আপনজন ডেস্ক: টানা পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় আকাশ ও স্থলপথে হামলা করে চলেছে ইসরায়েল। এ হামলায় বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের সব মানুষ তীব্র ক্ষুধার সম্মুখীন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এমন পরিস্থিতিতে এসব মানুষকে সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে অগ্রাধিকার দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে দেশটি। ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যে বিবিসি এই অঞ্চলের পরিস্থিতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন জানান, গাজার ২০ লাখ মানুষ ‘তীব্র মাত্রার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার’ সম্মুখীন হচ্ছে। এমন অবস্থায় যাদের সহায়তা প্রয়োজন তাদের সহায়তা প্রদানকে অগ্রাধিকার দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ফিলিপাইন সফরের সময় গাজা নিয়ে এই সতর্কতা উচ্চারণ করেন। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিনি মধ্যপ্রাচ্যেও সফর করবেন। আর সেটি হবে গত বছরের অক্টোবর থেকে এই অঞ্চলে তার ষষ্ঠ দফা সফর। এছাড়া এই অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার প্রচেষ্টাও অব্যাহত রেখেছে দেশটি।
এমন অবস্থায় যুদ্ধ থামাতে, মানবিক সহায়তার বিতরণ এবং ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির জন্য হামাসের সাথে একটি চুক্তিতে সম্মত হতে মঙ্গলবার কাতারে ইসরায়েলি প্রতিনিধিদলের আলোচনা আবার শুরু হওয়ার কথা ছিল। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। হামলায় ১২শ’র বেশি মানুষ নিহত হয়। জিম্মি করে নিয়ে যায় আরো ২৪২ জনকে। ওই দিন থেকে পাল্টা আক্রমণে তীব্র আক্রোশে গাজার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার দেশটি। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলি হামলায় পুরো গাজা ভূখণ্ড প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ৩১ হাজার ৮১৯ ফিলিস্তিনি। আর আহত হয়েছেন ৭৩ হাজার ৯৩৪ জন। ঘরবাড়ি হারিয়ে গাজার বাসিন্দারা প্রায় সবাই উদ্বাস্তু হয়ে গেছে। কঠোর অবরোধ ও অবিরাম হামলার মধ্যে থাকা গাজাবাসীরা অনাহারে ভুগতে ভুগতে দুর্ভিক্ষের প্রান্তে চলে গেছে। ইতোমধ্যেই অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় শিশুসহ অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষুধায় বেপরোয়া হয়ে ওঠা লোকজন ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে। জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বলেছে, চলমান যুদ্ধে এখনই বিরতি এবং সাহায্য বিতরণের পরিমাণ না বাড়ানো হলে আগামী মে মাসের মধ্যে গাজার উত্তরাঞ্চল দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হতে পারে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct