আনোয়ার আলি, মেমারি, আপনজন:পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি থানার অন্তর্গত কোলে মল্লিকাপুর গ্রামের সন্তোষ কুমার আঢ্যর বন্ধন ব্যাংক সাতগেছিয়া শাখার ব্যাংক আকাউন্ট থেকে ৭ লক্ষ্য ১৪ হাজার ৩১৯ টাকা গায়েব হয়ে যায়। জানা যায়, পেশায় হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী সন্তোষ বাবু ব্যবসা সংক্রান্ত সমস্ত টাকার আদান-প্রদান এই বন্ধন শাখা থেকেই দীর্ঘদিন ধরে করে আসছিল। সন্তোষ কুমার আঢ্যর ব্যবসায়িক প্রয়োজনে বন্ধন ব্যাংকের সাতগেছিয়া ব্রাঞ্চে একাউন্ট ছিল। গত কয়েক মাস আগে মোবাইল থেকে ইউপিআই পেমেন্টে অসুবিধা হওয়ার কারণে বন্ধন ব্যাংকের সাতগেছিয়া শাখায় বিষয়টি জানিয়েছিলেন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার কাছে বিকল্প ফোন নাম্বার চাওয়ায় তিনি তার স্ত্রী ও মেয়ের নাম্বার দেন। কিন্তু সন্তোষ বাবুর ফোন নাম্বারে ফোন পে চালু হয়ে গেলেও ব্যাংক ট্রানজেকশনের কোন মেসেজ আসতো না। সেই মেসেজ চলে যেত তার মেয়ের নাম্বারে এবং ওটিপি আসতো তার স্ত্রীর নাম্বারে।বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানালে খুব শীঘ্রই তার সমাধান করে দেওয়া হবে এই আশ্বাস দেয়া হয়, এমনটাই জানাচ্ছেন সন্তোষ বাবু ।পরবর্তীতে গত ১৩ ই মার্চ তার স্ত্রীর নাম্বারে ব্যাংক ম্যানেজারের পরিচয় দিয়ে ফোন আসে এবং এই সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু মেসেজ ও ওটিপি আসবে বলা হয়। সেই সময় সন্তোষ কুমার আঢ্য ওই নাম্বারে কথা বলে নির্দেশ মতো কাজ করেন। বিষয়টি তার কাছে সন্দেহজনক হওয়ায়, তিনি তার মেয়েকে ফোন করলে জানতে পারেন যে, তার অ্যাকাউন্ট থেকে বেশ কয়েক দফায় প্রায় সাত লক্ষ ওপর টাকা ট্রান্সফার হয়েছে গেছে। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে সন্তোষ বাবুর । তারা বুঝতে পারে তারা প্রতারিত হয়েছে।
তৎক্ষণাৎ তিনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেন এবং তিনি বিষয়টি লিখিত আকারে মেমারি থানায় জানালে, পুলিশ বিষয়টি নিয়ে একটি এফআইআর দায়ের করে তদন্তের আশ্বাস দেয় । প্রতারিত পরিবারের অনুমান, সাতগাছিয়া শাখার ওই বন্ধন ব্যাংকের বেশ কিছু কর্মী এই বিষয়ের সাথে জড়িত আছে । তাদের অভিযোগ, ওই ব্যাংকের কর্মচারীদের সঙ্গে অসাধু চক্রের হাত না থাকলে এমনটা করা সম্ভব নয়। তারা আরো দাবি করেন, এই প্রতারণার জন্য তারা ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন। অভিযোগ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সাহায্য ছাড়া গ্রাহকের টাকা হ্যাকারা কিভাবে অ্যাপ থেকে নিয়ে যায়।এবিষয়ে সন্তোষ কুমার আঢ্যর ছোয় মেয়ে সোহিনী আঢ্য সাতগাছিয়া শাখার ওই বন্ধন ব্যাংকের দিকে আঙুল তুলে জানতে চেয়েছেন কী করে প্রিম্যাচিউরড ফিক্সড ডিপোজিটের টাকা গ্রাহকের সাক্ষর ছাড়াই ব্যাঙ্কিং টাইমে অনলাইনে ট্রান্সফার হয়ে গেল আর ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ টের পেল না। তিনি আরও জানান যে যখন ইউপিআই পেমেন্ট সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যাঙ্কে গিয়েছিলেন তখন ব্যাঙ্ক কর্মী ব্যাঙ্কের এক অচেনা লোককে ফোন নাম্বার শেয়ার করতে বলেন তখন বিষয়টি বুঝতে না পারলেও এখন সন্দেহ হচ্ছে। এছাড়াও তদন্তের নামে বন্ধন ব্যাঙ্ক থেকে ফোন এলে তারা বলে তিনটে ফোনই রিসেট করে দিতে। তাই সন্দেহ করছেন সাতগাছিয়া শাখার ওই বন্ধন ব্যাংকের কিছু কর্মী এই প্রতারনার সঙ্গে যুক্ত আছে। এ বিষয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ব্যাংক ম্যানেজার মুখে কুলুপ আঁটেন ও তদন্তের স্বার্থে পুরো বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং তিনি বলেন, কেন ওই ব্যক্তি ওটিপি শেয়ার করতে গিয়েছিলেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct