২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রার্থী ঘোষণা শুরু করে দিয়েছে পশ্চিমবাংলায়। সেই সব প্রার্থীদের নিয়ে এখন জনমানসে শুরু হয়েছে আলোচনা। তাই রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে মূলত নজরকাড়া প্রার্থীদের পরিচিতি মানুষের কাছে তুলে ধরা শুরু করেছে ‘আপনজন’। লিখেছেন এম মেহেদী সানি।
প্রার্থী পরিচয় পরিচিতি: ১৯৬৭ সালে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গোপালনগরের ঘোষপাড়া দাসপাড়ার মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা বিজয় কৃষ্ণ দাস ও মাতা সোভারানী দাসের ৫ সন্তানের মধ্যে বিশ্বজিৎ দাস একজন। বিশ্বজিৎ বাবুর স্ত্রী’র নাম শুভ্রা দাস, একমাত্র ছেলে শুভজিৎ দাস বর্তমানে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য।
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অন্যান্য: উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিলেও সফল হতে পারেননি, পাশাপাশি খেলাধুলার ক্ষেত্রেও তার যথেষ্ট কৃতিত্ব রয়েছে বলে জানান বিশ্বজিৎ বাবু।
রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা: ১৯৯৩ সালের গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে জাতীয় কংগ্রেসের টিকিটে গ্রাম সভায় প্রার্থী হয়ে জয়লাভের মধ্যে দিয়ে রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হয় বিশ্বজিৎ দাসের। ১৯৯৮ সালে তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার জন্ম লগ্ন থেকেই তৃণমূলে। সে বার গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হন। নির্বাচনে জয়লাভ করে বিরোধী দলনেতার ভূমিকাও পালন করেন। ২০০৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে ফের জয়লাভ করেন গ্রাম সভায়। ২০০৮ সালের গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে পঞ্চায়েত সমিতির আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হন, জয়লাভ করে বন ও ভূমির কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন। ২০১১ সালে প্রথম তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে বনগাঁ উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন । ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি এই একই কেন্দ্রে দ্বিতীয় বার বিধায়ক নির্বাচিত হন । কিন্তু ২০১৯ সালে হঠাৎই ছন্দপতন হয়, লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হবার পর বিশ্বজিৎ দাস তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে দিল্লি গিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি বিজেপি প্রার্থী হিসাবে বাগদা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন। সে বছরই বিজেপি ছাড়েন বিশ্বজিৎ, ফের তৃণমূলে ফেরেন। ২০২২ সালের আগস্ট মাসে তৃণমূল কংগ্রেস বিশ্বজিৎ দাসকে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব দেন। বর্তমানে সেই পদেই বহাল রয়েছেন। এছাড়াও বিগত বিভিন্ন সময়ে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের আঞ্চলিক সভাপতি, ব্লক সভাপতি, বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন। এবার ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস বিশ্বজিৎ দাসকে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছেন।
️কি ভাবে ভোট প্রচার: ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে পরাজিত করে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। বিশ্বজিৎ দাস সভাপতি হওয়ার পর থেকেই বিজেপির দখলে থাকা বনগাঁ লোকসভাকে পুনরুদ্ধারের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্বজিৎবাবু নিজেই। লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে দেড় বছর আগে থেকেই রাজ্য সরকারের জনকল্যাণমূলক পরিষেবা সমূহকে হাতিয়ার করে বিভিন্নভাবে মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। নতুন কোনো রুটিন না থাকলেও প্রার্থী ঘোষণার পর পূর্বের মতো একই নিয়মেই দৈনিক রুটিনে থাকছে ডোর-টু-ডোর, জনসংযোগ, এলাকাবাসীর সমস্যা জেনে তার সমাধান, শোভাযাত্রা, পথসভা ইত্যাদি।
প্রতিশ্রুতি: ‘বনগাঁ লোকসভা বাসীর উদ্দেশ্যে আমার প্রথম প্রতিশ্রুতি হল - পাশে থাকার অঙ্গীকার।’ বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরকে মানুষ চোখে দেখতে পায়নি, এমপি তহবিলের টাকায় উন্নয়ন না করে তছরুপেরও অভিযোগ করে বিশ্বজিৎ দাস আরও বলেন ভোটে জেতার ছয় মাসের মধ্যে মানুষের দাবি মেনে সমস্ত সমস্যার সমাধান করা হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, হাসপাতাল, পানীয় জল, রাস্তা ঘাট, জল নিকাশি ব্যবস্থা, আলো, এলাকার সৌন্দর্যায়ন, পরিবহন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে সমস্ত সমস্যার সমাধান করা হবে।
জনগণের প্রতি বার্তা: বনগাঁ লোকসভাবাসীর উদ্দেশ্যে তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের অনুরোধ ,‘মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে আপনাদের মূল্যবান ভোটটি উন্নয়নের প্রতীক জোড়া ফুল চিহ্নে প্রদান করবেন এবং তৃণমূল কংগ্রেসের পাশে থাকবেন। সাংসদ হয়ে দলমত নির্বিশেষে আপনাদের সমস্ত চাওয়া এবং সমস্ত দাবি পূরণে চেষ্টা করব, সুখে দুঃখে আপনাদের পাশে থাকব বলেও মন্তব্য করেন বিশ্বজিৎ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct