয়া শিবিরের টানা দ্বিতীয় মেয়াদে জয় নিশ্চিত করবে।
কোচবিহার আসনটি একদা বামফ্রন্টের শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের শক্ত ঘাঁটি, যা ১৯৭৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে ৩২ বছর ধরে এই আসনটি ধরে রেখেছিল। কিন্তু বর্তমানে বিজেপির শক্ত ঘাঁটি হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। ২০২১ সালের রাজ্য নির্বাচনে তৃণমূলের উল্লেখযোগ্য জয় সত্ত্বেও দলটি সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পাঁচটি দখল করেছে।উল্টোদিকে, কোচবিহারের মানুষ বিজেপির ‘গুন্ডারাজ’ থেকে স্বস্তি পেতে মরিয়া বলে তৃণমূলের দাবি। রাজ্য সরকারের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা উদয়ন গুহ বলেন, কোচবিহারের মানুষ বিজেপি ও তার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সতর্ক। এই মনোভাব ভোটে স্পষ্ট হবে এবং আমরা যথেষ্ট ব্যবধানে আসনটি জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী। এর আগে ২০১৬ সালে সাংসদ রেণুকা সিনহার মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে এই আসনে জিতেছিল তৃণমূল। আগামী ১৯ এপ্রিল প্রথম দফায় এই আসনে ভোটগ্রহণ হবে।তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আশা করছেন, জনসভায় ২০২১ সাল থেকে আবাস যোজনা ও মনরেগায় পশ্চিমবঙ্গের জন্য কত টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, তার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে শ্বেতপত্র দেবেন প্রধানমন্ত্রী। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিধানসভা ভোটে পরাজয়ের পর ২০২১ সাল থেকে আবাস যোজনা ও মনরেগায় বাংলাকে যে টাকা দেওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত বা শ্বেতপত্র জমা দেবেন বলে আশা করছি।দিনহাটা, নিশীথপ্রামাণিক এবং গুহ উভয়ের আবাসস্থল, বছরের পর বছর ধরে রাজনৈতিক সহিংসতার একটি হটস্পট হিসাবে রয়ে গেছে। উভয় নেতা যারা একে অপরের সাথে মতবিরোধে রয়েছে, তারা দুজনেই ঘরের মাঠে আধিপত্য বজায় রাখার চেষ্টা করছেন।১৯ মার্চ দিনহাটা বাজারে উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, যা উভয় নেতাকে বাকবিতণ্ডায় টেনে নিয়ে যায় বলে জানা গেছে, যার ফলে পুলিশ হস্তক্ষেপ করে এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বসুকে সহিংসতাস্থল পরিদর্শন করতে প্ররোচিত করে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct