আপনজন ডেস্ক: সমুদ্রসৈকতে বেশ কিছুদিন ধরে ভেসে আসছে মরা জেলিফিশ। সেই সঙ্গে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের জালেও ঝাঁকে ঝাঁকে জেলিফিশ আটকা পড়ছে। অথচ মাছ পাচ্ছেন না জেলেরা। এমন পরিস্থিতিতে মৎস্য বিভাগ বলছে, কচ্ছপ কমে যাওয়া এবং জল অতিরিক্ত লবণাক্ত হওয়ার কারণে প্রতিবছর এমন সময়ে জেলিফিশ ভেসে আসছে। সমুদ্রবিজ্ঞানী ও গবেষকেরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, কম বৃষ্টিপাত, জলে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়া, সামুদ্রিক কচ্ছপের বিচরণ ও সংখ্যা কমে যাওয়া এবং অতিরিক্ত মাছ ধরার কারণে ‘জেলিফিশ ব্লুম’বা উচ্চ প্রজননহারের ঘটনা ঘটছে। বঙ্গোপসাগরে ধরা পড়া জেলিফিশ বিষাক্ত নয় জানিয়ে এগুলো রপ্তানি করার মতো অবকাঠামো গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। মৎসজীবীদের বক্তব্য, 'তিন-চার দফা সাগরে গিয়ে মাছ না পেয়ে শূন্য হাতে ফিরে এসেছি। সাগরে নুইন্যা (জেলিফিশ) ছাড়া মাছই ওঠে না। অবস্থা ভালো হলে সাগরে যাওয়ার অপেক্ষায় আছি।’ ১ থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত এ কেন্দ্রে ১৫৬ টন ইলিশ, ১৩ টন রিটা, ৯ টন চাঁদা ও ১৭৩ টন মিশ্রিত মাছ আহরণ হয়েছে। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে ২৬৭ দশমিক ৮৮ টন ইলিশ, অন্যান্য মাছসহ মাত্র ৪৭১ টন মাছ আহরণ হয়েছে। জানুয়ারি মাসে আহরণ হয়েছিল ৪২৪ দশমিক ৫৩ টন ইলিশসহ ৭১৯ টন মাছ। কুয়াকাটা সৈকতের ঝাউবন এলাকার জেলে আবুল কালাম বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে জেলিফিশের উৎপাত বাড়তে শুরু করেছে। প্রথম দিকে কম থাকলেও এখন পরিমাণটা অনেক বেশি। সাগরে জালে কোনো মাছ ধরা পড়ছে না জেলিফিশের কারণে, পুরো জাল আটকে থাকে জেলিফিশে। আমাদের জাল, রশি নষ্ট করে ফেলে, তাই জাল তুলে নিয়ে আসছি। জেলিফিশ কমলে আবার জাল দিব।’গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, 'বৃষ্টি হলে লবণাক্ততার পরিমাণ কমে যাবে এবং জেলিফিশও কমে আসবে।'
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct