আপনজন ডেস্ক: ধর্ষণ মামলায় দণ্ডিত দানি আলভেজ গত বুধবার বার্সেলোনার আদালতে জামিন পেয়েছেন। যেসব শর্তে জামিন দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে ছিল মুচলেকা হিসেবে ১০ লাখ ইউরো (প্রায় ১২ কোটি টাকা) প্রদান। তবে স্পেনের সময় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেই টাকা দিতে পারেননি আলভেজ। নেইমারের পরিবার বিচার চলার সময় অর্থ দিয়ে সহায়তা করলেও এ যাত্রায় হাত গুটিয়ে নিয়েছে।ব্রাজিলিয়ান তারকার বাবা নেইমার সিনিয়র এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, স্পেনের আদালত থেকে আলভেজকে জামিনে বের করে আনতে প্রয়োজনীয় ১০ লাখ ইউরো দেবে না তাঁর পরিবার।বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে নেইমার সিনিয়র বলেছেন, বিচারকার্য চলার সময় আলভেজকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হয়েছে। কিন্তু এখন আর তাঁরা আলভেজকে সাহায্য করবেন না। কারণ, আলভেজ ধর্ষণের মামলায় দোষী প্রমাণিত হয়ে দণ্ড পেয়েছেন। এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য সোজাসাপটা, ‘আমার জন্য, আমার পরিবারের জন্য বিষয়টি এখানেই শেষ। ফুল স্টপ।’ তবে বিবৃতিতে নেইমারের বাবা উল্লেখ করেননি, আলভেজকে সাহায্য করতে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে কত টাকা দেওয়া হয়েছিল। নেইমারের বাবার যুক্তি, বার্সেলোনার আদালতে তিন বিচারকের প্যানেল আলভেজের রায় দিয়েছেন, তাই এখন ‘পরিস্থিতি ভিন্ন’। পারিবারিক এই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘স্পেনের আদালত রায় দেওয়ার পর এই বিষয়ের সঙ্গে আমার এবং আমার ছেলের নাম জড়ানোর একটা চেষ্টা হয়েছে, যা এখন আর আমাদের আওতার মধ্যে নেই।’ নেইমারের বাবা বিবৃতিতে বলেছেন, তিনি আশা করেন আলভেজ ‘যেসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন, সেগুলো নিজের পরিবারেই পাবেন।’
ব্রাজিল জাতীয় দলের পাশাপাশি পিএসজি ও বার্সেলোনায় নেইমার-আলভেজ একসঙ্গে খেলেছেন। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বার্সেলোনার এক নৈশক্লাবে ধর্ষণের অভিযোগে পরের মাসে আটক হন আলভেজ। এর পর থেকে সেখানেই আছেন তিনি। দীর্ঘ তদন্তপ্রক্রিয়া শেষে গত মাসে তিন দিনের বিচারিক কার্যক্রম শেষে আলভেজকে সাড়ে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি দেড় লাখ ইউরো জরিমানাও করেন আদালত। ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ইউওএল জানিয়েছে, জরিমানার টাকাটা নেইমারের পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে।ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হয়ে আলভেজ যে সাজা পেয়েছেন, সেটি স্পেনের আইন অনুযায়ী তেমন বড় কোনো শাস্তি নয়। এই অপরাধে স্পেনে সাধারণত ৪ থেকে সর্বোচ্চ ১২ বছর কারাদণ্ডের শাস্তি হয়। বার্সেলোনার আদালত আলভেজের মামলার রায় দেওয়ার সময় জানিয়েছিলেন, সাবেক বার্সা তারকার প্রতি একটু সদয় হয়েই এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। কারণ, ‘বিচারকার্য শুরুর আগে তিনি ভুক্তভোগীকে দেওয়ার জন্য আদালতে বিনা শর্তে ১ লাখ ৫০ হাজার ইউরো জমা দিয়েছেন।’বার্সেলোনার আদালত রায় দেওয়ার আগেই একবার জামিনের আবেদন করে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন আলভেজ। আদালত ভেবেছিলেন, আলভেজ ব্রাজিলে পালিয়ে যেতে পারেন। আর ব্রাজিলও বিদেশে অপরাধ সংঘটনের পর তাদের কোনো নাগরিক দেশে ফিরলে বিদেশের বিচারিক কর্তৃপক্ষের কাছে সেই ব্যক্তিকে হস্তান্তর করে না।আলভেজ জামিন পাওয়ার পর শর্ত অনুযায়ী তাঁকে ব্রাজিল ও স্পেনের পাসপোর্ট হস্তান্তর করতে হবে। তিনি স্পেনও ছাড়তে পারবেন না। অবশ্য বার্সেলোনা শহরে থাকার জন্য নিজস্ব বাসস্থান আছে আলভেজের।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct