নিজস্ব প্রতিবেদক, কলকাতা, আপনজন: ডব্লিউবিসিএস ২০২১ (গ্রুপ সি)-এর সদ্য প্রকাশিত ফলাফলে আল-আমীন মিশনের পরীক্ষার্থীরা উজ্জ্বল ফল করেছেন। যে সকল পরীক্ষার্থী ২০২১ সালে ডব্লিওবিসিএস ২০২১(গ্রুপ সি)-এর ইন্টারভিউ দিয়েছিল গত ১১ মার্চ তাদের ফাইন্যাল রেজাল্ট প্রকাশিত হয়েছে। ২ জন জয়েন্ট বিডিও, ১ জন রেভেনিউ অফিসার (গ্রেড-১), ৪ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমার্সিয়াল ট্যাক্স অফিসার মিলে আল-আমীনের মোট ৭ জন সফল।
রাজিবুল শেখ জয়েন্ট বিডিও হয়েছেন খবর পেতেই মুর্শিদাবাদের ডোমকল থানার আমিনাবাদের গ্রামবাসী ও আত্মীয়স্বজন শুভেচ্ছা জানাতে তার বাড়িতে পৌঁছে যান। ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান ও গৃহবধূ সালেহা বিবির মেধাবী সন্তান রাজিবুল পিএসসি ক্লার্কশিপ ২০১৯ পরীক্ষায় সফল হয়ে এলডিসি/এলডিএ যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন। বর্তমান সাফল্যে আব্বা-মা ছাড়াও মিশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান রাজিবুল। তার ইচ্ছে প্রান্তিক মানুষের কাছে সরকারি পরিষেবার পৌঁছানোর পথ সহজলভ্য করা।
কৃষক পরিবারের সন্তান নাজিবুল শেখ অবিরাম পরিশ্রমের ফল হিসেবে জয়েন্ট বিডিও হওয়ার তার স্বপ্ন সফল করেছেন। যদিও তার ইচ্ছে রাজ্য প্রশাসনের উচ্চস্তরে পৌঁছানোর এবং সেকাজে তিনি এখন থেকেই সচেষ্ট। ইয়ারুল শেখ ও রাবেয়া বেগমের সন্তান নাজিবুল এর আগে এসএসসি(এমটিএস) ২০২২-এ সফল হয়েছিলেন। নাজিবুলের বাড়ি পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর থানার কুলে গ্রামে। পিএসসি মিসলেনিয়াস ২০১৮ পরীক্ষায় সফল হয়ে রেভেনিউ ইন্সপেক্টর হচ্ছেন বীরভূমের মোধুরা গ্রামের সামসাদ আলি। তিনি ওয়েস্ট বেঙ্গল সাব-অর্ডিনেট ল্যান্ড রেভেনিউ সার্ভিস (গ্রেড ১) পদে নির্বাচিত হয়েছেন। কৃষক হুমায়ূন কবির ও গৃহবধূ নাজিমা বিবির ঘরে আজ কেবলই খুশির রৌশনাই।
আল-আমীনের কোচিং থেকে একজন ছাত্রী সহ মোট ৪ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমার্সিয়াল ট্যাক্স অফিসার পদে সফল হয়েছেন। মুর্শিদাবাদের লালগোলা ব্লকের বিশ্বনাথপুর গ্রামের এতিম জামিলা হান্নান-এর এই সাফল্যে তার আম্মা নাসিমা বানুর চোখ আনন্দাশ্রুতে ভরা। জামিলার আব্বা আবদুল হান্নান প্রয়াত। প্রাইভেট টিউশনির সামান্য আয়েই কষ্টকরেই সংসার নির্বাহ করেন বিধবা নাসিমা বানু। জামিলা কিন্তু এই সাফল্যেই থেমে থাকতে রাজী নন, তিনি বেশি বেশি পরিশ্রম করে আরও বড়ো সাফল্যের জন্যে প্রস্তুত হচ্ছেন। পিএসসি ২০১৯-এর সাফল্যে জামিলা বর্তমানে আইসিডিএস সুপারভাইজার। অ্যাসিস্ট্যান্ট কমার্সিয়াল ট্যাক্স অফিসার পদে অপর যে তিন জন সাফল্য পেয়েছেন তারা হলেন—পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সোলাগেড়িয়া গ্রামের কৃষক শেখ লুতফর রহমানের সন্তান শেখ মনজুর আহম্মেদ, হাওড়ার আমতার দেওশাহ গ্রামের শেখ আনসার আলি ও মুমতাজ বেগমের পুত্র শেখ মাসুদ জামান এবং হুগলীর খানাকুলের দর্জি শেখ বাগবুল ইসলাম ও মনিরা বেগমের পুত্র শেখ মিজানুর ইসলাম।
সফলদের প্রত্যেকেই আল-আমীন মিশন একাডেমি বারুইপুর থেকে আবাসিক কোচিং নিয়েছিলেন। উল্লেখ্য আল-আমীনের আবাসিক ও অনাবাসিক ডব্লিউবিসিএস কোচিং থেকে গ্রুপ-এ এবং গ্রুপ-বি বিভাগেও এর আগে ধারাবাহিকভাবে সাফল্য পেয়েছেন পরীক্ষার্থীরা। আল-আমীন মিশনের সাধারণ সম্পাদক এম নুরুল ইসলাম সফল পরীক্ষার্থীদের মুবারকবাদ জানিয়ে বলেন, প্রান্তিক পরিবারের গ্রাম বাংলার ছেলেমেয়েদের এই সাফল্যে অন্যান্যরা উৎসাহিত হওয়ার রসদ পাবে। আল-আমীন মিশন স্টাডি সার্কলের ডিরেক্টর দিলদার হোসেনও সফলদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct