আপনজন ডেস্ক: বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে হঠাৎ পড়ে যাওয়ায় মারাত্মকভাবে জখম হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়অ হয়।। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে সেলাই ও স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।একাধিক সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যায় কালীঘাটের বাসভবন চত্বরে হাঁটছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেই সময়েই সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে যাওয়ায় কপালে চোট পান। ৬৯ বছর বয়সি মমতা পড়ে গিয়ে একটি শোকেসে কপালে আঘাত করেছেন। কপালের কাটা জায়গা থেকে রক্ত ঝরতে থাকা তৃণমূলের প্রকাশ করা ছবিতে উদ্বেগ ছড়িয়েছে গোটা দেশের রাজনৈতিক মহলে।পুলিশ সূত্রের খবর, মমতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল-সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের বলেছেন, তিনি হঠাৎ ধাক্কা লেগে পড়ে গিয়েছেন। যদিও এই জল্পনার অবসান ঘটান মমতার ভাই কার্তিকের স্ত্রী কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রকৃত কারণ সম্পর্কে বলেন, কোনওভাবে তিনি পড়ে গিয়েছিলেন।এসএসকেএমের অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ আমাদের হাসপাতালে রিপোর্ট করেন।
তার মস্তিষ্কে আঘাত লেগেছে এবং তার মাথায় ও নাকের উপরে ধারালো আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, সেখান থেকে তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। প্রাথমিকভাবে, তিনি নিউরোসার্জারি এবং মেডিসিন বিভাগের প্রধানদের দ্বারা মূল্যায়ন করা হয়েছিল এবং কার্ডিওলজিস্ট, ও তার ভাইটালগুলি স্থিতিশীল ছিল। তার কপালে তিনটি ও নাকের উপরে একটি সেলাই দেওয়া হয়েছে এবং ড্রেসিং করা হয়েছে। আট সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড জানিয়েছে, তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। তাকে পর্যবেক্ষণের জন্য ভর্তি থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, তবে তিনি বাড়ি যেতে চেয়েছিলেন। তাকে কড়া নজরদারিতে রাখা হবে। আজ ফের তাঁর পরীক্ষা করা হবে এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। রাত ৯টা ৪০ মিনিট নাগাদ বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন মমতা। হাসপাতালের একটি সূত্র রাত ৯.৪৫ মিনিটে একটি সংবাদপত্রকে জানায়, তিনি অসহ্য ব্যথায় রয়েছেন তবে স্থিতিশীল।মমতার পরিবারের একটি জানিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর পড়ে যাওয়ার পর তাঁর পরিচারক চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘দিদি পড়ে গিয়েছেন।সঙ্গে সঙ্গে মমতার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে গাড়িতেই হাসপাতালে নিয়ে যান। গাড়িতে রক্তের দাগ ছিল।অভিষেকের পাশাপাশি এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়েছেন অভিষেকের মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, মালা রায়, সুব্রত বক্সী। গিয়েছেন ছোট ভাই বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়ও।মুখ্যমন্ত্রীকে এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডের কেবিনে ভর্তি করা হয়েছিল ও তারপর হুইলচেয়ারে করে সিটি স্ক্যানের জন্য সংলগ্ন বাঙ্গুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সেসের রেডিও ইমেজিং সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সূত্রের খবর, সিটি স্ক্যানের রিপোর্টে সঙ্কটজনক কিছু পাননি চিকিৎসকরা। ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাম, ডপলার টেস্টের মতো পরীক্ষাও করা হয়েছে।চোটের খবর ছড়িয়ে পড়তেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গেট-ওয়েল মেসেজ আসতে থাকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সহ-সভাপতি জগদীপ ধনখড়, মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, নবীন পট্টনায়ক এবং এম কে স্ট্যালিন, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এবং রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।মমতা চলে যাওয়ার পর রাত ১০টা নাগাদ হাসপাতালে পৌঁছন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বসু।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct